কাজী নূর, যশোর জেলা প্রতিনিধি
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল- বিএনপি'র জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু বলেছেন, জিয়াউর রহমানের স্বাধীনতা ঘোষণার মধ্য দিয়েই এ দেশ স্বাধীনতা লাভ করেছে। ২৫ মার্চ জেনারেল ইয়াহিয়া খানের বৈঠকে তাজউদ্দীন আহমেদ শেখ মুজিবকে স্বাধীনতার ঘোষণার আহ্বান জানালে তিনি তা প্রত্যাখ্যান করেন। শেখ মুজিব বলেন, আমি এখন স্বাধীনতা ঘোষণা করলে আমাকে ফাঁসির মঞ্চে ঝুলতে হবে। মঙ্গলবার (১৮ ডিসেম্বর) বিকেলে যশোর মুনশি মেহেরুল্লাহ ময়দানে (টাউন হল মাঠ) মহান বিজয়ের ৫৩ বছর পূর্তি উপলক্ষে যশোর জেলা বিএনপি আয়োজিত বিজয় দিবসের আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের পর আওয়ামী লীগ নেতারা সব ছেড়ে পালিয়ে গিয়েছিল। কাউকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। ৭১ এর পর গাছের পাতাও বাকশাল ছিল। কিন্তু ১৫ আগস্টের পর তাদের নেতার লাশ পড়ে থাকলেও সকলে পালিয়ে গিয়েছিল। তাদের স্বভাব হলো, কিছু হলেই তারা লেজ তুলে মামু বাড়িতে পালিয়ে যায়। তবে শেখ হাসিনা পালিয়ে গেলেও এখনো তার দোসররা রয়ে গেছে। একদিন তারা ভেসে উঠবে। তিনি হুশিয়ারি দিয়ে বলেন, ওইসব দোসরদের কিন্তু বিএনপিতে কোনো জায়গা হবেনা। এমন কি তাদের যারা আশ্রয় প্রশ্রয় দেবেন তাদের বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে।
ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু আরো বলেন, ২৬ শে মার্চ মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমান চট্টগ্রাম কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে স্বাধীনতার ঘোষণা দেন। তিনিই হচ্ছেন স্বাধীনতার ঘোষক। ৭ মার্চে শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা দেন নাই। তিনি সেদিন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার জন্য দরকষাকষি করেছিলেন। সৈনিকদের ক্যান্টনমেন্টে চলে যেতে বলেছিলেন। সেদিন স্লোগান উঠেছিল জয় বাংলা না জয় পাকিস্তান। ফলে জয় বাংলা স্বাধীনতার স্লোগান হতে পারে না।
তিনি বলেন, আমি চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে বলতে পারি এ দেশে সংখ্যালঘুরা মায়ের কোলে শিশুর মত নিরাপদে থাকে। বাংলাদেশে হিন্দু- মুসলমান ভাই ভাই হিসেবে বসবাস করে। যা শহীদ জিয়াউর রহমান আমাদের শিক্ষা দিয়ে গেছেন। একাত্তর, পঁচাত্তর, একানব্বই ও ২০২৪ এর গণঅভ্যুত্থানের পর বিএনপি জনগণের কাছে ত্রাণকর্তা হিসেবে দাঁড়িয়েছে। ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়কে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, আপনি নিজে এসে দেখে যান এখানে অত্যাচার হচ্ছে নাকি আপনার দেশের মিডিয়া মিথ্যাচার করছে।
যশোর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যাপক নার্গিস বেগমের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন বিএনপির খুলনা বিভাগীয় ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত, জেলা বিএনপির সদস্য সচিব অ্যাড. সৈয়দ সাবেরুল হক সাবু, সাবেক এমপি মফিকুল হাসান তৃপ্তি, কেন্দ্রীয় বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য ইঞ্জিনিয়ার টিএস আইয়ূব।
অন্যান্যের মধ্যে বক্তৃতা করেন কেশবপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি আবুল হোসেন আজাদ, যশোর নগর সাধারণ সম্পাদক এহসানুল হক সেতু, কোতোয়ালী থানা সাধারণ সম্পাদক আঞ্জুরুল হক খোকন, চৌগাছা পৌর সভাপতি সেলিম রেজা আউলিয়ার, মণিরামপুর উপজেলা আহ্বায়ক অ্যাড. শহীদ ইকবাল হোসেন, শার্শা উপজেলা আহ্বায়ক খাইরুজ্জামান মধু, অভয়নগর উপজেলা সাধারণ সম্পাদক গোলাম হায়দার ডাবলু, জেলা যুবদলের সভাপতি এম তমাল আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক আনছারুল হক রানা, জেলা মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক ফেরদৌস বেগম, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার রবিউল ইসলাম এবং জেলা ছাত্রদল সভাপতি রাজিদুর রহমান সাগর।
অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক দেলোয়ার হোসেন খোকন। এর আগে মিছিল নিয়ে জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা আলোচনা সভায় অংশ নেন। কোরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে আলোচনা সভা শুরু করেন জেলা ওলামা দলের সাধারণ সম্পাদক মাওলানা মোশাররফ হোসেন। এ সময় মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে নিহতদের রুহের মাগফিরাত কামনায় দোয়া ও মোনাজাত করা হয়।
আলোচনা সভা শেষে সন্ধ্যায় বিজয় দিবস উপলক্ষে আতশবাজি ফোটানো হয়। পরে মনোমুগ্ধকর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়।
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ মোঃ মুরসিদ আহমেদ সিকদার, মোবাইল : 01728 311111
ঢাকা অফিসঃ হোল্ডিং-১৩, লাইন-৬, রোড- ১২, ব্লক-বি, মিরপুর-১১, ঢাকা-১২১৬
ফরিদপুর অফিসঃ মুজিব সড়ক, ফরিদপুর, ই-মেইলঃ [email protected]
Copyright © August, 2020-2025 @ Daily Somoyer Protyasha