সড়ক দুর্ঘটনায় ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) শিক্ষার্থী মনির হোসেনের মৃত্যুর ঘটনায় ক্ষতিপূরণ ও সুষ্ঠু বিচারসহ ৫ দফা দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে শিক্ষার্থীরা।
বৃহস্পতিবার বিকেল সোয়া ৪টার দিকে প্রধান ফটকের সামনে কুষ্টিয়া-খুলনা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন তারা।
তীব্র বৃষ্টি উপেক্ষা করে নিরাপদ সড়কের দাবিতে বিভিন্ন বিভাগের শতাধিক শিক্ষার্থী বিক্ষোভে অংশ নেয়। এসময় তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের কুষ্টিয়া ও ঝিনাইদহ অভিমুখে কাঠের গুড়ি ফেলে রাস্তা আটকে দিলে উভয়দিকে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। প্রায় এক ঘন্টা সড়ক অবরোধ করে রাখেন তারা। পরে শনিবারের মধ্যে ৫ দফা বাস্তবায়নের আল্টিমেটাম দিয়ে তারা রাস্তা ছাড়েন। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে দাবি বাস্তবায়ন না হলে কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারিও দেন তারা।
বিক্ষোভে শিক্ষার্থীরা ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস’, ‘পুলিশের খামখেয়ালি, মানি না মানবো না’, ‘ট্রাফিকের অবহেলা মানি না, মানবো না’, ‘মনির ভাইয়ের রক্ত, বৃথা যেতে দেব না’, ‘আমার ভাই মরলো কেন? প্রশাসন জবাব চাই’সহ বিভিন্ন স্লোগান দেন। এছাড়া ‘ট্রাফিক আইনের বাস্তবায়ন চাই’, ‘অকাল মৃত্যু বন্ধ হবে কবে’, ‘নিরাপদ সড়ক চাই’, ‘মনির হত্যার বিচার চাই’, ‘মনির হত্যার ক্ষতিপূরণ চাই’সহ বিভিন্ন প্লাকার্ড প্রদর্শন করেন তারা।
শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো হলো- সড়ক দুর্ঘটনায় ড্রাইভারসহ দোষীদের শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে, নিরাপদ সড়ক নিশ্চিত করতে হবে, নিহতের পরিবারকে ৫০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে হবে, ট্রাফিক আইন বাস্তবায়ন ও হাইওয়ে পুলিশের খামখেয়ালি আচরণ বন্ধ করতে হবে এবং ক্যাম্পাস থেকে কুষ্টিয়া ও ঝিনাইদহ পর্যন্ত মহাসড়ক সংস্কার করতে হবে।
শিক্ষার্থীরা বলেন, এদেশে সড়ক দুর্ঘটনা রোধে সরকারিভাবে কোনো পদক্ষেপ নিতে দেখা যায় না। সরকারের কাছে দাবি, সড়কের শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনুন। আমরা ট্রাফিক আইনের পুরোপুরি বাস্তবায়ন চাই। বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনের কুষ্টিয়া-খুলনা মহাসড়কের দ্রুত সংস্কার করতে হবে। আমরা মনিরের মতো আর কোনো ফুটন্ত গোলাপ ঝরতে দিতে চাই না। অতিদ্রুত দোষীদের সুষ্ঠু বিচারের মাধ্যমে শাস্তি দিতে হবে।
এ বিষয়ে চৌড়হাস হাইওয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ আকুল চন্দ্র বিশ্বাস বলেন, তাদের ৫ দফা দাবির মধ্যে ৩টি দাবি আমরা পূরণে আমরা সর্বাত্মক চেষ্টা করব। দোষীদের শাস্তির আওয়াতায় নিয়ে আসা, নিরাপদ সড়ক এবং ট্রাফিক আইন বাস্তবায়ন। এছাড়া বাকি ২টি দাবি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ পূরণ করতে পারবে। এ ঘটনায় ইতোমধ্যে ট্রাক এবং সিএনজি চালকের নামে কুমারখালি থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলা নং ১৯, সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮. ধারা ৯৮/১০৫।
ক্ষতিপূরণের বিষয়ে জানতে চাইলে কুষ্টিয়া জেলার ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক শারমিন আক্তার বলেন, এ বিষয়ে আমাদের কাছে এখনো কোন আবেদন আসেনি। সড়ক দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে যদি কেউ ক্ষতি পূরণের বিষয়ে নিয়মানুযায়ী আমাদের কাছে আবেদন জানায় তাহলে আমরা আইনী প্রক্রিয়ায় ব্যবস্থা নেব।