ইস্রাফিল হােসেন ইমনঃ
কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা সাব-রেজিস্ট্রার বোরহান উদ্দিন সরকারকে ঘুষ লেনদেনের অভিযোগে ৫ ঘণ্টা অফিসের নিজ কার্যালয়ে অবরুদ্ধ করে রাখে ছিলেন ছাত্র-জনতা ও ভুক্তভোগীরা।
গত বৃহস্পতিবার ইফতারের পর সন্ধ্যা ৬টা থেকে রাত পৌনে ১১টা পর্যন্ত ছাত্র-জনতা ও ভুক্তভোগীরা তাকে আটকে রাখেন। বৃহস্পতিবার রাত ১১টায় ভেড়ামারা উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) আনোয়ার হোসাইন ও থানার ওসি শেখ শহীদুল ইসলাম সঙ্গীয় পুলিশ ফোর্সের তত্ত্বাবধানে সাব-রেজিস্ট্রার বোরহান উদ্দিনকে কার্যালয় থেকে বের করা হয়। এই নিয়ে এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে।
ভেড়ামারা সাব-রেজিস্ট্রার অফিস সূত্রে জানা গেছে, ভেড়ামারা সাব-রেজিস্ট্রার বোরহান উদ্দিন সরকার অতিরিক্ত দায়িত্বের অংশ হিসেবে ভেড়ামারাতে বৃহস্পতিবার তার প্রথম কার্যদিবস ছিল। বোরহান উদ্দিন পার্শ্ববর্তী দৌলতপুর উপজেলায় সাব-রেজিস্ট্রার হিসেবে কর্মরত আছেন। ঘুষ নেওয়ার অভিযোগে সাব-রেজিস্ট্রারকে উপজেলার বিভিন্ন স্থান থেকে আগত ছাত্র-জনতা ও ভুক্তভোগীরা অবরুদ্ধ করে।
এ সময় তারা সাব-রেজিস্ট্রারের ব্যক্তিগত সহকারীকে খুঁজতে থাকে। বোরহান উদ্দিন ব্যক্তিগত সহকারীর মাধ্যমে দলিলে ভুল ত্রুটি মার্জনার কথা বলে রেজিস্ট্রি করার নামে কয়েক লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। ব্যক্তিগত সহকারীকে টাকাসহ পালিয়ে যেতে সাহায্য করেছেন। সাব-রেজিস্ট্রারের কাজ সাধারণত বিকাল ৩টা পর্যন্ত। কিন্তু তিনি ত্রুটিপূর্ণ কিছু দলিল রেখে দিয়েছেন ইফতারির পরে করার জন্য। যে দলিলগুলো রেজিস্ট্রি করেছেন সেখানেও নামের ভুল বাবদ তার সহকারীকে দিয়ে ১০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকা পর্যন্ত নিয়েছেন। সাধারণ জনতার চাপে অতিরিক্ত দলিলগুলো রেজিস্ট্রি সম্পন্ন করেন। বোরহান উদ্দিন ত্রুটিপূর্ণ দলিলগুলোও টাকার বিনিময়ে রেজিস্ট্রি করে দেন বলে অভিযোগ আছে। দৌলতপুরেও এ বিষয়ে ছাত্র-জনতার মাঝে ইতিমধ্যে ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে।
ভেড়ামারা উপজেলার পরানখালি এলাকার রাকিব হোসেনের বরাত দিয়ে ভেড়ামারার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহবায়ক সাজ্জাদ হোসেন বলেন, এক আত্মীয়ের দলিলে নাম ভুলের কারণে সাব রেজিস্ট্রারের সহকারী তাদের কাছ থেকে ১৫ হাজার টাকা নিয়েছেন। যার কল রেকর্ড মোবাইলে রয়েছে। আমরা আসার পর থেকেই সে তার সহকারীকে টাকাসহ লাপাত্তা করে দিয়েছে।
ভেড়ামারা সাব-রেজিস্ট্রার বোরহানউদ্দিন বলেন, আমি কোনো ঘুষ বাণিজ্যের সঙ্গে জড়িত নয়। জনগণের উপকার করতে গিয়ে আমি ফেঁসে গেছি। সে আমার সহকারী নয় বরং আত্মীয়। তার মোবাইল নম্বর আমার কাছে নেই। নাম জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন, টেনশনে আমার কিছু মনে পড়ছে না।
ভেড়ামারা উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) আনোয়ার হোসাইন বলেন, অভিযোগ পেয়েছি। এ বিষয়টি তদন্ত করার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে। বৃহস্পতিবার রাত ১১টায় থানার ওসি শেখ শহীদুল ইসলাম সঙ্গীয় পুলিশ ফোর্সের তত্ত্বাবধানে সাব-রেজিস্ট্রার বোরহান উদ্দিনকে কার্যালয় থেকে বের করা হয়।এই বিষয় টি তদন্তধীন রয়েছে।
সম্পাদক ও প্রকাশক: এ. এস.এম মুরসিদ (লিটু সিকদার) মোবাইল: 01728 311111