আজকের তারিখ : নভেম্বর ১৮, ২০২৪, ৮:৪৩ এ.এম || প্রকাশকাল : অক্টোবর ২২, ২০২৪, ৮:১৩ পি.এম
তানোরে গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা দেড় লাখ মণ
রাজশাহীর তানোরে চলতি মৌসুমে গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে প্রায় দেড় লাখ মণ। জানা গেছে, দেশে পেঁয়াজের বার্ষিক চাহিদার তুলনায় তিন থেকে চার লাখ মেট্রিক টন কম উৎপাদন হয়। এদিকে সংরক্ষণের সঠিক ব্যবস্থাপনার অভাবেও নষ্ট হয় কিছু পেঁয়াজ। এই ঘাটতি মেটাতে বিদেশ থেকে করতে হয় আমদানি। রবি মৌসুমে অন্য ফসল বাদ দিয়ে পেঁয়াজের আবাদ বাড়ানো সম্ভব নয়, তাই সরকার গ্রীষ্মকাল অর্থাৎ খরিপ মৌসুমে পেঁয়াজ আবাদের কর্মপরিকল্পনা হাতে নিয়েছে। এই পেঁয়াজ চাষ করে ভালো ফলন পাচ্ছেন বরেন্দ্র অঞ্চলসহ তানোরের কৃষকেরা।মসলা জাতীয় ফসল পেঁয়াজ চাষে ঘুরছে অনেক কৃষকের ভাগ্যের চাকা।পেঁয়াজ চাষে কৃষকদের মাঝে আগ্রহ বাড়ছে।
তানোর কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, উপজেলায় খরিপ মৌসুমে দুই ধাপে মোট ৭০০ জন কৃষককে পেঁয়াজ বীজ ও উপকরণ সরবরাহ করা হয়। উপজেলায় প্রায় ৯২ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজ চাষ ও প্রতি হেক্টরে প্রায় ১৬৫ মণ পেঁয়াজ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। সেই সঙ্গে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের কৃষি প্রণোদনা কর্মসূচির আওতায় জমিতে চাষ, সার প্রয়োগসহ সার্বিক বিষয়ে ব্যয় নির্বাহ করতে কৃষকদের ২ হাজার ৮০০ টাকা করে দেওয়া হয়। এরপর চারা রোপণের পর অন্যান্য সহযোগিতা দিয়ে যায় কৃষি বিভাগ। এতে আলোর মুখ দেখতে শুরু করে প্রকল্পটি।
কৃষি বিভাগ জানায়, গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ চাষ বৃদ্ধি করে আমদানিনির্ভরতা কমাতে তারা কাজ করে যাচ্ছে। তাদের সার্বিক সহযোগিতায় উৎপাদিত গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজের আকার, স্বাদ, গন্ধ ও পুষ্টিমান অনেক উন্নত।
উপজেলার কলমা ইউনিয়নের (ইউপি) পেঁয়াজচাষি আব্দুর রহিম বলেন, জমিতে গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজের বীজ বপন করা হয়েছে। গত মৌসুমে এন-৫৩ জাতের পেঁয়াজ ৬ থেকে ৮টিতেই ১ কেজি হয়েছিল। আকারে বড় হওয়ায় বিঘাপ্রতি ২৫ থেক ৩০ মণ পেঁয়াজ হবে বলে আশা করছেন তিনি। সরনজাই ইউনিয়নের (ইউপি) কৃষক মামুনুর রশিদ বলেন, গত মৌসুমে এই সময়ে পেঁয়াজ হবে কি না, তা নিয়ে শঙ্কা ছিল। তবে কৃষি কর্মকর্তাদের সহযোগিতায় ভালো ফলন হয়েছিল।
বাজারে পেঁয়াজের দাম বেশ ভালো ছিল। এবছরেও তিনি গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ চাষ করছেন। শুধু কৃষক আব্দুর রহিম ও মামুনুর রশিদ নন, উপজেলায় এখন গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ চাষে ঝুঁকেছেন অনেকেই। ভালো ফলন পাওয়ায় কৃষকের আগ্রহও বাড়ছে। এবিষয়ে উপজেলা অতিরিক্ত কৃষি কর্মকর্তা বলেন, মসলাজাতীয় ফসল হিসেবে পেঁয়াজের ব্যবহার এক অপরিহার্য উপাদান।বাংলাদেশে বার্ষিক পেঁয়াজের চাহিদা প্রায় ৩৬ লাখ টন, কিন্তু উৎপাদিত হয় প্রায় ৩২ লাখ টন। এ ছাড়া পচনশীল এই ফসল সঠিক সংরক্ষণের ব্যবস্থাপনার অভাবে নষ্ট হয়। এই ঘাটতি মেটাতে বিদেশ থেকে পেঁয়াজ আমদানি করতে হয়। এই সুযোগে অসাধু ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেটের মাধ্যমে দাম বাড়িয়ে দেন।
তিনি আরও বলেন, রবি মৌসুমে অন্য ফসলকে বাদ দিয়ে পেঁয়াজের আবাদ বাড়ানো সম্ভব নয়, তাই সরকার গ্রীষ্মকাল অর্থাৎ খরিপ মৌসুমে পেঁয়াজ আবাদের কর্মপরিকল্পনা হাতে নিয়েছে। পেঁয়াজের আমদানি কমাতে ভবিষ্যতে এই উপজেলায় আরও বেশি পরিমাণ জমিতে এমন পেঁয়াজ চাষ করা হবে।
এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাইফুল্লাহ আহম্মেদ বলেন, ‘এ বছর উপজেলায় প্রায় ৯৩ হেক্টর জমিতে প্রায় দেড় লাখ মণ গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ উৎপাদিত হবে। এ লক্ষ্যে মাঠপর্যায়ে কৃষি অফিসের প্রত্যেক কর্মকর্তা কৃষকদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন। আশা করি, দেশের ঘাটতি মোকাবিলায় এই পেঁয়াজ অভূতপূর্ব অবদান রাখবে।
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ মোঃ মুরসিদ আহমেদ সিকদার, মোবাইল : 01728 311111
ঢাকা অফিসঃ হোল্ডিং-১৩, লাইন-৬, রোড- ১২, ব্লক-বি, মিরপুর-১১, ঢাকা-১২১৬
ফরিদপুর অফিসঃ মুজিব সড়ক, ফরিদপুর, ই-মেইলঃ [email protected]
Copyright © August, 2020-2025 @ Daily Somoyer Protyasha