আলিফ হোসেন, তানোর (রাজশাহী) প্রতিনিধি
রাজশাহীর গোদাগাড়ী আধুনিক সড়ক যোগাযোগ বান্ধব উপজেলা হিসেবে স্বীকৃত।কিন্ত্ত ভেকুঁ দালালদের অবৈধ মাটি বাণিজ্যে ও দৌরাত্ম্যে জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। এবিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবুল হায়াতের কঠোর অবস্থান রয়েছে।কিন্ত্ত একশ্রেণীর দুর্নীতিবাজ কর্মচারীর কারণে ভেকুঁ দালালদের দৌরাত্ম্য কমছে। এরা ইউএনও'র নাম ভাঙিয়ে ভেকুঁ দালালদের কাছে থেকে আর্থিক সুবিধা নিচ্ছেন বলেও জনশ্রুতি রয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, এসব ভেকুঁ দালালদের অবৈধ মাটি বাণিজ্যে পরিবেশ দুষণ ও পাকা-কাচা রাস্তা ভেঙে ও ট্রাক্টরের মাটি পড়ে রাস্তা নষ্ট হয়ে প্রায় যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হতে চলেছে। কিন্ত্ত অধিকাংশক্ষেত্রে প্রশাসন নির্বকার রয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। আবার কেউ অভিযোগের দোহায় দিয়ে এড়িয়ে যাচ্ছে। প্রশ্ন হলো প্রশাসনের কাজ কি ? কেবলমাত্র অভিযোগ দিলেই তারা কাজ করবে, আর অভিযোগ না দিলে যে কেউ যে কোনো অন্যায় করে পার পেয়ে যাবে ? দেশের আইন কি সেটাই বলে ? আবার যারা এসব অপকর্ম করে তারা প্রভাবশালী এরা প্রশাসনকে ম্যানেজ করেই এসব করে। তাহলে সমাজের সাধারণ মানুষ কি ? এদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করতে পারে ? এদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করবে কে ? বা বেড়ালের গলায় ঘন্টা বাঁধবে কে ? তাদের ভয়ে যদি কেউ অভিযোগ না করে তবে কি প্রশাসন কোনো ব্যবস্থা নিবে না ? এরা বার বার অপরাধ করে পার পেয়ে যাবে, সরকারি সম্পদ রক্ষা বা দেখভাল করা কি সরকারি কর্মকর্তাদের দাযিত্বের মধ্য পড়ে না- না কি আর্থিক সুবিধা নিয়ে এদের এসব অপকর্মের সুযোগ করে দেয়া হচ্ছে ? সচেতন মহলে ইত্যাদি হাজারো প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে।
জানা গেছে, গোদাগাড়ী উপজেলায় রাত নামলেই শুরু হয় এস্কেভেটর (ভেকুঁ) দালালদের চরম দৌরাত্ম্যে। দিনের বেলায় শুনসান নিরবতা, সন্ধ্যা গড়িয়ে অন্ধকার হলেই শুরু হয় মাটি বিক্রির মহোৎসব। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, উপজেলার মাটিকাটা ইউনিয়নের (ইউপি) সোনাদীঘি এলাকায় ৫টি ভেকু মেশিনে মাটি কেটে প্রায় অর্ধশত কাঁকড়া (অবৈধ) ট্রাক্টর গাড়িতে মাটি চলে যাচ্ছে ইটভাটায়। অন্যদিকে ট্রাক্টরের মাটি রাস্তায় পড়ে চলাচলের অযোগ্য কর্দমাক্ত মহাসড়ক যেনো মরনফাঁদ। এভাবেই গোদাগাড়ী উপজেলা প্রশাসনের নাকের ডগায় রাজশাহী-চাপাইনবাবগঞ্জ মহাসড়কের পাশে মাটিকাটা ইউনিয়নের সোনাদীঘিতে চলছে পুকুর সংস্কারের নামে অবৈধ মাটি বাণিজ্যের বিশাল কর্মযজ্ঞ।প্রশাসন ও গণমাধ্যম কর্মীদের চোখ ফাঁকি দিতে দিনের আলোর বদলে রাতের আঁধার বেছে নিয়েছেন ভেকুঁ দালাল সিন্ডিকেট চক্র।
স্থানীয় রাজনৈতিক পরিচয়ের প্রভাবশালী মহলের ছত্রছায়ায় অবৈধ মাটি বাণিজ্যে প্রশাসনের ভূমিকাও প্রশ্নবিদ্ধ। উপজেলা প্রশাসন বলছে এমন কোন অভিযোগ তাদের জানা নেই, অথচ ভেকুঁ দালাল চক্র বলছে সব ম্যানেজ করে মাটি বিক্রি করা হচ্ছে।
স্থানীয়রা জানান, উপজেলা প্রশাসনকে ম্যানেজ করে পুকুর খনন ও অবৈধ মাটি করছেন জনৈক তোতা নামের এক ভেকুঁ দালাল। গোদাগাড়ী উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান বেলাল উদ্দিন সোহেলের সঙ্গে তোতার ভালো সক্ষতা ছিলো। সেই প্রভাব দেখিয়ে কাউকে তোয়াক্কা না করেই দেদারসে চালিয়ে যাচ্ছে পুকুর খনন ও অবৈধ মাটি বানিজ্যে।শুস্ক মৌসুমের শুরুতেই ভূমি ও ফসলি জমি সুরক্ষা আইন উপেক্ষা করে গোদাগাড়ী উপজেলার সোনাদীঘিতে প্রায় ৩০বিঘা জমিতে সংস্কারের নামে চলছে পুকুর খনন ও অবৈধ মাটি বিক্রি। সংস্কারের নামে ফসলি জমিতে পুকুর খনন এতে একদিকে যেমন খাদ্য শস্য উৎপাদন কমে যাচ্ছে, অন্য দিকে মাটি পড়ে কর্দমাক্ত হয়ে নষ্ট হচ্ছে মহাসড়ক। চরম দূর্ভোগে পড়েছেন পথচারীরা।এ বিষয়ে পুকুর খননকারী তোতা জানান,আমার পুকুর খনন কেউ বন্ধ করতে পারবে না আমার সব অনুমতি আছে। এ বিষয়ে গোদাগাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবুল হায়াত বলেন, লিখিত অভিযোগ পেলে আমরা ব্যবস্থা নিবো। তিনি বলেন, এর আগেও একই পুকুরে অভিযান করে পুকুর খনন বন্ধ করা হয়েছিলো।
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ মোঃ মুরসিদ আহমেদ সিকদার, মোবাইল : 01728 311111
ঢাকা অফিসঃ হোল্ডিং-১৩, লাইন-৬, রোড- ১২, ব্লক-বি, মিরপুর-১১, ঢাকা-১২১৬
ফরিদপুর অফিসঃ মুজিব সড়ক, ফরিদপুর, ই-মেইলঃ [email protected]
Copyright © August, 2020-2025 @ Daily Somoyer Protyasha