রাজধানীতে যে সিএনজিচালকের ছয় টুকরা লাশ উদ্ধার হয়েছে, তাঁকে জুসের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে তাঁরই এক স্ত্রী হত্যা করেছিলেন বলে পুলিশ জানিয়েছে।
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ বলছে, পারিবারিক কলহ, টাকাপয়সার ভাগ-বাঁটোয়ারা এবং একাধিক বিয়েকে কেন্দ্র করে ময়না মিয়াকে গত শনিবার রাতে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেন তাঁর প্রথম স্ত্রী ফাতিমা বেগম। এরপর শরীরকে ছয় টুকরা করেন।
শরীরের মূল অংশ একটি নীল রঙের পানির ড্রামে এবং চার হাত-পা একটি কাপড়ের ব্যাগে ঢোকান। রিকশায় করে সেগুলো মহাখালী কাঁচাবাজার ও বাসস্ট্যান্ড এলাকায় ফেলে দেন। আর খণ্ডিত মাথা ফেলেন বনানী ১১ নম্বর ব্রিজের পূর্বপ্রান্তে গুলশান লেকে।
ময়না মিয়ার লাশের খণ্ডাংশ অজ্ঞাতপরিচয় হিসেবে প্রথমে উদ্ধার করে তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল পুলিশ। এরপর সিআইডির ফরেনসিক বিভাগ হাতের ছাপ দিয়ে জাতীয় পরিচয়পত্র ধরে তাঁর পরিচয় শনাক্ত করে। ময়না মিয়ার বাড়ি কিশোরগঞ্জ জেলা সদরের উত্তর বৌলাই। সেখানে থাকা তাঁর দ্বিতীয় স্ত্রীর সঙ্গে কথা বলে ময়না মিয়া কয়েক দিন ধরে মহাখালীর কড়াইল বস্তিতে তাঁর প্রথম স্ত্রীর সঙ্গে থাকছিলেন।
প্রথম স্ত্রী ফাতিমা কীভাবে স্বামীকে হত্যা করেছিলেন, সেই বিবরণ মঙ্গলবার ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের এক সংবাদ সম্মেলনে তুলে ধরা হয়। সেখানে বলা হয়, জুসের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে দুই দফায় ময়নাকে খাইয়ে নিস্তেজ করে রাখেন ফাতিমা।
এরপর ওড়না দিয়ে তাঁর দুই হাত শরীরের সঙ্গে বেঁধে ফেলেন এবং মুখ স্কচ টেপ দিয়ে আটকে দেন। ময়না মিয়ার বুকের ওপর বসে স্টিলের চাকু দিয়ে ফাতিমা যখন তাঁকে হত্যা করতে যান, তখন ধস্তাধস্তি করে ময়না মিয়া তাঁর হাত খুলে ফেলতে সক্ষম হন। কিন্তু শেষমেশ তিনি নিজেকে রক্ষা করতে পারেননি।
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের গুলশান বিভাগের উপকমিশনার মশিউর রহমান গণমাধ্যমকে বলেন, ময়না মিয়াকে হত্যার পর ফাতিমা বেগম স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যান। আশপাশের কেউ বিষয়টি টেরও পাননি। সোমবার সকালবেলা যথারীতি তিনি নিজের কর্মস্থল বনানী ৪ নম্বর রোডের একটি ইলেকট্রনিক যন্ত্রপাতির কোম্পানি কার্যালয়ে যান। সেখান থেকেই তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
ময়না মিয়ার দ্বিতীয় স্ত্রী নাসরিন আক্তার সোমবার রাতে বনানী থানায় মামলা করেছেন। গোয়েন্দা পুলিশ আজ মঙ্গলবার ফাতিমাকে আদালতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ডের আবেদন করে। আদালত পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন।
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ মোঃ মুরসিদ আহমেদ সিকদার, মোবাইল : 01728 311111
ঢাকা অফিসঃ হোল্ডিং-১৩, লাইন-৬, রোড- ১২, ব্লক-বি, মিরপুর-১১, ঢাকা-১২১৬
ফরিদপুর অফিসঃ মুজিব সড়ক, ফরিদপুর, ই-মেইলঃ [email protected]
Copyright © August, 2020-2025 @ Daily Somoyer Protyasha