ইসমাইল হােসেন বাবুঃ
কুষ্টিয়ায় ৮ বছরের এক শিশুকে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় আজ শনিবার দুপুরে অভিযুক্ত ব্যাক্তির দোকান ভাঙচুর করে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছে বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা।
অভিযুক্ত ব্যক্তির নাম সাগজত (৫০)। তিনি সদর উপজেলার হরিনারায়ণপুর ইউনিয়নের শিবপুর এলাকায় মুদিদোকান চালান। এখন তিনি পলাতক রয়েছেন।
ভুক্তভোগী শিশুটির মা জানান, গত মঙ্গলবার দুপুরে তাঁর মেয়ে সাগজতের দোকানে যায়। তখন তিনি বিস্কুটের লোভ দেখিয়ে শিশুটিকে দোকানের মধ্যে নিয়ে যৌন নিপীড়ন করেন। মেয়েটি বাড়ি ফিরে বিষয়টি জানালে মা-দাদিসহ প্রতিবেশী কয়েকজন নারী সাগজতের দোকানে গিয়ে কৈফিয়ত চান। তখন অভিযুক্ত ব্যক্তি ভুল স্বীকার করে ক্ষমা চান। পরে ভুক্তভোগীর মা স্থানীয় পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জকে বিষয়টি জানালে তিনি তাদের থানা ও হাসপাতালে যেতে বলেন। কিন্তু খরচের কথা ভেবে তারা আর সেখানে যাননি।
শিশুটির বাবা বলেন, ঘটনার দিন আমি ঢাকায় ছিলাম। বাড়ি আসলে আমার স্ত্রী ঘটনাটি জানায়। রাত অনেক হওয়ায় পরদিন সকালে আমি সাগজতের দোকানে গিয়ে ঘটনার সত্যতা সম্পর্কে জানতে চাই। তিনি ভুল স্বীকার করে মাফ চাওয়ার পর রাগান্বিত হয়ে তাঁকে তিনটা ঘুষি মারি। তখন আশপাশের লোকজন এসে ঠেকিয়ে দেয়। পরে একজন এসে মোটরসাইকেলে করে তাঁকে নিয়ে যায়। যাওয়ার সময় বলে যায়, সন্ধ্যায় সঙ্গে করে নিয়ে এসে বিচার করবে। কিন্তু কোনো বিচার করে নাই। আমি গরিব বলে সবাই পাশ কেটে যাচ্ছে।
এলাকাবাসী জানান, সাগজতের বিরুদ্ধে এর আগেও এ ধরনের অভিযোগ উঠেছিল। তখন ভুক্তভোগী মেয়েটি ১৪ বছরের হওয়ায় তাঁর দরিদ্র পরিবার লোকলজ্জার ভয়ে বিষয়টি ধামাচাপা দিতে বাধ্য হয়। এবারের ঘটনাও একটি পক্ষ ধামাচাপা দেওয়ার জন্য দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছে। শোনা যাচ্ছে, তারা দেড় লাখ টাকার বিনিময়ে বিষয়টি সমঝোতা করার চেষ্টা করছে। এর মধ্যে ৫০ হাজার ভুক্তভোগীর পরিবার ও বাকি টাকা সমঝোতাকারীরা পাবেন।
বিষয়টি জানাজানি হলে এর প্রতিবাদে আজ ১৫ মার্চ দুপুর ১২টার দিকে বিক্ষোভ করেন স্থানীয় ছাত্র-জনতা। পরে তারা সাগজতের দোকান ভাঙচুর করে আগুন ধরিয়ে দেন।
কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মেহেদী হাসান বলেন, স্থানীয় কিছু শিক্ষার্থী সাগজত নামের ওই ব্যাক্তির টং দোকানে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিবেশ শান্ত করেছে। ভুক্তভোগী পরিবারটি এখনো থানায় কোনো অভিযোগ দেয়নি। পরিবারটির সঙ্গে কথা হয়েছে। এ ব্যাপারে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সম্পাদক ও প্রকাশক: এ. এস.এম মুরসিদ (লিটু সিকদার) মোবাইল: 01728 311111