আলিফ হোসেন, তানোর (রাজশাহী) প্রতিনিধি
রাজশাহীর তানোরে নীতিমালা লঙ্ঘন ও পুকুর ভরাট করে পাকা (স্থাপনা) মার্কেট নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয়রা জানান, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি গোলাম রাব্বানীর ঘনিষ্ঠ সহচর ও এক সময়ের আওয়ামী লীগের দাপুটে নেতা আব্দুল লতিব সরদার এই মার্কেট নির্মাণের কাজ শুরু করেছেন।এদিকে মার্কেট নির্মাণে পৌরসভার কোনো প্ল্যান পাশ করা হয়নি। আবার বাণিজ্যিক ভবনে (মার্কেট) প্রতিমাসে ভাড়া বাবদ কয়েক লাখ টাকা আয় ও কোটি টাকার জামানত নিলেও পুকুরের নামে খাজনা ও পৌরকর পরিশোধ করা হয়। ফলে বাণিজ্যিক ভবনের প্রকৃত কর থেকে বঞ্চিত হচ্ছে পৌরসভা ও রাজস্ব বিভাগ বলে একাধিক সুত্র নিশ্চিত করেছে।
সুত্র জানায়, উপজেলার প্রচন্ড খরাপ্রবণ মুন্ডুমালা পৌরসভার মুন্ডুমালা বাজারে প্রায় এক একর আয়তনের পুকুর ছিল। বিভিন্ন এলাকার মানুষ মুন্ডুমালা বাজারে এসে এই পুকুরের পানি ব্যবহার করতেন। এছাড়াও মুন্ডুমালা পশুহাটে বিক্রি করতে আশা গরু-ছাগল,মহিষ-ভেঁড়াকে পানি পান করানোর পাশাপাশি গোসল করানো হতো। অন্যদিকে মহল্লার মানুষের গোসলের পাশাপাশি গৃহস্থালি কাজের জন্য এই পুকুরের পানি ব্যবহার করা হতো।
স্থানীয়রা জানান,বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে মহল্লাবাসীর বাধা উপেক্ষা করে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও মুন্ডুমালা পৌরসভার মেয়র (তৎকালীন) গোলাম রাব্বানীর নেপথ্যে মদদে এই পুকুর ভরাট ও মার্কেট নির্মাণ করা হয়েছে। যেটুকু বাঁকি ছিল,সেখানেও নতুন করে মার্কেট নির্মাণ কাজ শুরু করা হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানা গেছে, প্রাকৃতিক জলাধার সংরক্ষণ আইন, ২০০০ অনুযায়ী, কোনো পুকুর, জলাশয়, খাল ও লেক ভরাট করা শাস্তিযোগ্য অপরাধ। পরিবেশ সংরক্ষণ আইনেও (২০১০ সালে সংশোধিত) যেকোনো ধরনের জলাশয় ভরাট করা নিষিদ্ধ।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কাউন্সিলর বলেন, এদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা না হলে তাদের দেখাদেখি অন্যরাও সরকারি পুকুর ভরাটে উৎসাহী হবে।
এ বিষয়ে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) তানোর উপজেলা শাখার সভাপতি মফিজ উদ্দিন বলেন, মুক্ত জলাশয় উদ্ধার করা না গেলে পরিবেশের চরম বিপর্যয় ঘটবে।
বিশেষজ্ঞদের অভিমত, এলাকায় শিল্পায়ন হোক সেটা তারাও চাই, তাই বলে শিল্পায়নের নামে (ভাতের থালায় লাথি) চার ফসলি জমি নষ্ট বা পুকুর ভরাটের করে নয়। অথচ সরকার প্রধান ও উচ্চ আদালতের নির্দেশনার ব্যত্তয় ঘটিয়ে এমন কাজ কিভাবে করা হলো সেটা অবশ্যই অধিকতর তদন্তের দাবি রাখে।
এবিষয়ে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভুমি) মাসতুরা আমিনা বলেন, ইউপি ভুমি অফিসের (নায়েব) তহসিলদারকে সরেজমিন ঘটনা তদন্ত করে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে, প্রতিবেদন হাতে পেলে পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়া হবে।
এবিষয়ে ইউপি ভুমি অফিসের (নায়েব) তহসিলদার বলেন, সরেজমিন ঘটনা তদন্ত করে প্রতিবেদন দেয়া হয়েছে।এবিষয়ে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও পুকুর সংশ্লিষ্ট কারো কোনো বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ মোঃ মুরসিদ আহমেদ সিকদার, মোবাইল : 01728 311111
ঢাকা অফিসঃ হোল্ডিং-১৩, লাইন-৬, রোড- ১২, ব্লক-বি, মিরপুর-১১, ঢাকা-১২১৬
ফরিদপুর অফিসঃ মুজিব সড়ক, ফরিদপুর, ই-মেইলঃ [email protected]
Copyright © August, 2020-2025 @ Daily Somoyer Protyasha