কমরেড খোন্দকারঃ
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে বেলজিয়ামস্থ বাংলাদেশ দুতাবাস কর্তৃক আয়োজিত অনুষ্ঠানে বরাবরের মতো বেলজিয়াম আওয়ামী নেতা সহিদুল হক ও বজলুর রশীদ ভুলুর নেতৃত্ব আওয়ামী লীগ, যুবলীগের কিছু নেতা কর্মী ও কমিউনিটির লোকজন অংশগ্রহন করেন।
এখানে একটা বিষয় বিশেষভাবে উল্লেখ্য যে, বেলজিয়ামে কোনদিন রাজনীতি নিয়ে কোন দলের সাথে (বাংলাদেশের মত) কোন রকম কোন দন্দ সংঘাত হয়নি। বেলজিয়াম দূতাবাস সবসময় সকল জাতীয় অনুষ্ঠানে সামাজ তথা কমিউনিটির সকল স্তরের লোকজনকে অনুষ্ঠানের ব্যাপ্তি অনুযায়ী দলমত নির্বিশেষে কখনো, উম্মেুক্ত কখনো, বিশেষ বিশেষ ব্যক্তিবর্গকে দাওয়াত দিয়ে থাকেন।
বিশেষ করে গত সাড়ে ১৫ বৎসর যাবৎ আওয়ামী লীগের শাসনামলে এই দূতাবাস সবসময় বি এন পি নেতাদেরকেও বিভিন্ন জাতীয় অনুষ্ঠানে দাওয়াত দিতো এবং এতে বেলজিয়াম আওয়ামী লীগের পূর্ণ সমর্থন থাকতো। এজন্যই সকল অনুষ্ঠানে না হলেও অনেক অনুষ্ঠানে বিএনপি সহ বিরোধী রাজনৈতিক দলের প্রচুর নেতা কর্মীদের এসব অনুষ্ঠানে দেখা যেতো।
গত আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের নামে অনুষ্ঠান হলেও মুলত অনুষ্ঠানটি ছিল তথা কথিত ২০২৪ সালের জুলাই / আগষ্ট নিয়ে মিথ্যাচারকে প্রাতিষ্ঠানিক রুপ দেয়ার অপচেষ্টা মাত্র। প্রথমেই তারা ২০২৪ সালে (তাদের ভাষ্যমতে) নিহতদের জন্য ১ মিনিটের নিরবতা দিয়ে অনুষ্ঠান শুরু করে।
মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে নিহত ৩০ লক্ষ শহীদ ও ৫২ ভাষা আন্দোলনে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা না জানিয়ে, তাদের নাম পর্যন্ত উল্লেখ না করে ২৪ শের শহীদ, যাদের ৫৩ জন এর ভিতর ফিরে এসেছে, তাদের উপর মনগড়া, বানানে মিথ্যা গল্পের ভিডিও প্রদর্শণ ও তাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে অনুষ্ঠান সাজানো হয়। পরবর্তী আবু সাইদের ভিডিও ও আহতদের নিয়ে প্রমান্য চিত্র দেখানো শুরু করলে বেলজিয়ামস্থ বাংলাদেশী কমিটির সদস্য, আওয়ামী লীগ ও যুবলীগ এর প্রতিবাদ শুরু করে। এই সময় অনুষ্ঠানে থাকা জামাত, হিজবুত্তাহারির, জঙ্গি ও বেলজিয়াম বিএনপির কিছু উশ্রীঙ্খল লোকজনের সাথে কথা-কাটাকাটি শুরু হলে অনুষ্ঠানটি বন্ধ হয়ে যায়। বেলজিয়াম আওয়ামী লীগের পক্ষে সহিদুল হক সহিদ, বজলুর রশিদ বুলু, আতিকুজ্জামান, রাজ্জাক চৌধুরী, যুবলীগ সাধারণ সম্পাদক খালেদ মিনহাজ, মোরশেদ মাহমুদ সহ সবাই বেলজিয়াম দূতাবাসের এসব হাস্যকর মিথ্যা প্রামান্য চিত্র, আর ভাষা আন্দোলনে শহীদ সালাম, রফিক জব্বার সহ অন্যান্যদের প্রতি অশ্রদ্ধা প্রদর্শনের প্রতিবাদে বেলজিয়াম আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের সবাইকে নিয়ে দূতাবাসের অনুষ্ঠান ত্যাগ করেন। পরবর্তীতে দলের এক যৌথ সভায় এখন থেকে আগামীতে যতদিন বঙ্গবন্ধু ও স্বাধীনতার চেতনার পরিপন্থী এধরনের কর্যক্রম চালাবে ততোদিন এসব মিথ্যাচারের প্রতিবাদ অব্যাহত রাখার পাশাপাশি, প্রয়োজনে স্থায়ীভাবে দুতাবাসের সকল অনুষ্ঠান বর্জনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। সেখানে কাউকে বের করে দেওয়ার মত কোন ঘটনা ঘটেনি। লন্ডন প্রবাসী একজন ইউটিউবার বেলজিয়াম দূতাবাসের ঘটনা, মোরশেদ মাহমুদ তার বড় ভাই ড. হাছান মাহমুদকে নিয়ে যে গল্প সাজিয়েছে তা নির্লজ্জ মিথ্যা ছাড়া অন্য কিছু নয়।
মোর্শেদ মাহমুদ অত্যন্ত নিষ্ঠা, সততা ও সুনামের সাথে বেলজিয়াম দূতাবাসে চাকুরী করেছেন। তিনি ব্রাসেলসে ছোট্র একটি দুই রুমের বাসায় চার বাচ্চাসহ পরিবার নিয়ে থাকেন । যারা তার বাসায় গেছেন তারা সবাই এটি জানেন। তিনি বেলজিয়াম সরকারের কাছে সোশাল হাওজের (নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য ঘর) জন্য দরখাস্ত করেছেন। যাদের বেলজিয়াম কিংবা পশ্চিম ইউরোপ সম্পর্কে নুন্যতম ধারনা আছে তারা জানেন যে, এখানে কারো নামে ঘর বাড়ি থাকলে তারা সোস্যালের ঘরের জন্য দরখাস্ত করতে পারে না। ড. হাছান মাহমুদের পক্ষ থেকেও তার আইনজীবীর মাধ্যমে এই সমস্ত ভুয়া মনগড়া সংবাদের প্রতিবাদ জানিয়ে বলা হয়েছে বিদেশের মাটিতে তাঁর কোন সম্পদ নাই।
লন্ডন প্রবাসী ঐ ইউটিউবার জার্মানীতে ড. হাছান মাহমুদের উপর হামলার আরেক কল্প কাহিনিও সাজিয়েছে। প্রকৃতপক্ষে জার্মানীতে এ ধরনের কোন ঘটনাই ঘটেনি। বরং সেখানে অত্যন্ত সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে সভাটি শেষ হয়। একটি ভুঁইফোড় অনলাইন এব্যপারে একটি কাল্পনিক ঘটনার সংবাদ ছাপানোর পর জার্মান আওয়ামী লীগ লিখিতভাবে এর তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছিল। এর্যপারে জার্মান ও বেলজিয়াম আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দকে জিজ্ঞেস করা হলে তারা বলেন “প্রকৃতপক্ষে কিছু পত্র-পত্রিকা এবং স্বধিনতা বিরোধীদের কিছু মাশোয়ারাভোগী কিছু সাংবাদিক নামধারী ও সোশ্যাল মিডিয়া একটিভিস্ট আওয়ামী লীগ নেতাদের চরিত্র হরণ ও আওয়ামী লীগের মধ্যে কোন্দলের কাল্পনিক কাহিনী প্রচারে ঊঠে পরে লেগেছে। তবে এতে কোন লাভ হবেনা। সত্যকে কখনো মিথ্যা দিয়ে ঢাকা যাবেনা”।সত্য একদিন প্রকাশ হবেই।সেদিনের অপেক্ষায় আ’লীগের নেতা কর্মীরা।
সম্পাদক ও প্রকাশক: এ. এস.এম মুরসিদ (লিটু সিকদার) মোবাইল: 01728 311111