নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
চুরিতে জড়িত সন্দেহে ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে এক যুবককে ঘরের আড়ার সঙ্গে ঝুলিয়ে পিটিয়েছে এলাকাবাসী। মঙ্গলবার রাতে উপজেলার সাতৈয় ইউনিয়নের ডোবরার আকিজ জুটমিল এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে তাঁকে নির্যাতনের ভিডিওচিত্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে বিষয়টি জানাজানি হয়।
ভুক্তভোগী আহাদ সিকদার (৩০) ডোবরা গ্রামের বাসিন্দা। বৃহস্পতিবার বিকেলে সরেজমিন গেলে এলাকাবাসী অভিযোগ করেন, আহাদ সিকদার এলাকার চিহ্নিত চোর ও মাদকসেবী। গত শনিবার আকিজ জুটমিল গেটের মাহাবুবের মুদি দোকানে চুরি হয়। আরেক ব্যক্তির পাট চুরি যায়। একই সঙ্গে চুরি হয় জুটমিলের তার।
এসব চুরিতে জড়িত থাকার অভিযোগে ডোবরা গ্রামের বাসিন্দা যুবদল নেতা কালাম শেখ ও রবিউল ইসলাম শেখ সঙ্গে আরও কয়েকজন মিলে মঙ্গলবার রাতে আহাদকে ধরে আনে। তারা একটি দোকানঘরের আড়ায় পা বেঁধে ঝুলিয়ে অমানবিকভাবে পেটাতে থাকে। পরে চুরির ঘটনায় জড়িত থাকার বিষয়ে স্বীকারোক্তি দেওয়ার পর আহাদকে বোয়ালমারী খানায় সোপর্দ করেন রবিউল শেখ। পরে আহাদের অভিভাবকদের অনুরোধে ভালো হয়ে যাওয়ার শর্তে মুচলেকা রেখে পুলিশ তাঁকে ছেড়ে দেয়। আহাদ পরবর্তী সময়ে বোয়ালমারী উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নেন।
⇒আরও পড়ুনঃ বিএনপি’র কর্মীসভায় মনোনয়ন প্রত্যাশী দুই নেতার সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ
চুরিতে জড়িত থাকার বিষয় অস্বীকার করেন আহাদ সিকদার। তাঁর ভাষ্য, ইজিবাইক চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন তিনি। কালাম ও রবিউলের লোকজন ধরে নিয়ে আড়ার সঙ্গে দুই পা বেঁধে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে পিটিয়ে চুরির স্বীকারোক্তি আদায় করেছে। লোহার রড, কাঠ, হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়েছে।
আহাদের অভিযোগ, 'কালামদের সঙ্গে দল না করায় তারা আমাকে ধরে নিয়ে আড়ার সাথে বেধে পিটায়। পরে থানায় নিয়ে যায়। আমার অভিভাবক ও এলাকার বড় ভাই সুমন খন্দকারের চেষ্টায় থানা থেকে ছাড়া পেয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছি। আমার দুটি মোবাইল ফোন ও মানিব্যাগ ওরা নিয়ে গেছে। '
উপজেলা যুবদলের সদস্য কালাম শেখের ভাষ্য, আহাদ চিহ্নিত চোর ও মাদকসেবী। চিতারবাজারে একবার মোবাইল ফোনের দোকানে চুরি করে ধরা পড়েছিল। তখন চিতারবাজার বণিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক শাকিল মোল্যা বেদম পিটুনি দেয় তাঁকে। তারপরও সে চুরি ছাড়েনি। এক সপ্তাহে এলাকার তিন যায়গায় চুরি করেছে। তারপর এলাকার লোকজন ধরে পিটুনি দিয়েছে। তারা উদ্ধার করে পুলিশে সোপর্দ করেন।
অপর যুবদল নেতা রবিউল ইসলামের ভাষ্য, 'মিলে চুরির ঘটনায় তিনটি মামলার আসামি আহাদ। চুরির কারণেই তাঁকে এলাকাবাসী ধরে মারধর করে। খবর পেয়ে আমি তাঁকে উদ্ধার করে মোটরসাইকেলে করে থানায় দিয়ে আসি। আমি উদ্ধার না করলে যে কোনো দুর্ঘটনা ঘটতে পারত। পরে আহাদের অভিভাবকদের অনুরোধে ভালো হওয়ার শর্তে থানা থেকে সে ছাড়া পান।'
এ বিষয়ে বোয়ালমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহমুদুল হাসান সাংবাদিকদের বলেন, এলাকাবাসী কোনো মামলা না করায় আহাদকে বুধবার ৩৪ ধারায় আদালতে পাঠানো হয়েছিল। সেখান থেকে জামিনে ছাড়া পেয়েছে। তাঁকে মারধরের বিষয়টি কেউ বলেনি। তাঁর বিরুদ্ধে মামলা আছে কিনা খোঁজ নেবেন।
⇒ভিডিওতে দেখুনঃ
[video width="476" height="850" mp4="https://somoyerprotyasha.com/wp-content/uploads/2025/08/Boalmari-14.08.2025.mp4"][/video]
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ এ. এস.এম
মুরসিদ (লিটু সিকদার)। মোবাইল: 01728 311111
ঢাকা অফিসঃ হোল্ডিং-১৩, লাইন-৬, রোড- ১২, ব্লক-বি, মিরপুর-১১, ঢাকা-১২১৬।
ফরিদপুর অফিসঃ মুজিব সড়ক, ফরিদপুর। মোবাইলঃ ০১৭১১ ৯৩৯৪৪৫