এদিকে গত ১৫ সেপ্টেম্বর উচ্চ বিদ্যালয় থেকে হারানো ফ্রিজ, ল্যাপটপ, মাউস, চার্জার সহকারী শিক্ষক সাইফুল ইসলামের বাড়ি থেকে উদ্ধার করে স্কুলে জমা দিয়েছে শিক্ষার্থীরা। গত ৮ জুন অত্র বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক সাইফুল ইসলামের বিরুদ্ধে ভর্তি জালিয়াতি, প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন ফান্ডের আর্থিক অনিয়ম, পুকুর লীজ, শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অশালীন আচরণ, শিক্ষার্থীদের মোবাইল ভাংচুর, ক্ষমতার অপব্যবহার ও প্রভাব খাটানোর অভিযোগে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়।
নিউজ প্রকাশের পর উপজেলা শিক্ষা কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আয়শা সিদ্দিকা শিক্ষক সাইফুল ইসলামের অনিয়ম খুজতে তিন সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করেন। তদন্ত শেষে কমিটি বিধি বর্হিভুতভাবে সপ্তম শ্রেণীতে শিক্ষার্থী ভর্তির অভিযোগ প্রমানিত হয়েছে বলে প্রতিবেদন দেন। এছাড়াও অভিযুক্ত শিক্ষক সাইফুল প্রধান শিক্ষকে প্রভাবিত করে সুকৌশলে বিভিন্ন অনিয়ম করেছেন বলেও জানান তদন্ত কর্মকর্তারা।
এদিকে বিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা অভিযুক্ত শিক্ষক সাইফুল ইসলামের বিরুদ্ধে দুর্নীতি, ছাত্রদের সঙ্গে অকারনে দুর্ব্যবহার ও সাময়িক সাসপেনশন প্রদান ও ক্লাসে অনুপস্থিতিসহ বিভিন্ন অভিযোগে তার বদলি চেয়ে গত ১৮ আগষ্ট হতে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। তারা রাজশাহী- নওগাঁ আঞ্চলিক মহাসড়ক অবরোধ, উপজেলা পরিষদ কমপ্লেক্স ঘেরাও এবং উক্ত শিক্ষকের বদলি না হওয়া পর্যন্ত ক্লাসরুম বর্জনের মতো কর্মসূচীর মাধ্যমে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছেন। যার ফলে মোহনপুর উপজেলায় দাপ্তরিক কাজকর্মে ব্যাঘাত, মহাসড়কে যানজট এবং শিক্ষাঙ্গনে অস্থিরতা সৃষ্টি হয়েছে। আন্দোলনের তীব্রতার কারনে গত ২০ আগষ্ট উপস্থিত ছাত্রজনতার দাবির মুখে অভিযুক্ত শিক্ষককে বিদ্যালয় হতে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর প্রহরায় উদ্ধার করা হয়েছে। তবে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সুজিত কুমার দেবনাথ অভিযুক্ত শিক্ষকের বদলির বিষয়ে ছাত্রদের আশ্বাস দেওয়ায় বিক্ষুব্ধ ছাত্ররা শ্রেণীকক্ষে ও একাডেমিক কার্যক্রমে ফেরত যায়।কিন্ত্ত গত ১৮ সেপ্টেম্বর থেকে এরিপোর্ট লেখা পর্যস্ত বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত রয়েছেন শিক্ষক সাইফুল ইসলাম।
মোহনপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আয়শা সিদ্দিকা তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন পাওয়ার পর শিক্ষক সাইফুল ইসলামকে অন্যত্র বদলীর সুপারিশ করলেও এখনো তা বাস্তবায়ন না হওয়ায় শিক্ষার্থীদের মাঝে দিন দিন ক্ষোভের সঞ্চার হচ্ছে। ইতিমধ্যে শিক্ষক সাইফুল তার ক্ষমতার প্রভাব বিস্তার করতে বহিরাগতের নিয়ে স্কুলে প্রবেশ করে শিক্ষার্থীসহ শিক্ষকদের দেখে নেওয়ার হুমকি ও সাবেক ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক স,ম আবু হেনা বজলুর রশিদ মুঠোফোনে বর্তমান ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সুজিত কুমার দেবনাথকে মামলায় জড়ানোর ভয় দেখানোয় থানায় অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগী প্রধান শিক্ষক।
শিক্ষক সাইফুল ইসলামের অনিয়ম, দূর্ণীতির বিষয়টি ওসি, ইউএনও, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) থেকে সর্বশেষ বিভাগীয় কমিশনার রাজশাহী পর্যন্ত গড়িয়েছে তাকে অন্যত্র বদলীর সুপারিশ করেন মোহনপুর উপজেলা শিক্ষা কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আয়শা সিদ্দিকা। তবুও অভিযুক্ত শিক্ষক সাইফুল ইসলামের বদলী হয়নি।