ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলার টগরবন্দইউনিয়নের মধুমতি নদীর বাঁওড়ের ওপর নির্মিত ভাসমান সেতু ঘুর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের আঘাতে ভেঙে লন্ডভন্ড হয়ে ৭ গ্রামের ১৫ হাজার মানুষ চরম দুর্ভোগে পড়েছে। নিজেদের অর্থায়নে তৈরী ভাসমান সেতুতে ১০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন সেতু কর্তৃপক্ষ। সোমবার রাতে ঘুর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের আঘাতে ভাসমান সেতুটি তছনছ হয়ে যায়।
দৃষ্টিনন্দন এই সেতু দেখতে রোজ ভিড় করতো ভ্রমণ পিপাসু হাজার মানুষ। সেতুর দুপাশে গড়ে ওঠেছে কয়েক শতাধিক দোকান। এ অঞ্চলের অনেক মানুষের ভাগ্যর পরিবর্তন হয়েছে। প্রাকৃতির দুর্গোগ সিত্রাংয়ের আঘাতে ভাসমান সেতু লন্ডভন্ড হয়ে ৭ গ্রামের ১৫ হাজার মানুষ চরম দুর্ভোগে পড়েছে।এর প্রভাব পড়েছে অনেক পরিবারে।
টিটা গ্রামের সিংগাড়া পুরির দোকানি আপেল মিয়া জানান, আমি মাঠে কোনো কাজ করতে পারিনা, এই দোকানের সিংগাড়া পুরি বিক্রির টাকা দিয়ে চলে আমার সংসার। সেতু ভেঙে যাওয়াতে এখন কোনো লোকজন চলাচল করছে না। সেতু চলাচল না হলে আমার পরিবার নিয়ে পথে বসতে হবে।
টিটা গ্রামের কৃষক দেলোয়ার মিয়া জানান, আমাদের গ্রামের গরু ছাগলের দুধ ও সবজি নিয়ে রোজ পাশ্ববর্তী উপজেলা কাশিয়ানীতে যেতে হয়। সেতু ভেঙে এখন আমরা এসব নিয়ে বাজারে যেতে অনেক কষ্ট হচ্ছে। সেতু হওয়াতে এখন নৌকা পাওয়া যাচ্ছে না।
জানা যায়, উপজেলার ১০ টি গ্রামের প্রায় ১৫ হাজার মানুষ মধুমতি নদে (বাঁওড়) মধ্য দিয়ে নৌকায় পারাপার হতেন। এতে কৃষিপণ্য ও নানা ধরনের মালামাল নিয়ে পার হতে চরম দুর্ভোগের মধ্যে পড়তে হতো। তাই টিটা, টিটা পানাইল, পানাইল, শিকারপুর, ইকড়াইল ও কুমুরতিয়া গ্রামের মানুষ মিলে একটি ভাসমান সেতু নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেন। এ প্রক্রিয়ায় অর্থ সহায়তা দিতে এগিয়ে আসেন এলাকার ৫২ জন ব্যক্তি। এছাড়া অসংখ্য মানুষের সার্বিক সহযোগীতায় ভাসমান সেতুটি নির্মাণের পর ২০২০ সালের ২৮ মার্চ উন্মুক্ত করা হয়।
টগরবন্দ ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ইমাম হাচান শিপন জানান, প্রাকৃতিক দুর্যোগে সোমবার রাতে ভাসমান সেতুটি ভেঙে এ অঞ্চলে একটি কলেজ, দুটি উচ্চ বিদ্যালয়, চারটি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, কমিউনিটি ক্লিনিক ও একটি পোস্ট অফিসে যাতায়াত করা লোকজন পড়েছে চরম দুর্ভোগে। এই সেতু নির্মাণে প্রায় ৬০ লাখ টাকা ব্যয় হয়। আর এ সেতুটি ৮ হাজার ৮৫২ফুট দৈর্ঘ্য ও ১২ ফুট প্রস্থ। এতে ২৫০ লিটার ধারণ ক্ষমতাসম্পন্ন ৮৫২ টি প্লাস্টিকের ড্রাম ও ৬০টি স্টিল পাত দিয়ে এটি নির্মাণ করা হয়েছিল। সেতু মেরামত করতে হলে এখন ১০ লাখ টাকা প্রয়োজন। হঠাৎ করে ১০ লাখ টাকা ব্যয় করে সেতু মেরামত করা আমাদের জন্য অনেক কঠিন হয়ে পড়েছে।
সেতু রক্ষণাবেক্ষণ দায়িত্বে থাকা মো. রেজওয়ান জানান, সোমবার রাতে ঘুর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের আঘাতে দুপাশের সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে এলোমেলো হয়ে গেছে, রেলিং ভেঙে গেছে। সেতু মেরামত করতে প্রায় ১০ লাখ টাকা ব্যয় হবে। এক সপ্তাহ সময় লাগবে। তবে এই টাকার যোগান দিতে না পারলে কবে নাগাত সেতু মেরামত হবে বলতে পারছি না।
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ এ. এস.এম মুরসিদ, মোবাইল : 01728 311111
ঢাকা অফিসঃ হোল্ডিং-১৩, লাইন-৬, রোড- ১২, ব্লক-বি, মিরপুর-১১, ঢাকা-১২১৬
ফরিদপুর অফিসঃ মুজিব সড়ক, ফরিদপুর, ই-মেইলঃ [email protected]
Copyright © August, 2020-2025 @ Daily Somoyer Protyasha