ইস্রাফিল হোসেন ইমনঃ
ফিল্মী ষ্টাইলে কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায় আর্দশ ডিগ্রী কলেজের অধ্যক্ষ’র চেয়ার দখলে নিয়েছে অত্র কলেজেরই সাবেক ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ও চাঁদগ্রাম ইউনিয়ন জাসদের সহ-সভাপতি মিজানুর রহমান মিজান।
আজ রবিবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে কতিপয় ব্যক্তিকে সাথে নিয়ে কলেজের নিয়মতান্ত্রিকভাবে নিয়োগ পাওয়া বৈধ অধ্যক্ষ শামসুজ্জামান রঞ্জু কে চেয়ার থেকে জোর পূর্বক উঠিয়ে তিনি ঐ চেয়ার দখল করেন।
এ ঘটনায় হতবাক হয়ে পড়েছে কলেজে কর্মরত বিএনপি ও জামায়াত সমর্থিত সহকারী অধ্যাপক, প্রভাষক এবং ভেড়ামারার সুশীল সমাজ।
সূত্র জানায়, এক সময় বিএনপির রাজনীতির সাথে সক্রিয় ছিল ভেড়ামারা আর্দশ কলেজের প্রভাষক মিজানুর রহমান মিজান। পরবর্তীতে আওয়ামীলীগ-জাসদ সরকার গঠন করলে তিনি জাসদে যোগদান করেন। পদ পান চাঁদগ্রাম ইউনিয়ন জাসদের সহ-সভাপতির।
আওয়ামী লীগ ও জাসদ’র ক্ষমতাকে ব্যবহার করে ২০১৪ সালে আর্দশ কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ’র চেয়ার দখলে নেয় মিজানুর রহমান।
তৎকালীন সময় থেকে ২০২৪ সালের ৫ অগাষ্ট পর্যন্ত তিনি অধ্যক্ষের চেয়ার দখল করে রাখেন। ৫ অগষ্ট আওয়ামীলীগ সরকারের পতন হলে সে আত্মগোপনে চলে যায়।
১৯ অগষ্ট বিধি মোতাবেক এবং নিয়মতান্ত্রিকভাবে আর্দশ কলেজের অধ্যক্ষ’র দায়িত্ব গ্রহন করেন কলেজের সহকারী অধ্যাপক শামসুজ্জামান রঞ্জু। এরপর থেকেই তিনি কলেজ কে ঢেলে সাজানোর চেষ্টা করে আসছেন।
আজ রবিবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে হঠাৎ করেই কলেজ পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি ফারিহা আক্তার কলেজের সাবেক ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মিজানুর রহমান মিজান সহ কয়েকজন সাঙ্গপাঙ্গ নিয়ে কলেজে প্রবেশ করেন। এ সময় অধ্যক্ষ’র রুমে আকষ্মিক প্রবেশ করেই দেখতে পান কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ শামসুজ্জামান রঞ্জু অধ্যক্ষ’র চেয়ারে বসে নিজ দায়িত্ব পালন করছেন।
এ সময় জোর পূর্বক তাকে চেয়ার থেকে উঠিয়ে অফিস থেকে বের করে দেন। এরপরই অনিয়ম তান্ত্রিকভাবে অধ্যক্ষের চেয়ার দখলে নেন, জাসদ নেতা মিজানুর রহমান মিজান।
কলেজের অধ্যক্ষ শামসুজ্জামান রঞ্জু অভিযোগ করে বলেছেন, ১৯ অগষ্ট কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব পায় বিধি মোতাবেক। হঠাৎ করেই কোন কারণ ছাড়াই কলেজ পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি ফারিহা আক্তার, সাবেক ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ও জাসদ নেতা কে নিয়ে কলেজে প্রবেশ করে এবং নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করেই আমাকে অধ্যক্ষের চেয়ার থেকে জোর পূর্বক উঠিয়ে দেয়। এটি একটি চরম ন্যাক্কারজনক ঘটনা। যা চরমভাবে অবৈধ।
একজন কলেজ অধ্যক্ষকে কোন আইনের বলে এবং ক্ষমতার অপব্যবহার করে এহেন কর্মকান্ড ঘটিয়েছে।
ভেড়ামারা পৌর বিএনপির সদস্য সচিব শফিকুল ইসলাম ডাবলু বলেন, মিজানুর রহমান মিজান আওয়ামী লীগ ও জাসদ সরকারের শাসনামলে ২০১৪ সাল থেকে ২০২৪ সালের ৫ অগষ্ট পর্যন্ত অধ্যক্ষের চেয়ারে বসে ক্ষমতার অপব্যবহার করেছে। জাসদের গর্ভে লালিত ও আওয়ামীলীগের পৃষ্ঠপোষকতায় বেড়ে উঠা সে একজন ফ্যাসিবাদের দোসর।
রাজনৈতিকভাবে চাঁদগ্রাম ইউনিয়ন জাসদের সহ-সভাপতি হিসাবে দীর্ঘদিন দায়িত্ব পালন করে আসছে। তার মতো একজন চিহ্নিত ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসর কলেজের অধ্যক্ষ’র চেয়ার দখলে নেওয়ার প্রচেষ্টা সত্যিই লজ্জাজনক।
এ বিষয়ে অধ্যক্ষ’র চেয়ার জবরদখল করে নেওয়া জাসদ নেতা মিজানুর রহমান মিজানের সাথে যোগাযোগ করা হলে, তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া গেছে।
সম্পাদক ও প্রকাশক: এ. এস.এম মুরসিদ (লিটু সিকদার) মোবাইল: 01728 311111