নড়াইলের নবগঙ্গা নদীর ভাঙনের কবলে পড়ে আতঙ্কিত এলাকাবাসী। ভাঙনের ঝুঁকিতে রয়েছে সড়ক, বাজার, শতাধিক পরিবারের ঘরবাড়ি, মসজিদ, কবরস্থানসহ বিভিন্ন স্থাপনা।
গত ১৫ দিনের অব্যাহত ভাঙনে নড়াইলের কালিয়া উপজেলার বেশ কয়েকটি গ্রাম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। নদীগর্ভে চলে গেছে বসতবাড়ি, ফসলী জমি, কাঁচাপাকা ঘর, গাছপালা এবং অন্যান্য স্থাপনা। এ ছাড়া কালিয়া উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ বারইপাড়া মাহাজন সড়কও ভাঙনের ঝুঁকিতে রয়েছে, যা এলাকার মানুষের জীবিকা ও যোগাযোগ ব্যবস্থার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
শুক্রবার সরেজমিন পরিদর্শনে জানা যায়, কাঞ্চনপুর এলাকায় নদীর তীব্র ভাঙন চলছে। নদীগর্ভে চলে গেছে ঘরবাড়ি, গাছপালা এবং অন্যান্য স্থাপনা। যদি বারইপাড়া মাহাজন সড়ক নদীগর্ভে বিলীন হয়, তাহলে হাজার হাজার একর ফসলী জমি এবং শত শত মাছের ঘের ভেসে যাবে।
কালিয়া উপজেলার বাসিন্দা মোঃ আলেক শেখ বলেন, “আমাদের বাড়ি নদীতে চলে গেছে। মাথা গোঁজার মত এই বাড়িটাই ছিল, সেটিও চলে গেছে। এখন খুব কষ্টে জীবনযাপন করছি।” একই গ্রামের আশরাফ মুক্তার জানান, “আমরা আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছি। এই রাস্তা ভেঙে গেলে আমাদের সবকিছু নদীতে চলে যাবে।”
বসতবাড়ি হারিয়ে দিশেহারা ফুলি বিবি বলেন, “আমার বাড়ি নদীতে চলে গেছে। এখন কোথায় থাকবো, কী করবো কিছুই বুঝতে পারছি না।” তবিবুর শেখ আবেগঘন হয়ে বলেন, “এই বাড়িটা তাও নদীতে চলে গেলে, পরিবার নিয়ে কোথায় থাকবো জানি না।”
ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় ভাঙন রোধে অতীতে জরুরী ভিত্তিতে জিও ব্যাগ ফেলা হয়েছিল, তবে স্থায়ীভাবে বাধ নির্মানের দাবি জানিয়েছেন নদীপাড়ের বাসিন্দারা।
বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন এবং দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। নড়াইল পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী উজ্জ্বল কুমার সেন জানান, “আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে জরুরিভাবে ভাঙন রোধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।”