কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার জগন্নাথপুর ইউনিয়নের ৯১ নম্বর তারাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের আশপাশে গড়ে উঠেছে বসতি। কিন্তু পানি বের হওয়ার পথ নেই। বৃষ্টি হলেই জমে যায় বিদ্যালয় মাঠে পানি। পুরো বর্ষা মৌসুমজুড়েই থাকে হাঁটুপানি। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পানি শুকালেও বছরের অন্তত ছয় মাস থাকে স্যাঁতসেঁতে কাদা ও পানি। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
এলাকাবাসী জানান, দীর্ঘ ৩০ বছর ধরে বিদ্যালয়ে মাঠে এমন জলাবদ্ধতা। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে প্রতিবছর লিখিত অভিযোগ দিয়েও কোনো কাজ হয়নি । ফলে বন্ধ রয়েছে বিদ্যালয়ের সমাবেশ (অ্যাসেম্বলি)। চলাচল, খেলাধুলাসহ নানান কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। পানি অপসারণে দ্রুত কার্যকারী পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানান তারা।
কুমারখালী উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান জানান, লিখিত আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে মাটি ভরাটের জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরে বরাদ্দ চেয়ে চিঠি দেওয়া অনেক বার । তবে বরাদ্দ না পাওয়ায় জলাবদ্ধতা নিরসন করা সম্ভব হয়নি।
গতকাল সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার তারাপুর বাজার সড়ক ঘেঁষে ৯১ নম্বর তারাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি অবস্থিত। বিদ্যালয়ের চারপাশ পাকা দেওয়াল দিয়ে ঘেরা। দেওয়াল ঘেঁষে গড়ে উঠেছে বসতি। আর বিদ্যালয়ের পুরো মাঠে হাঁটুসমান পানি জমে আছে। চলাচলের জন্য ইট পেতে সরু পথ তৈরি করা হয়েছে। শিক্ষার্থীরা পানি মাড়িয়ে চলাচল করছে। বিদ্যালয়ের ওয়াশ ব্লকের ভেতরেও জমে আছে পানি।
এ সময় চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র জমির বলে, বৃষ্টি হলেই বিদ্যালয়ে মাঠে হাঁটুসমান পানি জমে যায়। আমরা চলাচল ও খেলাধুলা করতে পারি না। পানিতে পড়ে গিয়ে অনেকেরই বই, জামা-কাপড় নষ্ট হয়ে যায়।
একই শ্রেণির খুশিয়ারা ও মাকছুদা খাতুন বলে, পানি মাড়িয়ে চলাচল করলে ঘা, চুলকানিসহ নানান রোগ হয়। সেজন্য অনেকেই বিদ্যালয়ে আসতে চায় না।
বিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, প্রায় ৪২ শতাংশ জমির ওপর ১৯৭৪ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় ৯১ নম্বর তারাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি। বর্তমানে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ২০৬ জন। শিক্ষক রয়েছেন ছয়জন। তাদের মধ্যে একজন সহকারী শিক্ষক সড়ক দুর্ঘটনায় এক পা হারিয়েছেন। জলাবদ্ধতার কারণে তিনি বিদ্যালয়ে আসতে পারেন না।
সহকারী শিক্ষক মুসলিমা খাতুন বলেন, দিনে দিনে বিদ্যালয়ের চারদিকে বসতি গড়ে উঠেছে। পানি বের হওয়ার কোনো পথ নেই। সেজন্য বছরে ছয় মাস কাদা-পানি জমে থাকে। এতে বন্ধ রয়েছে সমাবেশ, খেলাধুলাসহ নানান কাজ। দেখার কউ নেই।
২২ বছর ধরে বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করে আসছেন আলপনা রানী ঘোষ। তিনি জানান, যোগদানের পর থেকেই তিনি দেখছেন পুরো বর্ষা মৌসুমে মাঠে হাঁটুসমান পানি থাকে। আর অন্যান্য সময় থাকে কাদা-মাটি। এতে চরম ভোগান্তি পোহাচ্ছেন সবাই।
জলাবদ্ধতার কারণে চরম ভোগান্তির কথা স্বীকার করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এস এম মিকাইল ইসলাম। তিনি বলেন, সরকারিভাবে বা স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে দ্রুত সমস্যার সমাধান করবেন।
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ মোঃ মুরসিদ আহমেদ সিকদার, মোবাইল : 01728 311111
ঢাকা অফিসঃ হোল্ডিং-১৩, লাইন-৬, রোড- ১২, ব্লক-বি, মিরপুর-১১, ঢাকা-১২১৬
ফরিদপুর অফিসঃ মুজিব সড়ক, ফরিদপুর, ই-মেইলঃ [email protected]
Copyright © August, 2020-2025 @ Daily Somoyer Protyasha