আলিফ হোসেনঃ
রাজশাহীর তানোরে পাঁচন্দর ইউনিয়ন (ইউপি) বিএনপির ইফতার ও দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথিকে বরণ করা নিয়ে বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষ ও ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এদিন সংঘর্ষে উভয় পক্ষের অন্তত ৫ জন আহত হয়েছে। আহতদের মধ্যে জানেউল ইসলাম নামের একজনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (রামেক) লাইফ সাপোর্টে নেয়া হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ১১ মার্চ মঙ্গলবার শেষ বিকেলে উপজেলার পাঁচন্দর ইউনিয়নের (ইউপি) কৃঞ্চপুর মোড়ে দুপক্ষের মাঝে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় উভয় পক্ষের পাঁচজন আহত হয়।
আহতরা হলেন, সাবেক চেয়ারম্যান ইউপির একাংশের সভাপতি মমিনুল হক মমিন, তার ভাই জানেউল ইসলাম, অপর গ্রুপের ইউপি বিএনপির সভাপতি প্রভাষক মজিবুর রহমান, উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক গোলাম মুর্তজা ও লুৎফর রহমান। পরে পুলিশ ও সিনিয়র নেতাদের হস্তক্ষেপে পরিবেশ শান্ত হলে ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। জানেউলের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে রামেক হাসপাতালে আইসিসিউতে নেয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মমিনুল হকের পক্ষের সাবেক ছাত্র দলের সভাপতি মালেক মন্ডল জানান, বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা মজিবুর প্রভাব খাটিয়ে একাই সবকিছু নিয়ে নেয়। কিন্তু মমিনকে কোনো পাত্তাই দেয় না। মমিন গ্রুপের লোকজন কৃঞ্চপুর আদর্শ মহিলা কলেজে ইফতারে উপস্থিত হওয়ার জন্য কৃঞ্চপুর মোড়ে প্রধান অতিথিকে বরণ করে মঞ্চে নিয়ে যেতে চায় মমিন গ্রুপের নেতাকর্মীরা।
মালেক মন্ডল আরও জানান, এ সময় মজিবুর রহমানের নেতৃত্বে তার নেতাকর্মীরা হামলা চালায়। এতেই গুরুতর আহত হয় সাবেক চেয়ারম্যান মমিনের ভাই জানেউল। সংঘর্ষে ওই এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। ছড়িয়ে পড়ে ব্যাপক আতঙ্ক। পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী মমিন গ্রুপের নেতাকর্মীদের উপর হামলা চালানো হয়। এটা অত্যন্ত দুঃখজনক।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, কৃঞ্চপুর মোড়ে আসামাত্রই কোন কিছু বুঝে উঠার আগেই মারপিট শুরু হয়। মোড়ে যখন মারপিট চলছে তখন ইফতারের মঞ্চে উপজেলার শীর্ষ নেতারা বসে ছিলেন।
এদিকে ইউপি বিএনপির সভাপতি প্রভাষক মজিবুর রহমানের মোবাইলে একাধিক বার ফোন দেয়া হলেও তিনি রিসিভ করেননি। অন্যদিকে ইউপি বিএনপির আরেক অংশের সভাপতি সাবেক চেয়ারম্যান মমিনুল হক মমিনের মোবাইলে ফোন দেয়া হলে তিনিও রিসিভ করেননি।
তবে উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক আখেরুজ্জামান হান্নান জানান, মহিলা কলেজ মাঠে ইফতারের স্থান ছিল। প্রধান অতিথি মেজর জেনারেল (অব) শরিফ উদ্দিনকে কৃঞ্চপুর মোড় থেকে স্লোগান দিয়ে ইফতারের মঞ্চে নিয়ে যেতে চায় মমিনের লোকজন। কিন্তু প্রভাষক মজিবুর বাধা দেয়। এটা নিয়েই মারপিট হয়। এখন পরিবেশ শান্ত আছে। পরে উভয় পক্ষকে নিয়ে বসে মীমাংসা করা হবে।
এ বিষয়ে তানোর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আফজাল হোসেন জানান, দুই গ্রুপের মধ্যে হাতাহাতি হয়েছিল। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। এখন পরিবেশ শান্ত আছে। তবে কোন পক্ষই অভিযোগ করে নি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
প্রসঙ্গত, বিএনপির ইফতার ও দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম জিয়ার রাজনৈতিক উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য মেজর জেনারেল (অব) শরিফ উদ্দিন।
সম্পাদক ও প্রকাশক: এ. এস.এম মুরসিদ (লিটু সিকদার) মোবাইল: 01728 311111