ফরিদপুর-৪ আসনের সংসদ সদস্য মুজিবুর রহমান চৌধুরী নিক্সন এর বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করেছেন সদরপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান প্রার্থী শহিদুল ইসলাম বাবলু। আজ সোমবার বেলা ১১ টায় ফরিদপুর প্রেসক্লাবের অ্যাডভোকেট শামসুদ্দিন মোল্লা মিলনায়তনে উক্ত সংবাদ সম্মেলন করেন।
প্রেসক্লাবের সভাপতি কবিরুল ইসলাম সিদ্দিকীর সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল ইসলাম পিকুল এর সঞ্চালনায় এ সময় প্রেস ক্লাবের সদস্যবৃন্দ এবং বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যানের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ইশতিয়াক আরিফ, সদরপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহবায়ক আবু আলম রেজা, সিনিয়র সহ-সভাপতি মোঃ ফরহাদ মিয়া, সদস্য কাজি কুদ্দুসুর রহমান, সাবেক স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি ইসমাইল হোসেন সদরপুর ডিগ্রী কলেজের সাবেক ভিপি ইয়াকুব আলী মোল্লা প্রমুখ।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন উপজেলা চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী শহিদুল ইসলাম বাবলু।
তিনি তার লিখিত বক্তব্যে জানান সদরপুর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আমার প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থী কাজী শফিকুর রহমান ও তার নেতা বর্তমান মাননীয় সংসদ সদস্য মুজিবুর রহমান নিক্সন চৌধুরী। নির্বাচনের সুন্দর পরিবেশকে ভন্ডুল করার উদ্দেশ্য তফশীল ঘোষণার পর থেকেই তার নিজ বাসভবনে অবস্থান করে তার সমর্থিত চেয়ারম্যান প্রার্থী কাজী শফিকুর রহমানের পক্ষে অত্যন্ত সুকৌশলে নির্বাচনী কর্মকান্ড পরিচালনা করে যাচ্ছেন।
তিনি বিভিন্ন ইউনিয়নের নেতাকর্মীদের তার বাড়ীতে ডেকে নিয়ে তাদের সাথে নির্বাচন সংক্রনন্ত মিটিং করছেন, অর্থ প্রদানসহ কাজী শফিকুর রহমানের পক্ষে ভোট দেওয়ার নির্দেশ প্রদান করছেন। যা আচরণবিধির ১৪ ধারার সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। বিষয়গুলো আমি একাধিকবার রিটার্নিং অফিসারসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে লিখিত ও মৌখিকভাবে অভিযোগ আকারে অবহিত করেছি। মাননীয় সংসদ সদস্য তার কর্মকান্ড অব্যাহত রেখেছেন। প্রতিদিন নানা ভাবে আমার কর্মী সমর্থকদের উপর ভয়-ভীতি প্রদর্শন, মিথ্যা মামলার হুমকি দিয়ে আসছেন। যা নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশের প্রতিবন্ধকতা বলে মনে করছি। এমনকি আমাকে মোবাইল ফোনে ও লোকজনের মাধ্যমে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াতে মানসিকভাবে বল প্রয়োগ করছেন। গত ২১/০৫/২০২৪ইং তারিখ মঙ্গলবার সকাল আনুমানিক ১০.০০ টায় মাননীয় সংসদ সদস্য আমার নিজ বাসভবনে প্রবেশ করে শতশত লোকের মধ্যে থেকে তার দলবল নিয়ে আমাকে অস্ত্রের মুখে তার বাসভবনে তুলে নিয়ে যায়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে অস্ত্রের মুখে আমাকে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর কথা বলতে বাধ্য করেন। আমি আমার বাড়ীতে ফিরে আসলে হাজার-হাজার জনতার অনুরোধে আমি নির্বাচন করতে ইচ্ছা পোষণ করি।
উল্লেখ্য গত ২৫/০৪/২০২৪ ইং তারিখ মাননীয় সংসদ সদস্যের বাসভবনে নির্বাচনী সভায় আমাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন এবং উপজেলার ৬৮টি ভোট কেন্দ্রে আমার কোন এজেন্ট রাখবেন না বলে হুমকি প্রদর্শন করেন। বক্তব্যের এক পর্যায়ে আমি একজন বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান হওয়া সত্ত্বেও আমাকে যারজ সন্তান বলে আখ্যায়িত করেন। পাশাপাশি গত ২৪/০৫/২০২৪ ইং তারিখ শুক্রবার সকাল ১১.০০ টায় উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভায় জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক উপস্থিত হয়ে আমার পক্ষে আনারস মার্কায় ভোট প্রার্থনা করায় জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহ মোঃ ইসতিয়াক আরিফ-কে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন ও সদরপুর উপজেলায় প্রবেশ করলে তার গাড়ি ভাংচুরসহ শারীরিক ভাবে লাঞ্চিত করার নির্দেশ প্রদান করেন। আমি এর তীব্র নিন্দা ও বিচার দাবী করছি। মাননীয় সংসদ সদস্যের বাসায় নির্বাচনী সভায় কৃষ্ণপুর ইউনিয়ন সাবেক চেয়ারম্যান বিল্লাল ফকির, চরমানাইর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম, দিয়ারা নারিকেল বাড়িয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন সরদার, চর নাসিরপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রোকন উদ্দিন মোল্যা তাদের বক্তব্যে বলেন তাদের স্ব স্ব ইউনিয়নে আনারস প্রতিকের কোন এজেন্ট রাখবেন না এবং সকাল ১০টার মধ্যে সমস্ত নিয়ে নিবেন। এমতাবস্থায় এই নির্বাচন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ হওয়া নিয়ে আমি শঙ্কা প্রকাশ করছি।আমার নির্বাচনী এলাকায় তিনটি দুর্গম চরাঞ্চলের ইউনিয়নের ভোটকেন্দ্র গুলো পেশি শক্তি ব্যবহার করে দখল করার মতো ঘোষণা দিয়ে যাচ্ছেন। তাদের ভয়-ভীতিতে দুর্গম অঞ্চলের সাধারণ ভোটারগন ভীত হয়ে পড়েছে, এমনকি ভোটকেন্দ্রে আশা-যাওয়া নিয়েও শঙ্কা প্রকাশ করছি। আমার নির্বাচনী এলাকার সাধারণ মানুষ যাতে নির্বিঘ্নে তার পছন্দের প্রতিকে সুন্দর সুষ্ঠু ভাবে ভোট দিতে পারেন সেই পরিবেশ তৈরি করার জন্য সাংবাদিকদের সহযোগিতা কামনা করি।