পূর্বশত্রুতা নাকি শ্লীলতাহানী? থানায় দু’পক্ষের পাল্টাপাল্টি অভিযোগ। কার কথা ঠিক?
ঝিনাইদহ সদর উপজেলার শাগান্না ইউনিয়নের শাগান্না গ্রামের ষাটতলা পাড়ায় পূর্বশত্রুতা ও শ্লীলতাহানীর দায়ে থানায় পাল্টা-পাল্টি অভিযোগ করেছে দু’পক্ষ। এ নিয়ে এলাকাজুড়ে চলছে চরম তোলপাড়।
শুক্রবার সরেজমিনে ঝিনাইদহের শাগান্না ইউনিয়নের শাগান্না গ্রামের ষাটতলা পাড়ায় গিয়ে পূর্বশত্রুতা ও শ্লীলতাহানীর ঘটনা তদন্ত করে উঠে এসেছে ভয়ঙ্কর চিত্র।
শাগান্না ইউনিয়ন ছাত্রলীগের নেতা মোঃ বিল্লাল হোসেন, সোহাগ আহমেদ হযরত আলী ও স্থানীয় মাতব্বর মালেক শিকদার জানায়, সদর উপজেলার শাগান্না ইউনিয়নের শাগান্না গ্রামের ষাটতলা পাড়ায় রাশিদুলের নয়া স্ত্রী তানিয়া খাতুন একই এলাকার ডাকবাংলা বাজারের আব্দুর রউফ মহাবিদ্যালয়ে প্রথম বর্ষে পড়াবস্থায় একই এলাকার বাবলু মিয়ার ছেলে বখাটে সম্রাট হোসেন (২১) রাস্তার মাঝে, কলেজ মোড়সহ বিভিন্ন স্থানে দীর্ঘদিন তানিয়াকে কুপ্রস্তাব দিয়ে আসছিল।
একপর্যায়ে তানিয়া তার পিতা মাতাকে বিষয়টি অবহিত করলে তার পিতা মাতা তানিয়াকে শাগান্না গ্রামের ষাটতলা পাড়ায় হযরত আলীর ছেলে রাশিদুলের সাথে প্রায় দুই মাস পূর্বে বিবাহ দেই। তানিয়ার বিয়ের পরেও ক্ষান্ত হয়নি এলাকার আলোচিত বখাটে সম্রাট হোসেন। সম্রাট সদ্য বিবাহিত তানিয়ার শ্বশুর বাড়ির আশপাশে তার বন্ধুদের নিয়ে ঘোরাঘুরি করে এবং বিভিন্ন সময়ে অশ্লিল ও আপত্তিজনক কথাবার্তা বলে।
এবিষয়টি তানিয়া তার শ্বশুর হযরত আলী ও শ্বাশুড়ি নজিরন নেছাকে জানালে তারা মানসম্মানের ভয়ে আপাতত চুপ থাকতে বলে।
ঘটনার দিন ৬ই জুলায় মঙ্গলবার বিকালে ইজিবাইক যোগে সম্রাট তার বাখাটে বন্ধুদেরকে নিয়ে ইজিবাইক যোগে তানিয়ার শ্বশুর বাড়ির আশপাশে ওৎ পেতে থেকে সুযোগ বুঝে তানিয়ার হাত ধরে তুলে নিয়ে যেতে চাইলে তানিয়ার ডাক চিৎকারে ছাত্রলীগের নেতা বিল্লাল হোসেন, সোহাগ আহমেদ হযরত আলী ও স্থানীয় মাতব্বর মালেক শিকদারসহ স্থানীয়রা ছুটে এসে সম্রাটকে ধরে উত্তম মধ্যম দেয়।
এসময় সম্রাটের বখাটে বন্ধুরাও স্থারীয়দের হাতে উত্তমমধ্যম খাওয়ার পর পালিয়ে যায়। পরে সম্রাটকে এলাকার বৈডাঙ্গা বাজারের বৈডাঙ্গা প্রাইভেট ক্লিনিকে ভর্তি করে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে সম্রাটের পিতা বাবলু মিয়ার কাছে সোপর্দ করে।
এসময় বাবলু মিয়ার সাথে তানিয়া পক্ষের কথা থাকে দুই এক দিনের মধ্যে আলোচনা করে সমস্যার সমাধান করা হবে। কিন্তু কথা রাখেনি সম্রাটের পিতা বাবলু মিয়া। একটি কুচক্রী মহলের ইন্ধনে তিনি পরদিন ছেলে সম্রাটকে নিয়ে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে ভর্তি করে একটি মেডিকেল এসাল্ট (মারপিট) সার্টিফিকেট নিয়ে ঝিনাইদহ সদর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন।
তার অভিযোগ সম্রাটকে হাতুড়িপেটা করার পর মুমুর্ষ অবস্থায় ঢাকায় রেফার্ড করা হয়েছে মর্মে একটি মিথ্যা অভিযোগ দায়ের করেছেন বলে জানায় এলাকার মাতুব্বর মালেক শিকদার।
সম্রাটের পিতার থানায় মিথ্যা অভিযোগ দায়েরের বিষয়টি জানাজানি হলে ৮ই জুলায় তানিয়া খাতুন ঝিনাইদহ সদর থানায় সম্রাট হোসের গংদের বিরুদ্ধে একটি শ্লীলতাহানী ও মানহানীকর অভিযোগ দায়ের করেন।
এবিষয়ে শাগান্না ইউনিয়নের মেম্বর রাজু আহাম্মেদ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন দু’পক্ষই আমার ওয়ার্ডে বাসিন্দা। সুতরাং আমি এবিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি নই।
এঘটনায় এলাকাবাসি সাংবাদিকদের কছে সঠিক তদন্তের মাধ্যমে বখাটে সম্রাট গংদের অত্যাচারে আর কোনো মেয়ে যেন এভাবে হয়রানয় না হয় মর্মে সম্রাট গংদের দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি দাবী করেছেন।
এ ব্যাপারে ঝিনাইদহ সদর থানার ওসি মিজানুর রহমান বলেন, একটি এজাহার পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ মোঃ মুরসিদ আহমেদ সিকদার, মোবাইল : 01728 311111
ঢাকা অফিসঃ হোল্ডিং-১৩, লাইন-৬, রোড- ১২, ব্লক-বি, মিরপুর-১১, ঢাকা-১২১৬
ফরিদপুর অফিসঃ মুজিব সড়ক, ফরিদপুর, ই-মেইলঃ [email protected]
Copyright © August, 2020-2025 @ Daily Somoyer Protyasha