রাজশাহীর তানোরে ব্র্যাকের আলু বীজ কালোবাজারে দিগুণ দামে বিক্রির সময় বিক্ষুব্ধ কৃষকরা আটক করলেও, অভিযুক্ত ব্যবসায়ী বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা না নেওয়ায় কৃষকদের মাঝে ক্ষোভ ও মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে, এমনটি নিশ্চিত করেছেন একাধিক সূত্র।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গত ১৫ নভেম্বর সন্ধ্যায় তানোর উপজেলার চান্দুড়িয়া ইউনিয়নের গাগরন্দ মোড়ে ব্র্যাকের আলু বীজ কালোবাজারে দিগুণ দামে বিক্রির সময় কৃষকরা প্রায় ১৫০ বস্তা আলু বীজ আটক করে। বীজগুলো পরবর্তীতে রনির বাড়িতে জমা রাখা হয়। এরপর কৃষক সোহেল বাদী হয়ে সার বীজ ব্যবসায়ী লালুকে বিবাদী করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এবং কৃষি কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ করেন। কিন্তু অভিযোগ সত্ত্বেও প্রশাসন কোনো কার্যকর পদক্ষেপ না নেওয়ায় কৃষকদের মধ্যে ক্ষোভ আরও বেড়েছে, এবং তারা "ইঁদুর-বিড়াল খেলা" চলছে বলে অভিযোগ করছেন।
এদিকে, ১৫ জন কৃষকের স্বাক্ষরিত অভিযোগে বলা হয়েছে, ১৫ নভেম্বর রাতে তানোর পৌর এলাকার কালীগঞ্জহাটের সার ব্যবসায়ী লালু, ব্র্যাকের এগ্রেড ও বিগ্রেড আলু বীজ গোপনে মজুদ করে রনির বাড়িতে রেখে দেন। এই বীজের এগ্রেড ৩,১৬০ টাকা এবং বিগ্রেড ৩,০৪০ টাকার বিপরীতে কালোবাজারে ৭,০০০ ও ৫,০০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছিল। খবর পেয়ে কৃষকরা এসব বীজ আটক করেন।
কিন্তু আটকের পর থেকে ব্যবসায়ী লালু ও তার লোকজন কৃষকদের হুমকি দিচ্ছেন, এবং কৃষকরা অভিযোগ করছেন যে, বীজগুলো আটকের পর থেকে গোপনে ভাগবাটোয়ারা করা হচ্ছে। এমনকি, কৃষকরা বীজ নিতে গিয়ে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করেও পাচ্ছেন না। কৃষকরা অভিযোগ করেন যে, লালু তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে বাড়তি দামে মেমো কেটে বীজ বিক্রি করলেও প্রশাসন কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না।
এছাড়া, কৃষকরা জানান, লালু’র কাছে সার-বীজ বিক্রির কোনো লাইসেন্স নেই। তবুও তিনি অবৈধভাবে এই ব্যবসা চালাচ্ছেন এবং প্রশাসন এ বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করছে না।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) খায়রুল ইসলামকে অবহিত করা হলে তিনি জানান, "আমি কৃষি অফিসারের সঙ্গে কথা বলেছি। বীজের মালিক এসব বীজ রোপণ করবেন বলে জানিয়েছেন।" তবে, কৃষকরা দাবি করেছেন, তাদের বীজ ফিরিয়ে দেওয়ার বিষয়ে প্রশাসন কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নিচ্ছে না।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাইফুল্লাহ আহম্মেদ জানান, ব্যবসায়ী লালু প্রকল্পের জন্য বীজ এনেছেন এবং কৃষকরা অভিযোগ করছেন যে, বাড়তি দামে বিক্রি করা হচ্ছে। তিনি বলেন, "এখন পর্যন্ত ১১৭ বস্তা আলু বীজ পাওয়া গেছে, যদি এক বস্তা বীজও বিক্রি হয়, তবে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।"