পরিবেশ রক্ষা ও নানা শুভ কাজ করে ইতিমধ্যে সবার নজর কেড়েছেন তিনি। প্রতিদিন ঘুম থেকে উঠে একটি শুভকাজ দিয়ে তার যাত্রা শুরু হয়। আর এই ভাবে চলছে তার দীর্ঘ সময়। করোনার এই মহামারির সময়েও তিনি এবারের পরিবেশ দিবসকে ভূলে যায়নি। তাইতো আজও তিনি শহর ও শহরতলীর বিভিন্ন জায়গায় রোপন করেছে সুপারির চারা। কথা বলছি ফরিদপুরের শহরের দক্ষিণ টেপাখোলার স্কুল শিক্ষক নুরুল ইসলাম স্যারের কথা।
তিনি রাশায়ন বিভাগে পড়াশুনা শেষ করে সরকারি স্কুলে চাকরিতে যোগদেন। বৈবাহিক জীবনে তার স্ত্রী ও এক ছেলে, এক কণ্যার পিতা। তার বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রহমান ফকির।
পরিবেশ ও প্রকৃতি এবং নদীরক্ষায় রাধাচুড়া ও কৃষ্ণচুড়ার গাছ রোপন, খেঁজুর, সুপারি ও তালবীজ রোপন এবং জনসচেতনতা বাড়াতে নদীতে প্লাস্টিক বর্জ্য না ফেলার আহবান সম্বলিত বিলবোর্ড স্থাপনও তার ভালো কাজের দৃষ্টান্ত।
বৃক্ষ প্রেমি নুরুল ইসলাম জানান, দেশকে ভালবাসার থেকেই গাছ রোপনের উৎসাহ পাই। আমি সুযোগ পেলেই এই কাজে মনোনিবেশ করি। ২০১৯ সালের প্রথম দিক থেকে বৃক্ষ রোপনের কাজ শুরু করি। তিনি জানান, ওই বছরেরই ফরিদপুর শহর ও শহরতলীর বিভিন্ন রাস্তার পাশে কয়েক হাজার তাল গাছ, রাধাচুড়া,কৃষ্ণচুড়া রোপন করি।
২০২০ সালে খেজুরের বীজ, ৭শ তাল বীজ, কয়েকশ সুপারির গাছ ও কৃষ্ণচুড়া গাছ রোপন করেছি। তিনি বলেন, আমি স্বপ্ন দেখি শহর জুড়ে (অলিগলি) একদিন লাল সবুজের খেলা হবে। দূর থেকে মানুষ দেখতে আসবে। এই কারনে কৃষ্ণচুড়া বেশি রোপন করা হয়েছে।
ফরিদপুর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের রশাসনের এই শিক্ষক বৃক্ষ রোপনের পরিবারের সকল সদস্যেদের থেকে বেশ উৎসাহ পাই মন্তব্য করে বলেন, আমার স্ত্রী-সন্তানরা সুযোগ পেলেই আমাকে পরামর্শ দেয় কখন কোথায় কি গাছ রোপন করা যায়।
বৃক্ষ প্রেমিক নুুরুই ইসলাম প্রসঙ্গে শিক্ষাবিদ ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব প্রফেসর আলতাফ হোসেন বলেন, ‘মানুষের ভালোবাসা পাওয়া খুব সহজ কাজ নয়। অনেক কিছুর বিনিময়ে এটি অর্জন করতে হয়। বৃক্ষপ্রেমিক নূরুল ইসলাম শহরের মানুষের অকুণ্ঠ ভালোবাসার অমূল্য সেই স্থানটিই পেয়ে চলেছেন।
প্রচারবিমুখ এই যুবক প্রতিমাসের কার্যক্রমের পাশাপাশি নীরবে আরো কিছু সাহায্য-সহযোগিতা করেন। তার ভালো কাজগুলো দেখেই বোঝা যায় যে, প্রবল আন্তরিকতা আর বুকের ভেতরের ভালোবাসার আকাশ ছাড়া এগুলো সম্পন্ন করা সম্ভব নয়। ন‚রুল ইসলাম তা পেরেছেন এবং করে দেখিয়েছেন। তাই ফরিদপুরের মানুষের হৃদয়ে সুউচ্চতায় অবস্থান করতেও পেরেছেন।’
শৈশব থেকেই গরিব ও সাধারণ মানুষের প্রতি অগাধ ভালোবাসা নুরুলের, বৃক্ষের প্রতিও প্রবল আসক্তি। যেখানেই বেড়াতে যেতো, সেখান থেকেই বিভিন্ন গাছের চারা এনে বাড়ির আঙিনায় লাগাতো। জানালেন তার পিতা বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রহমান ফকির।
শিক্ষক নুরুল ইসলাম বলেন, ‘আমি একজন ক্ষুদ্র মানুষ। কেউরই একার পক্ষে কিছুই করা সম্ভব নয়। আত্মতৃপ্তি থেকে মানুষকে সাহায্য আর প্রকৃতিতে সবুজায়নের চেষ্টা করে যাচ্ছি, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় তালগাছ রোপণ করেছি। সবাই মিলে ভালো ভালো কাজ করলে দেশে দারিদ্র্য কমে যাবে, প্রকৃতি ফিরে পাবে তার নিজস্ব রূপ, দ‚ষণ কমে যাবে।
বঙ্গবন্ধুর জন্ম শতবার্ষিকী উপলক্ষ্যে এ বছরের সব কাজ জাতির পিতার উদ্দেশ্যে উৎসর্গ করেছেন বলেও জানান মানুষ গড়ার এই কারিগর।
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ মোঃ মুরসিদ আহমেদ সিকদার, মোবাইল : 01728 311111
ঢাকা অফিসঃ হোল্ডিং-১৩, লাইন-৬, রোড- ১২, ব্লক-বি, মিরপুর-১১, ঢাকা-১২১৬
ফরিদপুর অফিসঃ মুজিব সড়ক, ফরিদপুর, ই-মেইলঃ [email protected]
Copyright © August, 2020-2025 @ Daily Somoyer Protyasha