গত বছরের ৫ এপ্রিল সন্ধ্যায় করোনা মোকাবিলায় কঠোর বিধিনিষেধ কার্যকর করতে দুই আনসার সদস্য ও ব্যক্তিগত সহকারি নিয়ে তৎকালীন সালথা উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) মারুফা সুলতানা হিরামণি স্থানীয় ফুকরা বাজারে গেলে অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পেয়ে সালথা থানার এসআই মিজানুর রহমানের নেতৃত্বে পুলিশের একটি ঘটনাস্থলে গেলে হামলার শিকার হয়। পরে স্থানীয় জনতা ও পুলিশের মধ্যে সংঘর্ষ বেধেযায়।
এর জের ধরে রাত সাড়ে ৭টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত সালথা উপজেলা পরিষদ, থানা, সহকারি কমিশনারের (ভূমি) কার্যালয়, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বাসভবন, উপজেলা কৃষি অফিস, সাব-রেজিস্ট্রি অফিস, উপজেলা চেয়ারম্যানের বাসভবন ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। এ সময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার গাড়ি ও সহকারি কমিশনারের (ভূমি) গাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে পুড়িয়ে দেওয়া হয়।
এছাড়া স্থানীয় সাংবাদিক আবু নাসেরের মোটরসাইকেলে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়া হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সালথা থানার পাশাপাশি ফরিদপুর, বোয়ালমারী, ভাঙ্গা ও নগরকান্দা থেকে অতিরিক্ত পুলিশ ও র্যাব পৌছে মুহুর্মূহ ফাঁকা গুলি, রাবার বুলেট, কাঁদানে গ্যাস ও সাউন্ড গ্রেনেড ছুড়ে। রাত ১২টার দিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। এতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর আট সদস্য সহ আহত হন ২০ জন। পুলিশের গুলিতে আহতদের মধ্যে জুবায়ের হোসেন (২৫) ও মিরান মোল্যা (৩৫) নামের দুই যুবক চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, সহিংসতার এ ঘটনায় সালথার বিভিন্ন সরকারি ভবন ও স্থাপনায় হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় প্রায় তিন কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়। ওই সহিংসতার ঘটনায় কয়েক হাজার জনকে আসামীকরে ৮টি পৃথক মামলা দায়ের করা হয়। এরমধ্যে ৭টি মামলা সালথা থানা পুলিশ ও একটি মামলা ডিবি পুলিশ তদন্ত করছে। মামলায় এজাহার নামীয় ৩৮১ জন এবং সন্দেহভাজন ১৪৬ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ১৬৪ ধারায় জবানবন্দী দিয়েছেন ২২ জন। একজন আসামী আটকাবস্থায় মারা যায়।
সালথার ঘটনায় পুলিশ বাদী মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই মো. হান্নান মিয়া বলেন, সালথার সহিংসতার ঘটনায় পুলিশ বাদী মামলাটি তদন্তাধীন রয়েছে। পর্যপ্ত সাক্ষ্য প্রমাণ সংগ্রহের কার্যক্রম অব্যহত রয়েছে। খুব অল্প সময়ের মধ্যে সালথার সহিংসতার ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে বিজ্ঞ আদালতে পুলিশ প্রতিবেদন প্রেরণ করা হবে।