মোঃ জিয়াউর রহমান, দৌলতপুর (কুষ্টিয়া) প্রতিনিধি
প্রায় দেড় কোটি পাওনা টাকার দাবিতে কুষ্টিয়ার দৌলতপুর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও দৌলতপুর কলেজের অধ্যক্ষ মো. ছাদিকুজ্জামান খান সুমনের বাড়িতে ইটভাটা মালিকদের অবস্থান নিয়েছে।
আজ রাববার দুপুর ১২টার দিকে দৌলতপুর মাষ্টারপাড়ার নিজ বাড়ি ও তার বাবার বাড়িতে অবস্থান নেন তারা। এসময় ইটভাটা মালিকরা সুমনের বাবা মো. মাফিকুজ্জামান খানের সাথে কথা বলেন। তবে সুমনের সাথে তার বাবার সম্পর্ক ও যোগাযোগ নাই বলে ইটভাটা মালিকদের জানান মো. মাফিকুজ্জামান খান।
এরপর ইটভাটা মালিকরা দৌলতপুর কলেজে গিয়ে ম্যানেজিং কমিটির সভা চলাকালে কলেজের ম্যানেজিং কমিটির কাছে মৌখিক অভিযোগ দেন। মৌখিক অভিযোগের ভিত্তিতে দৌলতপুর কলেজের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আলহাজ¦ মো. আলতাফ হোসেন, সদস্য মো. আলাউদ্দিন বাদল, মো. আরিফুল ইসলাম নান্নু মাষ্টার ও ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো. আব্দুস সালাম দৌলতপুর কলেজের অধ্যক্ষ মো. ছাদিকুজ্জামান খান সুমনের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় বিধিবদ্ধ ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দেন।
পরে তারা দৌলতপুর থানায় যান এবং সুমনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দেন। ইটভাটা মালিকরা জানান, বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময় দলের লাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে ঠিকাদারি কাজ ও বিলাসবহুল নিজ বাসভবন নির্মানের জন্য দৌলতপুরের বিভিন্ন ইটভাটা মালিকদের কাছ থেকে বাঁকীতে প্রায় দেড় কোটি টাকার ইট সংগ্রহ করেন দৌলতপুর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও দৌলতপুর কলেজের অধ্যক্ষ মো. ছাদিকুজ্জামান খান সুমন।
এদের মধ্যে কয়েকজন ইটভাটা মালিককে চেক প্রদান করলে ব্যাংকে তা ডিজঅর্নার হয়। সরকার পরিবর্তন হওয়ার পর দৌলতপুর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সুমন গা ঢাকা দেয়। টাকা না পেয়ে অবশেষে ইটভাটা মালিকরা সুমনের বাড়িতে অবস্থান নেয় এবং দৌলতপুর কলেজের ম্যানেজিং কমিটির কাছে ও দৌলতপুর থানায় অভিযোগ দিতে বাধ্য হয়।
রিফায়েতপুর গ্রামের ইটভাটা মালিক শহিদুল ইসলাম ওলি জানান, তার ভাটা থেকে ৩২ লক্ষ টাকার ইট সংগ্রহ করেন অধ্যক্ষ ছাদিকুজ্জামান খান সুমন। বিভিন্ন অযুহাত দেখিয়ে টাকা দিতে গড়িমসি করেন তিনি। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর সুমনও পালিয়ে যায়। একই অভিযোগ করেন, সাদীপুর গ্রামের ইটভাটা মালিক মামুনের। তিনি জানান, তার ভাটা থেকে ২২ লক্ষ টাকার টাকার ইট নেন সুমন। আজ না কাল করে টাকা না দিয়ে দীর্ঘদিন হয়রানি করেন সুমন। অবশেষে বাধ্য হয়ে আমরা সুমন ও তার বাবা বাড়ি এবং কলেজে গিয়ে অভিযোগ দিতে বাধ্য হয়েছি।
স্বরুপপুর গ্রামের ইটভাটা মালিক নুরুল ইসলামও একই অভিযোগ করে বলেন, তিনি সুমনের কাছে ১৬ লক্ষ টাকা পাবেন। টাকার জন্য তাকে একাধিকবার ফোন দিলে তিনি ফোন ধরেননা। টাকা না পেয়ে হয়রানির শিকার হয়ে অবশেষে আজ বাধ্য হয়েছি অভিযোগ দিতে। একই গ্রামের আব্দুস সাত্তার নামে ইটভাটা মালিক জানান সুমনের কাছে তিনি ইট বিক্রয়ের ৮ লক্ষ টাকা পাবেন। শুধু তিনি একাই নন, দৌলতপুরের অধিকাংশ ইটভাটা মালিক সুমনের কাছে প্রায় দেড় কোটি টাকা পাওনা রয়েছে।
ইটভাটা মালিকদের অভিযোগের বিষয়ে দৌলতপুর কলেজের ম্যানেজিং কমিটির সদস্য মো. আলাউদ্দিন বাদল ও মো. আরিফুল ইসলাম নান্নু মাষ্টার বলেন, ইটভাটা মালিকরা দৌলতপুর কলেজের পলাতক অধ্যক্ষ ছাদিকুজ্জামান খান সুমনের কাছে প্রায় দেড় কোটি টাকা পাবে। এ বিষয়ে তারা অভিযোগ দিয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে ম্যানেজিং কমিটির সভায় সুমনের বিরুদ্ধে আইনগত ও বিধিবদ্ধ ব্যবস্থা গ্রহগণের সিদ্ধান্ত হয়েছে।
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ মোঃ মুরসিদ আহমেদ সিকদার, মোবাইল : 01728 311111
ঢাকা অফিসঃ হোল্ডিং-১৩, লাইন-৬, রোড- ১২, ব্লক-বি, মিরপুর-১১, ঢাকা-১২১৬
ফরিদপুর অফিসঃ মুজিব সড়ক, ফরিদপুর, ই-মেইলঃ [email protected]
Copyright © August, 2020-2025 @ Daily Somoyer Protyasha