রনি আহমেদ রাজু, মাগুরা জেলা প্রতিনিধি
মাগুরায় সরকারি চাকরির বিধি উপেক্ষা করে, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের তিন কর্মচারী দেদারসে ঠিকাদারি ব্যবসা করছেন। এসব কর্মচারী, ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের যোগসাজশে নিজেদের ঠিকাদারি কাজ করছেন। ইতিমধ্যে তারা কোটি কোটি টাকার কাজ সম্পন্ন করেছেন। বিষয়টি জানার পরেও জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের খুলনা বিভাগের কর্তাব্যক্তিরা কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি। অভিযোগ উঠেছে, তারা শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রেখে নিয়মবহির্ভূত ঠিকাদারি কাজ করছেন। সরকারি কর্মচারী আচরণ বিধিমালা লঙ্ঘন করে তারা এই কাজ করছেন।
অভিযুক্তদের মধ্যে রয়েছেন—মোঃ ইমামুল হোসেন (ক্যাশিয়ার), মোঃ নূর ইসলাম (ভি এস লেবার), এবং মোঃ লিটন মোল্লা (মেকানিক), যারা মাগুরা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরে ঠিকাদারি কাজ পরিচালনা করছেন। গত চার বছরে তারা অন্তত সাড়ে ৬ কোটি টাকার ঠিকাদারি কাজ করে বিল তুলেছেন। তাদের মাধ্যমে সাবকন্ট্রাক্টে কাজ করেছেন দীপা এন্টারপ্রাইজ, ফ্রেন্ড কন্সট্রাকশন ফার্ম (এফ সি এফ), এবং মেসার্স শিকদার এন্টারপ্রাইজসহ আরও অনেক প্রতিষ্ঠান।
এ বিষয়ে মোঃ নূর ইসলাম (ভি এস লেবার) জানান, তিনি এবং তার সহকর্মীরা কয়েকজন মিলিত হয়ে শহরের হাজি রোড এলাকায় ফ্রেন্ড কন্সট্রাকশন ফার্ম খুলেছিলেন এবং কিছু কাজ করেছিলেন। তবে পরে তারা জানতে পারেন, সরকারি চাকরি করতে হলে এমন কাজ করা ঝামেলা হতে পারে, তাই এখন আর তারা ঠিকাদারি কাজ করছেন না।
সূত্র জানায়, মাগুরা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের আওতায় ওয়াশ ব্লক, ডিপ টিউবওয়েল, সাবমারসিবল পাম্প, প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নলকুপ ও ওয়াশ স্থাপন (PEDP-3) প্রকল্পসহ একাধিক কাজ তারা সাবকন্ট্রাক্টে করছেন।
তবে, অভিযোগ রয়েছে যে, টেন্ডারের ভ্যালিডিটি শেষ হয়ে গেলে, নির্বাহী প্রকৌশলীর পছন্দের ঠিকাদারকে টাইম এক্সটেনশন দেওয়া হয় এবং পরবর্তীতে তাদের নিয়েই কাজ করা হয়। এতে সরকারি কাজের স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।
এছাড়া, অভিযোগ রয়েছে যে, মাগুরা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ আবু বকর সিদ্দিকের মাধ্যমে তারা নিয়মিতভাবে এই অপকর্ম করছেন।
প্রসঙ্গত, সরকারি কর্মচারী আচরণ বিধিমালা ১৯৭৯-এর বিধি-১৭ অনুযায়ী, কোনো সরকারি কর্মচারীকে সরকারী পূর্বানুমতি ছাড়া অন্য কোনো ব্যবসায় জড়িত হতে কিংবা অন্য কোনো চাকরি গ্রহণ করতে নিষেধ করা হয়েছে। তবে, এই তিন কর্মচারী সরকারি চাকরি থাকতেও নিয়মবহির্ভূতভাবে কোটি কোটি টাকার ঠিকাদারি ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন। তাদের বিরুদ্ধে আয়বহির্ভূত অর্থ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ উঠেছে।
এ বিষয়ে নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ আবু বকর সিদ্দিক বলেন, "এ ধরনের ঘটনা আমার জানা নেই। তবে, আমি বিষয়টি তদন্ত করে দেখব এবং সত্য হলে ব্যবস্থা নেব।" কিন্তু তদবির ও সংবাদ প্রকাশিত হলেও তিনি কোনো কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করেননি। এছাড়া, তথ্য অধিকার আইনের অধীনে সাংবাদিকরা তথ্য চেয়ে আবেদন করলে, তিনি তা দিতে নানা তালবাহানা করেছেন।
আরও পড়ুনঃ মহান বিজয় দিবসে শহীদদের প্রতি সালথা উপজেলা বিএনপির শ্রদ্ধা নিবেদন
মাগুরা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের এই অনিয়ম ও দুর্নীতির তদন্ত দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তারা দাবি করছেন, মাগুরা জেলা বাসী যাতে সঠিকভাবে নিরাপদ পানি ও স্যানিটেশন সুবিধা পায়, সেজন্য সুষ্ঠু তদন্ত ও পদক্ষেপ গ্রহণ করা হোক।
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ মোঃ মুরসিদ আহমেদ সিকদার, মোবাইল : 01728 311111
ঢাকা অফিসঃ হোল্ডিং-১৩, লাইন-৬, রোড- ১২, ব্লক-বি, মিরপুর-১১, ঢাকা-১২১৬
ফরিদপুর অফিসঃ মুজিব সড়ক, ফরিদপুর, ই-মেইলঃ [email protected]
Copyright © August, 2020-2025 @ Daily Somoyer Protyasha