কাল বুধবার (৫জুন) বাঘা উপজেলা পরিষদ নির্বাচন। এবার উপজেলার ভোটে, আলাদা করে দিয়েছে একই দলের চার সহযোদ্ধার প্রতিদ্ব›দ্বী হয়ে ওঠা। সেই লড়াইও আবার নতুন রকমের। স্থানীয় ভোটার ও দল নিরপেক্ষ রাজনৈতিক ব্যক্তিরা বলছেন, রাজনীতির বিভেদে সংসদ নির্বাচনের রেশ ধরে গুরু-শিষ্যে’, সভাপতি-সম্পাদকের জম্পেশ এ লড়াই ‘দলীয় বিজয়ী এমপি বনাম পরাজিত স্বতন্ত্র এমপি’ প্রার্থীর সমর্থকদের বলে মনে হচ্ছে।
এবার চেয়ারম্যান পদে মখোমুখি হচ্ছেন উপজেলা পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান ও রাজশাহীর জেলা কমিটির যুগ্ন সাধারন সম্পাদক এ্যাডভোকেট লায়েব উদ্দীন লাভলু (মোটরসাইকেল) ও আওয়ামী সেচ্ছাসেবকলীগের জেলা কমিটির সভাপতি, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মোঃ রোকনুজ্জামান রিন্টু (আনারস)।
ভাইস চেয়ারম্যান পদে উপজেলা যুবলীগের সভাপতি মোঃ কামরুজ্জামান নিপ্পন (বই), উপজেলা যুবলীগের সাধারন সম্পাদক বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান মোঃ আব্দুল মোকাদ্দেস (টিয়া পাখী), হাফেজ মাওলানা মেহেদী হাসান মিনার (টিউবওয়েল)।
মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান ও উপজেলা মহিলা আ’লীগের সভাপতি ফাতেমা খাতুন লতা (কলস), উপজেলা বিএনপির আহŸায়ক কমিটির সদস্য ও সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ফারহানা দিল আফরোজ রুমি (প্রজাপতি), উপজেলা মহিলা আ’লীগের সাবেক সাধারন সম্পাদক রিনা খাতুন (ফুটবল)।
লায়েব উদ্দীন-রোকনুজ্জামানের ‘মধুর’ সম্পর্কের কথা জানেন বাঘার অনেকেই। লাভলুর হাত ধরে ছাত্ররাজনীতি থেকে বেড়ে উঠা রিন্টুর। ২০১৯ সালের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্ব›িদ্বতায় চেয়ারম্যান হয়েছিলেন লাভলু। সেই সময় তার সাথেই ছিলেন রিন্টু। তাদের মতো মধুর সম্পর্কের কথা জানা গেছে, কামরুজ্জামান-মোকাদ্দেসের বেলাতেও।
জানা যায়, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটে দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে আওয়ামী লীগ দলীয় প্রার্থী ও স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষে নির্বাচনে অংশ নেয় স্থানীয় আ’লীগ নেতা কর্মীরা। সেই ভোটে দলীয় প্রার্থীর পক্ষে ছিলেন রোকনুজ্জামান ও কামরুজ্জামান। স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষে ছিলেন লায়েব উদ্দীন ও মোকাদ্দেস। এবার উপজেলা পরিষদ নির্বাচনেও বিভক্ত হয়ে দুই বলয়ে, দুই পথে হাটছেন নেতাকর্মীরাও। ‘চেনা মাঠে’ লড়াইয়ে কিছু সুবিধা পাচ্ছেন লায়েব উদ্দীন ও মোকাদ্দেস। রোকনুজ্জামান-কামরুজ্জামান যেহেতু ‘মাঠে নতুন’, তাই স্থানীয় আ’লীগ নেতাদের উপর অনেকটাই ভর করে চলতে হচ্ছে তাদের।
গত সংসদ নির্বাচনের ফল বিশ্লেষনে জানা গেছে, বাঘা উপজেলায় স্বতন্ত্র প্রার্থীর চেয়ে ১৮,৩৪৩ ভোট বেশি পেয়েছিল আ’লীগ দলীয় প্রার্থী। এবার কোন পথে হাটবেন ভোটাররা? এমন প্রশ্নে কয়েকজন ভোটারের সাথে কথা বললে, দলীয় বিভক্তির কারণে নাম প্রকাশ না করার শর্তে তারা জানান, এবার দলীয় প্রতীক নাই। তাই কারো কথায় নয়, নিজেরা বুঝে শুঝে যাকে যোগ্য মনে
হবে তাকেই ভোট দিবেন। সেক্ষেত্রে কে কার? বোঝা মুশকিল। আওয়ামী লীগ স্থানীয় পদধারী নেতারা রোকনুজ্জামানের পক্ষে থাকলেও অনেকে গোপনে সমর্থন দিচ্ছেন লায়েব উদ্দীনকে।
আনুষ্ঠানিক প্রচার শুরুর পর ঘটেছে পক্ষ বদলের ঘটনা। তবে অস্তিতের সেই লড়াইয়ে জয়ের হাসি হাসবে কে? নতুন নাকি পুরাতন? জয় পরাজয়ের সেই আসল কথা বলবে ভোটাররা।
লাভলু জানান, গত ৫ বছরে চেয়ারম্যান হিসেবে সাধারণ মানুষের পাশে থেকে ভালো কিছু করার চেষ্টা করেছি। এবার ভোটাররা মূল্যায়ন করবেন বলে আশা তার।
রিন্টু বলেন, মানুষের ভাল কিছু করতে হলে একটা প্লাটফর্ম লাগে। সেই সুবাধেই এবার প্রথম উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অংশ
গ্রহন করেছি। ভোটারসহ দলীয় লোকজনের সমর্থন নিয়ে জয়ী হবেন বলে আশা তার।
নিরুৎতাপ নির্বাচনে, ভোটার উপস্থিতি বাড়ানোর কৌশল হিসেবে বিএনপি-জামায়াত সমর্থিত ভোটারদের টানার চেষ্টা করছেন প্রার্থীরা। সব প্রার্থীরাই নিজেকে সৎ, যোগ্য ও উন্নয়নের প্রতিশ্রæতি দিয়ে মেহনতি মানুষের পক্ষে কাজ করার কথা বলে প্রচারণা
চালিয়েছেন। ২টি পৌরসভা ও ৭টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত বাঘা উপজেলায় মোট ভোটার সংখ্যা- ১,৬৫,৬৬৩।পুরুষ-৮৩,০০৭ ও মহিলা-৮২,৬৫৬।
সহকারি রির্টানিং অফিসার ও উপজেলা নির্বাহি অফিসার তরিকুল ইসলাম জানান, কাল বুধবার সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত ৬৯টি কেন্দ্রে বিরতিহীনভাবে ভোট নেওয়া হবে। ৬৯ জন প্রিজাইডিং অফিসার, ৪৩০ জন সহকারি প্রিজাইডিং অফিসার, ৮৬০ জন পোলিং অফিসার ভোট গ্রহন করবেন। আইন শৃঙ্খলা রক্ষায় পুলিশ ও আনছার মিলে ১ হাজার ১২২ জন, ১৩ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, ৪ প্লাটুন বিজিবি ও র্যাব দায়িত্ব পালন করবেন। আজ মঙ্গলবার (৪ জুন) কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসারকে ভোট গ্রহনের সরাঞ্জম বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে।
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ মোঃ মুরসিদ আহমেদ সিকদার, মোবাইল : 01728 311111
ঢাকা অফিসঃ হোল্ডিং-১৩, লাইন-৬, রোড- ১২, ব্লক-বি, মিরপুর-১১, ঢাকা-১২১৬
ফরিদপুর অফিসঃ মুজিব সড়ক, ফরিদপুর, ই-মেইলঃ [email protected]
Copyright © August, 2020-2025 @ Daily Somoyer Protyasha