বাংলাদেশের সরকার মঙ্গলবার এক প্রজ্ঞাপন জারি করে জানিয়েছে, ঈদুল আযহা উদযাপনের জন্য চলমান বিধি-নিষেধ শিথিল করা হয়েছে।
১৪ই জুলাই মধ্যরাত থেকে ২৩শে জুলাই ভোর ৬টা পর্যন্ত সব ধরণের বিধিনিষেধ শিথিল থাকবে।
কারণ হিসেবে সরকার বলছে এ সময়ে অর্থনৈতিক সব কর্মকাণ্ড স্বাভাবিক রাখার স্বার্থে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
এরপর ২৩শে জুলাই ভোর ৬টা থেকে ৫ই অগাস্ট রাত ১২টা পর্যন্ত নতুন করে কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে।
সরকার বলছে ঈদুল আযহাকে সামনে রেখে বিধিনিষেধ শিথিল করা হয়েছে।
ওই সময়ে জনগণকে মাস্ক পরা এবং কঠোরভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। এসময় জনসাধারণের যাতায়াতে বাধা থাকবে না, এবং ঈদ সামনে রেখে ব্যবসা-বাণিজ্য পরিচালনা করতে পারবেন ব্যবসায়ীরা।
সরকারের জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় প্রজ্ঞাপনে ২৩শে জুলাই ভোর ৬টা থেকে ৫ই অগাস্ট রাত ১২টা পর্যন্ত নতুন করে যে কঠোর বিধিনিষেধ আরোপের কথা বলেছে, তাতে ২৩টি শর্ত আরোপ করা হয়েছে।
জরুরি কারণ ছাড়া কেউ রাস্তায় বের হতে পারবে না বলে জানিয়েছেন সরকার।
এর মধ্যে কয়েকটিঃ
* সকল সরকারি, আধাসরকারী, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি অফিস বন্ধ থাকবে।
* সড়ক, রেল ও নৌ-পথে গণপরিবহন, অভ্যন্তরীণ বিমান ও সকল প্রকার যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকবে।
* শপিংমল মার্কেটসহ সব দোকানপাট বন্ধ থাকবে।
* সকল পর্যটন কেন্দ্র, রিসোর্ট, কমিউনিটি সেন্টার ও বিনোদন কেন্দ্র বন্ধ থাকবে।
* সব শিল্প-কলকারখানা বন্ধ থাকবে।
* জনসমাবেশ হয় এমন সামাজিক
অনুষ্ঠান, যেমন বিয়ের অনুষ্ঠান-জন্মদিন-পিকনিক ইত্যাদি, রাজনৈতিক ও ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান বন্ধ থাকবে।
* আইনশৃঙ্খলা, জরুরি পরিষেবা, খাদ্যদ্রব্য পরিবহণ ত্রাণ বিতরণ, রাজস্ব আদায়, সরকারি ও বেসরকারি টেলিফোন ও ইন্টারনেট সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান, গণমাধ্যম সংশ্লিষ্ট কর্মীরা ও যানবাহন প্রাতিষ্ঠানিক পরিচয় দেখিয়ে যাতায়াত করতে পারবে।
* অতি জরুরি প্রয়োজন ছাড়া যেমন ওষুধ ও নিত্য প্রয়োজনীয় কেনাকাটা, চিকিৎসা সেবা, মৃতদেহ দাফন বা সৎকারের মত কাজ ছাড়া বাড়ির বাইরে বের হওয়া যাবে না। নির্দেশনা অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
* খাবারের দোকান ও রেস্তোরাঁ সকাল ৮টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত খাবার বিক্রি করতে পারবে।
* বেসামরিক প্রশাসনের সহায়তায় সেনাবাহিনী মাঠ পর্যায়ে প্রয়োজনীয় সংখ্যক সেনা মোতায়েন করবে।
* আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চালু থাকবে এবং বিদেশগামী যাত্রীরা আন্তর্জাতিক ভ্রমণের টিকেট দেখিয়ে গাড়ি দিয়ে যাতায়াত করতে পারবে।
* পণ্য পরিবহনে নিয়োজিত ট্রাক, লরি, কাভার্ড ভ্যান, কার্গো ভেসেল নিষেধাজ্ঞার আওতার বাইরে থাকবে।
* বন্দরসমূহ অর্থাৎ বিমান, নৌ ও স্থল বন্দর এবং এর সাথে সম্পৃক্ত অফিস বিধিনিষেধের আওতার বাইরে থাক...
* টিকা কার্ড দেখিয়ে কোভিডের টিকা গ্রহণ করতে যাওয়া যাবে।
* বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট আদালতসমূহের বিষয়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা জারি করবে।
* প্রত্যেক জেলার ম্যাজিস্ট্রেট নিজ জেলার সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নিয়ে সমন্বয় সভার মাধ্যমে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর টহলের অধিক্ষেত্র, সময় ও এলাকা নির্ধারণ করবেন।
* মাঠ পর্যায়ে প্রয়োজনীয় সংখ্যক নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ নিশ্চিত করবে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।
* স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক জেলা প্রশাসন ও পুলিশ বাহিনীকে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের প্রয়োজনীয় ক্ষমতা প্রদান করতে পারবেন।
* ব্যাংক, বীমা ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সেবা দেয়ার বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ নির্দেশনা দেবে।
* বিভাগীয়, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তার কার্যালয় খোলা রাখার বিষয়ে অর্থ বিভাগ নির্দেশনা দেবে।
* সরকারি কর্মচারীগণ নিজ নিজ কর্মস্থলে থাকতে হবে, এবং দাপ্তরিক কাজসমূহ ভাচুয়ালি সম্পন্ন করতে হবে।
শর্তাবলী পালনের জন্য 'সংক্রামক রোগ প্রতিরোধ, নিয়ন্ত্রণ ও নির্মূল আইন- ২০১৮' এর আওতায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক জেলা প্রশাসন ও পুলিশ বাহিনীর মাধ্যমে আইনানুগ ব্যবস্থা নেবেন বলে প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়েছে।
বাংলাদেশ করোনাভাইরাসের উর্ধ্বমুখী সংক্রমণ ঠেকাতে পহেলা জুলাই থেকে আরোপ করা এক সপ্তাহের 'কঠোর লকডাউন' পরে আরেক সপ্তাহ বাড়িয়ে ১৪ই জুলাই মধ্যরাত পর্যন্ত করা হয়েছে।
তবে এপ্রিল মাসের পাঁচ তারিখ থেকে দেশে বিভিন্ন নামে লকডাউন বা চলাচলে বিধিনিষেধ চলছে।
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ মোঃ মুরসিদ আহমেদ (লিটু সিকদার), মোবাইল : 01728 311111
ঢাকা অফিসঃ হোল্ডিং-১৩, লাইন-৬, রোড- ১২, ব্লক-বি, মিরপুর-১১, ঢাকা-১২১৬
ফরিদপুর অফিসঃ মুজিব সড়ক, ফরিদপুর, ই-মেইলঃ [email protected]
Copyright © August, 2020-2025 @ Daily Somoyer Protyasha