আলিফ হোসেন, তানোর (রাজশাহী) প্রতিনিধিঃ
রাজশাহীর তানোরে চলতি মৌসুমে আলুচাষে কৃষকদের উৎপাদন খরচ উঠছে না।অধিকাংশক্ষেত্রে উৎপাদন খরচের প্রায় অর্ধেক দামে আলু বিক্রি করছেন কৃষক।প্রতি কেজিতে উৎপাদন খরচ প্রায় ২২ টাকা। অথচ কৃষকরা এখন বিক্রি করছেন ১৪ থেকে ১৫ টাকা কেজিতে। গতবারের তুলনায় বেশি জমিতে আলু চাষ হলেও এবার দাম নিয়ে বিপাকে পড়েছেন কৃষকরা। উৎপাদন খরচের তুলনায় আলু বিক্রি করছেন প্রায় অর্ধেক দামে। এর পাশাপাশি কোল্ড স্টোরেজের ভাড়াও বেড়েছে। সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানা গেছে,উপজেলায় চলতি মৌসুমে আলু চাষের লক্ষমাত্রা ছিল ১৩ হাজার ১১৫ হেক্টর জমিতে। কিন্তু চাষ হয়েছে ১৩ হাজার ৩৮৫ হেক্টর জমিতে। উৎপাদনের লক্ষমাত্রা ধরা হয়েছে প্রায় ৪ লাখ ২৮ হাজার ৩২০ মেট্রিক টন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এবার এক বিঘা আলু চাষে খরচ হয়েছে প্রায় ৭৫ হাজার টাকা। জমি ভাড়া গড় ২৫ হাজার টাকা, বীজ ৩০ হাজার,সার ৭ হাজার, রোপণ ৩ হাজার, টব ২৫০০ টাকা, কীটনাশক ৪ হাজার, উত্তোলন ৫ হাজার ও সেচ দেড় হাজার টাকাসহ মোট ৭৫ হাজার ৫০০ টাকা। এক বিঘা জমিতে ৭০ কেজির ওজনে ৪৫ থেকে ৫০ বস্তা বা ৩ হাজার ৫০০ কেজি। এক কেজি আলু উৎপাদনে খরচ হচ্ছে প্রায় ২২ টাকা। অথচ এখন জমিতে প্রতি কেজি আলু বিক্রি হচ্ছে ১৪ থেকে ১৫ টাকায়। সেই হিসেবে প্রতি কেজিতে কৃষকের লোকসান হচ্ছে গড় ৭ টাকা এবং প্রতি বিঘায় প্রায় ২৫ হাজার টাকা।
এদিকে আলু চাষি রবিউল ইসলাম কোল্ড স্টোরেজের ভাড়া বৃদ্ধি আরেক দফা চাপ সৃষ্টি করেছে জানিয়ে বলেন, 'গত বছর বস্তা ৩৫০ টাকায় রাখতাম। ৫০ কেজির বস্তায় ৬৫ কেজি আলু ধরত। কিন্তু এবার কেজিতে ৮ টাকা দিতে হবে। ৮ টাকা স্টোরেজ ভাড়া দিয়ে পরে কয় টাকায় আলু বিক্রি করতে পারি, বলতে পারছি না। এনিয়ে চরম মানুষিক চাপে রয়েছি।
বাংলাদেশ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুসারে, চলতি মৌসুমে ৪ দশমিক ৬৭ লাখ হেক্টর জমিতে আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে কৃষি মন্ত্রণালয়। তবে আবাদ হয়েছে ৫ দশমিক ২৪ লাখ হেক্টর জমিতে। অর্থাৎ এবার লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৪৭ হাজার হেক্টর বেশি জমিতে আলু চাষ হয়েছে।
অন্যদিকে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) হিসাব অনুযায়ী, গত অর্থবছরে আলুর আবাদ হয়েছিল ৪ দশমিক ৫৭ লাখ হেক্টর জমিতে। অর্থাৎ গত বছরের তুলনায় এবার ৬৭ হাজার হেক্টর বেশি জমিতে আলুর চাষ হয়েছে।
ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি থেকে পুরো মার্চ মাসজুড়ে মূল মৌসুমের আলু উত্তোলন করেন কৃষকরা। তবে গত বছর আলুর ভরা মৌসুমেই দাম ছিল বেশি। এরপর মে মাসে তা ৫০ টাকা পেরিয়ে যায়। নভেম্বরে আলুর দাম দাঁড়ায় কেজিতে ৮০ টাকা, যা গত পাঁচ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ।
এবিষয়ে তানোর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাইফুল্লাহ আহমেদ বলেন, এবার আলু চাষের লক্ষমাত্রা ছিল ১৩ হাজার ১১৫ হেক্টর জমিতে। কিন্তু চাষ হয়েছে ১৩ হাজার ৩৮৫ হেক্টর জমিতে। উৎপাদন লক্ষমাত্রা ৪ লাখ ২৮ হাজার ৩২০ মেট্রিক টন।
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ এ. এস.এম মুরসিদ, মোবাইল : 01728 311111
ঢাকা অফিসঃ হোল্ডিং-১৩, লাইন-৬, রোড- ১২, ব্লক-বি, মিরপুর-১১, ঢাকা-১২১৬
ফরিদপুর অফিসঃ মুজিব সড়ক, ফরিদপুর, ই-মেইলঃ [email protected]
Copyright © August, 2020-2025 @ Daily Somoyer Protyasha