মাগুরা জেলার শ্রীপুর উপজেলার নাকোল ইউনিয়নের রায়নগর গ্রামের মোঃ হারুন মোল্লার কন্যা সুমাইয়া আক্তার সুমি এখন সফল উদ্যোক্তা হিসেবে পরিচিত। তিনি সুমি এগ্রো ফার্ম প্রতিষ্ঠা করে মাশরুম, ট্রাইকো কম্পোস্ট সার, ভার্মি কম্পোস্ট সার (কেঁচো সার) উৎপাদন ও গরু পালন করছেন।
শুক্রবার (৮ নভেম্বর) সকালে সুমি এগ্রো ফার্মে শ্রমিকরা ট্রাইকো কম্পোস্ট সার উৎপাদনের কাজ করছিলেন। তারা প্রতি বস্তায় ৪০-৫০ কেজি উৎকৃষ্ট মানের জৈব সার তৈরি করছে, যা বাণিজ্যিকভাবে বিক্রি করা হয়। ফার্মের মহিলা শ্রমিকরা জানান, "আমরা এখানে কাজ করে ভালোভাবে সংসার চালাচ্ছি।"
উদ্যোক্তা সুমির সফলতা:
সুমি জানান, প্রায় দুই বছর আগে ২০২২ সালে শ্রীপুর উপজেলা কৃষি অফিস থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে ভার্মি কম্পোস্ট সার উৎপাদন শুরু করেন। পরবর্তীতে তিনি ট্রাইকো কম্পোস্ট সার উৎপাদন শুরু করেন, যা বর্তমানে বাণিজ্যিকভাবে বিক্রি হচ্ছে। প্রতি মাসে ৮-১০ টন জৈব সার উৎপাদিত হয়। তিনি বলেন, "এটি শুরু হয়েছিল কৃষি অফিস থেকে পাওয়া প্রশিক্ষণ ও ঋণ দিয়ে।"
সারের উৎপাদন প্রক্রিয়া:
ভালো মানের ট্রাইকো কম্পোস্ট সার তৈরি করতে আড়াই থেকে তিন মাস সময় লাগে। সার তৈরির উপকরণ হিসেবে কলা গাছ, হাঁস-মুরগির বিষ্ঠা, গোবর এবং অন্যান্য প্রাকৃতিক উপকরণ ব্যবহার করা হয়। পরে এই উপকরণগুলি ডিকম্পোস্ট করে সার উৎপাদিত হয়, যা কৃষকদের কাছে বিক্রি করা হয়। সুমি এগ্রো ফার্মের সারের দাম প্রতি কেজি ১৪-১৫ টাকা। এছাড়াও, মাশরুম চাষের মাধ্যমে তিনি দেশের বিভিন্ন স্থানেও তার উৎপাদন পাঠান।
আয় ও ভবিষ্যত পরিকল্পনা:
সুমি এগ্রো ফার্ম থেকে প্রতিমাসে ৮০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকা আয় হচ্ছে এবং খরচ বাদে ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকা আয় হয়। ভবিষ্যতে, তিনি মাগুরা সদরে বড় পরিসরে একটি ফার্ম স্থাপন করার পরিকল্পনা করছেন, এর জন্য ইতোমধ্যে কাঁচামাল সংগ্রহ করা হয়েছে।
মাশরুম ও কেঁচো সার উৎপাদন:
সুমি জানালেন, মাশরুম চাষের জন্য অয়েস্টার, মিল্কি, প্যাডি স্ট্র জাতের মাশরুম উপযুক্ত। তিনি বলেন, "অয়েস্টার মাশরুম শীতকাল উপযুক্ত, আর বাকি দুটো মার্চের পর থেকে চাষের জন্য উপযুক্ত হয়।" মাশরুম চাষের জন্য পলিথিন ব্যাগ, খড় এবং স্পন (মাশরুমের বীজ) প্রয়োজন হয়। এছাড়াও, তিনি কেঁচো সার বা ভার্মি কম্পোস্ট তৈরি করার জন্য বিশেষ পদ্ধতি ব্যবহার করেন।
কৃষি অফিসের প্রশংসা:
শ্রীপুর উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ সালমা জাহান নিপা বলেন, "মাশরুম ও ভার্মি কম্পোস্ট উৎপাদন একটি পরিবেশবান্ধব এবং উন্নত প্রযুক্তি। সুমির সফলতা দেখে আশেপাশের কৃষকরা অনুপ্রাণিত হচ্ছে।"
যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের সহায়তা:
মাগুরা যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ ইলিয়াছুর রহমান বলেন, "সুমি যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর থেকে প্রশিক্ষণ ও ঋণ নিয়ে এখন সফল উদ্যোক্তা হয়েছেন।"
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ মোঃ মুরসিদ আহমেদ সিকদার, মোবাইল : 01728 311111
ঢাকা অফিসঃ হোল্ডিং-১৩, লাইন-৬, রোড- ১২, ব্লক-বি, মিরপুর-১১, ঢাকা-১২১৬
ফরিদপুর অফিসঃ মুজিব সড়ক, ফরিদপুর, ই-মেইলঃ [email protected]
Copyright © August, 2020-2025 @ Daily Somoyer Protyasha