পাবনার চাটমোহরের পাট চাষীরা পাট কাটা, জাগ দেওয়া, আশ ছড়িয়ে পাট ধোওয়া এবং শুকানোর কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন। উপজেলার বিলচলন, ছাইকোলা, হান্ডিয়ালে,ডিবিগ্রাম,গুনাইগাছা, মথুরাপুরের নিচু জমি গুলোতে পানি চলে আসায় এ এলাকার কৃষকেরা তোষা ও মেস্তা জাতের পাট কেটে ফেলছেন। বর্তমান সময়ে পাটের ভাল দাম থাকায় এ এলাকার পাট চাষীদের চোখে মুখে এখন হাসির ঝিলিক।
লোকসানের পরে পাটচাষীরা যখন পাট চাষে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছিলেন ক্রমাগত দুই বছর পাটের ভাল দাম পাওয়ায় এ এলাকার কৃষকেরা আবার পাট চাষে অগ্রহী হচ্ছেন। সোনালী আশ খ্যাত পাট চাষ করে তারা এখন ভাল মুনাফা পাচ্ছেন। তাই পাট চাষের পরিধি ও বাড়ছে।সনাতন পদ্ধতিতে পাট চাষ বাদ দিয়ে আধুনিক ও উন্নত প্রযুক্তি নির্ভর পাট চাষ, পাট বীজ উৎপাদন, সম্প্রসারণের লক্ষ্যে কর্মশালার আয়োজন করায় চাটমোহরের পাট চাষীরা এর সুফল পাচ্ছেন।
চাটমোহর কৃষি অফিস সূত্র জানা গেছে , চলতি মৌসুমে চাটমোহরের ১১ টি ইউনিয়ন ও একটি পৌর এলাকায় ৮ হাজার ৭২০ হেক্টর জমিতে পাট চাষ হয়েছে। এর মধ্যে দেশী ১৩৫ হেক্টর, তোষা ৮ হাজার ৪৪৫ হেক্টর এবং মেস্তা ১৪০ হেক্টর। গত বছর চাটমোহরে ৮ হাজার ১০০ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন জাতের পাট চাষ হয়েছিল। গত বছরের চেয়ে এ বছর ৬শ ২০ হেক্টর জমিতে পাট চাষ বেশি হয়েছে।
উপজেলার ছাইকোলা ইউনিয়নের বোয়াইলমারী গ্রামের পাট চাষী আব্দুল মলেক সরকার জানান, এ বছর ৯ বিঘা জমিতে পাট চাষ করেছেন তিনি। চাষ, বীজ, সার, দুই দফা আগাছা পরিষ্কার, কাটা, পঁচানো, আশ ছড়ানোসহ এক বিঘা জমিতে পাট চাষে প্রায় ১১ থেকে ১২ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। ইতিমধ্যে কিছু জমির পাট কেটে, পঁচিয়ে, আশ ছড়িয়ে, শুকানোর কাজ করছেন তিনি। আশা করছেন গড়ে ৮ মন হারে ফলন পাবেন তিনি। এছাড়া বিঘা প্রতি প্রায় ২ হাজার টাকার পাটকাঠি পাওয়া যাবে। ৩ হাজার টাকা মন দরে পাট বিক্রি করতে পারলেও বিঘা প্রতি তার লাভ থাকবে প্রায় ১৪ থেকে ১৫ হাজার টাকা।
ডিবিগ্রাম ইউনিয়নের দাথিয়াকয়ড়াপাড়া গ্রামের পাটচাষী মোশাররফ আলী জানান,আমরা আগে পাটের দাম কম পেতাম বলে আমাদের পাটচাষের আগ্রহ কমে গিয়েছিলো পর পর দুবছর পাটের ভালো দাম পাওয়ায় পাটচাষের আগ্রহ বাড়ছে।এ বছর ভালো দাম পাবো আশা করছি।
হান্ডিয়াল ইউনিয়নের ডেফলচড়া গ্রামের পাট ব্যবসায়ী আজিবর রহমান জানান, এক সপ্তাহ পূর্বেও সাড়ে ৩ হাজার টাকা মন দরে পাট বিক্রি
হয়েছে। বর্তমান তোষা এবং মেস্তা পাট ৩ হাজার টাকা মন দরে বিক্রি হচ্ছে।
চাটমোহর উপজেলা কৃষি অফিসার এ এ মাসুম বিল্লাহ জানান, পাট চাষীদের সুদিন ফিরেছে। পাট চাষ করে কৃষক এখন অনেক লাভভান হচ্ছেন। ইতিমধ্যে চাটমোহরের পাট কাটা ধোয়ার কাজ শুরু হয়ে গেছে। আবহাওয়া পাট চাষের অনুকূলে থাকায় আশা করা হচ্ছে কৃষক পাটের ভাল ফলন পাবেন।