নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
ফরিদপুরে একাধিক চিরকুট লিখে নুরুজ্জামান বুলবুল (৪৮) নামে এক ঠিকাদার ব্যবসায়ী আত্মহত্যা করেছেন। সোমবার সন্ধ্যায় জেলা সদরের কৈজুরি গ্রামে নিজের বাসভবনের ২য় তলার একটি কক্ষ থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এসময় তার ওই কক্ষ থেকে মৃত্যুর আগে লিখে যাওয়া একাধিক চিরকুট উদ্ধার করা হয়। এছাড়া নিজ কক্ষের দেয়ালে একাধিক নোট লিখে যান।
.
নিহত নুরুজ্জামান বুলবুল কৈজুরীর বাসিন্দা মরহুম মোজাফফর হোসেন রাঙা মিয়ার ছেলে। তার বাবা ফরিদপুরের মুন্সিবাজারের প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী ছিলেন। তিনি চার বছর আগে মারা যান। এরপর গত বছর বুলবুলের মা’ও মারা যান। স্ত্রী ও ৩ মেয়ে রয়েছে তার। তাদের নিয়ে কৈজুরিতে পৈত্রিক বাসভবনে বসবাস করতেন।
.
জানা যায়, নুরুজ্জামান বুলবুল গত রোববার দুপুরের দিকে তাদের তিনতলা বাসভবনের দোতলার ওই কক্ষটিতে প্রবেশ করেন। এরপর আর তার কোন সাড়াশব্দ পাওয়া যায়নি। এরপর সোমবার বিকেলে পরিবারের লোকজন ঘরের দরজা ভেঙ্গে তার ঝুলন্ত মরদেহ দেখতে পেয়ে পুলিশে খবর দেয়।
.
এ সময় চিরকুট ও দেয়ালে লিখন পাওয়া যায় বলে পুলিশ নিশ্চিত করেছেন। তারমধ্যে দেয়ালের নোটে লেখা রয়েছে- ‘বিল্লাল ভাই আককচ আমারে বাঁচতে দিলেন না।
.
স্থানীয়দের ধারণা বিল্লালকে উদ্দেশ্য করে আককচের কথা বলে গেছেন। তবে এই লেখা নিয়ে রহস্য সৃষ্টি হয়েছে। লেখাটি বিকৃতি করে কেউ কেউ বিল্লাল হোসেন কে দায়ি করে সংবাদ প্রচারের চেষ্টা করছে বলে আলোচনা উঠেছে।
.
খোজ নিয়ে জানা যায়, আককচ হোসেন তাঁর মেঝো মেয়ের শ্বশুর এবং জেলা শ্রমিকলীগের সাবেক সভাপতি ও জামাতা জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ফাহিম হোসেনের বাবা।
.
এছাড়া চিরকুটে লেখা রয়েছে- বিল্লাল ভাই আককচ আমারে বাচতে দিলেন না’ ‘আল্লাহপাক যদি আমার মৃত্যু দেয় তাহলে আমার মেয়েরা যেন আমার মরা মুখ না দেখে আর আমার কবর যেন আমার মায়ের পাশে হয়, এ বাড়িতে নয়। জীবন দিয়া সাশিদ শাধ কেউ দায় না।
.
জানা যায়, বিল্লাল হোসেনের সাথে ২০১৮ সালের পর নুরুজ্জামান বুল বুলের ব্যবসা-বাণিজ্য বা কোন লেনদেন সম্পর্ক ছিল না। তবে বিল্লাল হোসেনের সাথে বুলবুলের ছোট ভাই বড় হিসাবে সম্মানের সম্পর্ক ছিলো। বিল্লাল হোসেন ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের কোন পদে না থাকলেও ১৮ সালের পূর্বে ফরিদপুর জেলা শ্রমিক লীগের সাবেক অর্থ সম্পাদক ছিলেন। ২০১৮ সালের পর থেকে বিল্লাল হোসেন নিজেকে রাজনীতি থেকে সম্পূর্ণ আড়াল করে নেন এবং ফরিদপুরে তাকে তেমন দেখা যায় না।
.
পরিবার সুত্রে জানা গেছে, নিহত নুরুজ্জামান বুলবুলের স্ত্রী ও ৩ মেয়ে রয়েছে। তার মেঝো মেয়ের সাথে প্রথম স্বামীর ছাড়াছাড়ি হয়ে যাওয়ার পরে জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ফাহিম আহমেদের সঙ্গে বিয়ে হয়। পারিবারিক নানা বিষয় নিয়ে বুলবুলের সাথে তার পরিবারের সদস্যদের ঝামেলা চলছিলো। এর আগে তিনি ঝগড়া এড়াতে মেয়েদের নামে কিছু সম্পত্তি লিখে দিয়ে যান।
.
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) মো: আসাদুজ্জামান বলেন, খবর পেয়ে মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। পরে ময়নাতদন্তের জন্য ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়। তাঁর আত্মহত্যার অনেকগুলো কারণ পেয়েছি। এগুলো তদন্ত করে দেখা হবে। এছাড়া ময়নাতদন্তের পর জানা যাবে তার মৃত্যুর কারণ।
সম্পাদক ও প্রকাশক: এ. এস.এম
মুরসিদ, মোবাইল: 01728 311111
ঢাকা অফিসঃ হোল্ডিং-১৩, লাইন-৬, রোড- ১২, ব্লক-বি, মিরপুর-১১, ঢাকা-১২১৬।