চট্টগ্রাম নগরীর একটি পূজামণ্ডপে ইসলামী সঙ্গীত পরিবেশনের ঘটনায় সাতজনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। এ ঘটনায় দুইজনকে আটক করেছে পুলিশ।
কোতোয়ালী থানা সূত্র জানায়, জে এম সেন হল পূজামণ্ডপে ইসলামী সঙ্গীত পরিবেশনের ঘটনায় মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদের অর্থ সম্পাদক সুকান্ত বিকাশ মহাজন বাদী হয়ে সাত জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলার আসামিরা হলেন—পরিষদের যুগ্ম সম্পাদক সজল দত্ত, সঙ্গীত পরিবেশনকারী চট্টগ্রাম কালচারাল একাডেমির শিল্পী শহীদুল করিম (৪২), মো. নুরুল ইসলাম (৩৪), আবদুল্লাহ ইকবাল (৩০), রনি (২৮), গোলাম মোস্তফা (৩৬) ও মো. মামুন (২৮)।
চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি) সূত্র জানায়, বৃহস্পতিবার রাতেই চান্দগাঁও ও হালিশহর থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে পূজামণ্ডপে সঙ্গীত পরিবেশনকারীদের দুইজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এরা হলেন— তানজিমুল উম্মাহ মাদ্রাসার শিক্ষক শহীদুল করিম (৪২) ও দারুল ইরফান একাডেমির শিক্ষক মো. নুরুল ইসলাম (৩৪)। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানান, পূজা উদযাপন পরিষদের যুগ্ম সজল দত্তের আমন্ত্রণে তারা সেখানে যান এবং পূজার অনুষ্ঠানে একটি ইসলামিক গান ও একটি বাউল গান পরিবেশন করেন। তবে যার আমন্ত্রণে তারা সেখানে সঙ্গীত পরিবেশন করতে যান ঘটনার বিষয়ে সেই সজল দত্তকে কথা বলার জন্য খুঁজে পাওয়া যায়নি বলে জানান সিএমপির উপ-পুলিশ কমিশনার (অপরাধ) রইছ উদ্দিন।
ঘটনার বিষয়ে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের পক্ষ থেকে দেওয়া প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গত ১০ অক্টোবর সন্ধ্যার নগরীর জে এম সেন হল পূজামণ্ডপে আয়োজিত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে পূজা কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সজল দত্ত চট্টগ্রাম কালচারাল একাডেমির একদল শিল্পীকে গান পরিবেশনের অনুরোধ করে। তার অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে রাত ৮টায় তাদের ছয়জন শিল্পী অনুষ্ঠানে যান এবং একটি ইসলামিক গান ও একটি বাউল গান পরিবেশন করেন। এর মধ্যে একটি গানের ভাষায় শব্দচয়ন সনাতন ধর্মাবলম্বীদেও ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানে বলে প্রতীয়মান হয়। অনুষ্ঠানে পরিবেশন করা গান সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ঘটনাস্থলে উপস্থিত সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়াসহ উত্তেজনার সৃষ্টি হয়।
মহানগর বিএনপির নিন্দা
চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এরশাদ উল্লাহ ও সদস্য সচিব নাজিমুর রহমান গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে পূজামণ্ডপে গিয়ে ইসলামী সঙ্গীত পরিবেশনের ঘটনাকে অনাকাঙ্ক্ষিতমন্তব্য করে এর নিন্দা জানিয়েছেন।
বিএনপি নেতারা বলেন, জে এম সেন হলে যা ঘটেছে তার জন্য কার দায় কতটুকু, এর পেছনে কোন বিশেষ গোষ্ঠীর অসৎ রাজনৈতিক উদ্দেশ্য ছিল কিনা সেটা খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।