আজকের তারিখ : জুলাই ১২, ২০২৫, ৫:০৬ পি.এম || প্রকাশকাল : অগাস্ট ১৫, ২০২৪, ১০:১৭ পি.এম
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ‘সমন্বয়ক’ পদ নিয়ে দ্বিধা- বিভক্তি

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের যশোরের সমন্বয়ক পদ নিয়ে দ্বন্দ্ব দেখা দিয়েছে। স্থানীয় নেতৃবৃন্দের মধ্যে বৈষম্য তৈরি করা হয়েছে। যশোরের প্রধান সমন্বয়ক দাবি করা রাশেদ খানের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। শিক্ষার্থীদের একাংশের দাবি, কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচি পালন বন্ধ করেছেন রাশেদ খান। তার চারপাশে ধান্দাবাজরা রয়েছে। তাদের উদ্দেশ্যে নিয়েও সন্দেহ রয়েছে। একই সাথে সমন্বয়ক পরিচয় দিয়ে অনেকেই ব্যবসায়ী ও বিভিন্ন মোড়ে মোড়ে চাঁদা তোলা হচ্ছে। তাদের এমন বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের ছাত্র সমাজ দায় বহন করবে না। প্রয়োজনে অভিযুক্তদের বয়কট করবে বলেও হুশিয়ারি দেয়া হয়। বৃহস্পতিবার (১৫ আগস্ট) দুপুরে প্রেসক্লাব যশোর মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলন এই দাবি জানান বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন একাংশের নেতৃবৃন্দ।
অভিযোগের বিষয়ে রাশেদ খান বলেন, আমি কখনো নিজেকে প্রধান সমন্বয়ক দাবি করিনি। একজন স্বেচ্ছাসেবক হিসেবেই মাঠে আছি। আমরা ১৪ আগস্ট ছাত্র মহাসমাবেশ করেছি। অনেক মানুষের সমাগম হয়েছে। এরপর ১৫ আগস্টের কর্মসূচি পালনের যৌক্তিতা নেই। রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে আলোচনা না করেই মাসুম বিল্লাহ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। আজ দিনের বেলায় ঢাকায়ও কর্মসূচি পালিত হয়নি।
রাশেদ খান আরো বলেন, ছাত্র আন্দোলনে খুনিদের বিচারের দাবিতে আমরা সোচ্চার আছি। ছাত্র মহাসমাবেশ করেছি। কর্মসূচি পালন করছি। কিন্তু কোন রাজনৈতিক দলের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করবে না বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন। একাংশের স্বেচ্ছাসেবকরা কোন কোন রাজনৈতিক দলের এজেন্ডা বাস্তবায়নে ব্যবহৃত হচ্ছেন। আমরা তাদের সঙ্গে নেই। এজন্য তারা অভিযোগ করছেন।
সংবাদ সম্মেলনে যশোর সরকারি এমএম কলেজের (মাইকেল মধুসূদন কলেজ) শিক্ষার্থী মাসুম বিল্লাহ বলেন, রাশেদ খান প্রথম থেকেই নিজেকে প্রধান সমন্বয়ক দাবি করে আসছেন। কিন্তু কেন্দ্র থেকে কোন কমিটি দেয়া হয়নি। ফলে কেউ প্রধান সমন্বয়ক, অন্যতম সমন্বয়ক, সমন্বয়ক দাবি করার সুযোগ নেই। আমরা সবাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মী। কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচি পালনে আমরা শুধু সময় ও স্থান নির্ধারণ করে পালন করেছি। কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচি যথাযথভাবে পালন হচ্ছিল।
এজন্য রাশেদ খানের নির্দেশনা মেনে আসছিলাম। কিন্তু আজকের (১৫ আগস্ট) অবস্থান কর্মসূচি তিনি বন্ধ করেছেন। তার মত ভিন্ন। একজন স্বঘোষিত প্রধান সমন্বয়ক দাবি করা ব্যক্তি কিভাবে কেন্দ্রের বিরোধিতা করেন ? কেন্দ্রের সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করা মানেই বেঈমানি করা হবে। কর্মসূচি পালন না করার জন্য নানাভাবে প্রভাবিত করা হয়েছে। যে বা যারা কেন্দ্রের সিদ্ধান্ত মানবে না, তাকে বয়কট করবে ছাত্রসমাজ। আমরা কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচি পালন করেই যাবো।
এক প্রশ্নের জবাবে মাসুম বিল্লাহ বলেন, আমাদের কাছে অনেক জায়গা থেকে ফোন আসছে। ছাত্র সমাজের নামে তাদের কাছে চাঁদা দাবি করা হচ্ছে। বিভিন্ন অনুষ্ঠানের নাম করে এসব চাঁদা নেয়া হচ্ছে। সমন্বয়ক দাবি করে কেউ অনৈতিক সুবিধা দাবি করলে ধরে বেঁধে রেখে পেটাবেন। এরপর আমাদের ডাকবেন। আইনশৃংখলা বাহিনীর হাতে তাদের তুলে দিবো। মনে রাখবেন কেন্দ্রের বাইরে কোন সমন্বয়ক নেই।
সংবাদ সম্মেলনে যশোর সরকারি মহিলা কলেজের শিক্ষার্থী জেসিনা মুর্শিদা প্রাপ্তি বলেন, কেন্দ্র থেকে সপ্তাহ ব্যাপ্তি অবস্থান কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে। সেই ঘোষণার আলোকে বুধবার মহা ছাত্রসমাবেশ হয়েছে। আজ (বৃহস্পতিবার) অবস্থান কর্মসূচি পালন করার কথা। কিন্তু রাশেদ খানসহ আরো কয়েকজন সমন্বয়ক আমাদের সঙ্গে কর্মসূচি নিয়ে কোন আলোচনা করেননি। গভীর রাত পর্যন্ত অপেক্ষা করেছি, কিন্তু কর্মসূচি সম্পর্কে আমাদের অবহিত করেননি। রাশেদ খান তার একক সিদ্ধান্তে কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচি বন্ধ ঘোষণা করেছেন।
খবরটি শোনার পর কেন্দ্রে যোগাযোগ করেছি, তারা স্পষ্ট বলেছেন সারাদেশে কোথাও কর্মসূচি স্থগিত করা হয়নি। একই কর্মসূচি যে বা যারা বন্ধ করবে তাদের বয়কট করবেন। আমরা কাউকে বয়কট করতে চাই না। কিন্তু কর্মসূচি কেন্দ্র বন্ধ হলো, তার কোন যুক্তি দেখাতে পারেননি। উল্টো আমাদের কাছে কৈফিয়ত চেয়েছে কেন কর্মসূচি দিলাম। সংবাদ সম্মেলনে সরকারি এমএম কলেজ (মাইকেল মধুসূদন কলেজ) যশোর, সরকারি মহিলা কলেজ ও সরকারি সিটি কলেজ যশোরের শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ এ. এস.এম
মুরসিদ (লিটু সিকদার)। মোবাইল: 01728 311111
ঢাকা অফিসঃ হোল্ডিং-১৩, লাইন-৬, রোড- ১২, ব্লক-বি, মিরপুর-১১, ঢাকা-১২১৬।
ফরিদপুর অফিসঃ মুজিব সড়ক, ফরিদপুর। মোবাইলঃ ০১৭১১ ৯৩৯৪৪৫
Copyright © August 2020-2025 @ Daily Somoyer Protyasha