হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ২০ লাখ টাকা নিয়ে জেরার মুখে পড়া যশোর মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ টাকার উৎস ঢাকতে চিকিৎসা সরঞ্জাম কেনা শুরু করেছেন। ইতোমধ্যে আইসিইউর পরিবর্তে যশোর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের অপারেশন থিয়েটারের জন্য ডায়াথার্মি মেশিন এসে পৌঁছেছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন যশোর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. হারুন অর রশীদ।
অধ্যক্ষ দাবি করেছেন, অক্সি মিটার ও মনিটরও কেনা হয়েছে। এদিকে অন্য একটি সূত্র বলছে, মেডিকেল কলেজের ১৮জনের নিয়োগ বাণিজ্য ও হাসপাতালের আইসিইউ থেকে অবৈধভাবে আয় হওয়া টাকার অংশ দিয়েই ঐ সকল মলামাল কিনে বিভাগীয় মামলার হাত থেকে রেহাই পাওয়ার চেষ্টা করছেন অধ্যক্ষ প্রফেসর ডা. আবু হাসনাত মোহাম্মদ আহসান হাবিব। এ কাজে তাকে সহযোগিতা করছেন যশোর জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. হারুন অর রশীদ। অধ্যক্ষ ও তত্ত্বাবধায়ক মিলে অবৈধ অর্থকে হালাল করতে শাক দিয়ে মাছ ঢাকার চেষ্টা করছেন।
সূত্র জানায়, গত ১৯ নভেম্বর যশোর মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ২০ লাখ টাকা নিয়ে যশোর থেকে বিমানযোগে ঢাকায় যান। হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছে ইমিগ্রেশন কর্মকর্তাদের জেরার মুখে পড়েন। অনেক দেন দরবার করার পর বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ তাকে ২০ লাখ টাকা ফেরত দেয়। তবে এ বিষয়টি নিয়ে স্বাস্থ্য বিভাগে চাউর হয়, মেডিকেল কলেজের দেড় কোটি টাকা অডিটে আপত্তি মীমাংসার জন্য তিনি বিশ লাখ টাকা উৎকোচ দেয়ার জন্য ঢাকায় যাচ্ছিলেন।
সূত্রটি আরো জানায়, ২০ লাখ টাকা নিয়ে যাওয়ার ঘটনা বিমানবন্দর থেকে ফাঁস হয়ে যাওয়ার কারণে শেষ পর্যন্ত তিনি যশোর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের আইসিইউ ইউনিটের জন্য চিকিৎসা সরঞ্জাম কিনেছেন। হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. হারুন অর রশীদ জানিয়েছেন, ওই ২০ লাখ টাকা ছিল আইসিইউ ইউনিটের। সেখান থেকে তিনি একটি ডায়াথার্মি মেশিন কিনেছেন। এই মেশিনটি শনিবার হাসপাতাল পৌঁছেছে। যা অপারেশন থিয়েটারে দেয়া হয়েছে।
যশোর মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর ডা. আবু হাসনাত মোহাম্মদ আহসান হাবিব দৈনিক 'সময়ের প্রত্যাশা'কে জানান, তিনি চার লাখ ৯০ হাজার টাকা দিয়ে একটি ডায়াথার্মি মেশিন কিনেছেন। যা হাসপাতালে ন্যাস্ত করা হয়েছে। ৯ লাখ টাকা দিয়ে আরো ৫টি পালস অক্সিমিটার, ৩ লাখ টাকা দিয়ে আইসিইউ ইউনিটের জন্য ২টি মনিটর কেনা হয়েছে। এসব চিকিৎসা সরঞ্জাম বুকিং করা হয়েছে। যা আগামী দু- একদিনের মধ্যে হাতে পাওয়া যাবে। ওই ২০ লাখ টাকা আইসিইউ বিভাগ থেকে নেয়া বলে জানিয়েছেন অধ্যক্ষ নিজেই।
অপর একটি সূত্র জানিয়েছে, শুধু আইসিইউ ইউনিট নয়। মেডিকেল কলেজের অনিয়মের টাকাও রয়েছে এর ভেতর। যা গোপনে যশোর থেকে ঢাকায় স্থানান্তর করা হচ্ছিল। তবে বিমানবন্দরের ইমিগ্রেশনে ধরা পড়ার পর টাকাগুলো আত্মসাতে ব্যর্থ হন অধ্যক্ষ। এখন আইসিইউ ইউনিটের টাকা বলে চিকিৎসা সরঞ্জাম কিনে পার হওয়ার চেষ্টা করছেন। চিকিৎসা সরঞ্জাম কেনার বিষয়টিকে 'তুরুপের তাস' হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন সচেতন মহল।
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ মোঃ মুরসিদ আহমেদ সিকদার, মোবাইল : 01728 311111
ঢাকা অফিসঃ হোল্ডিং-১৩, লাইন-৬, রোড- ১২, ব্লক-বি, মিরপুর-১১, ঢাকা-১২১৬
ফরিদপুর অফিসঃ মুজিব সড়ক, ফরিদপুর, ই-মেইলঃ [email protected]
Copyright © August, 2020-2025 @ Daily Somoyer Protyasha