ঢাকা , শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন।

কুষ্টিয়ায় হাতের রগ কাটা যুবকের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার

কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলায় শয়নকক্ষ থেকে মামুন আলী (২৫) নামের এক যুবকের হাতের রগ কাটা ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। আজ শনিবার (২৫ মে) দুপুরে কুর্শা ইউনিয়নের মজন্দপাড়া গ্রাম থেকে তার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।

 

নিহত মামুন ওই গ্রামের লিয়াকত আলীর ছেলে। তিনি বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক কুষ্টিয়ার বিভাগীয় কার্যালয়ে মাস্টাররোল চাকরি করতেন। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে একটি ‘পেপার কাটার’ উদ্ধার করেছে।

 

প্রতিবেশী ও স্বজনরা জানিয়েছেন, পারিবারিক কলহের জেরে আত্মহননের পথ বেছে নিতে পারেন ধারণা করা হচ্ছে। তবে হাতের কব্জি কাটা দেখে মৃত্যু নিয়ে রহস্য দেখা দিয়েছে।

 

পুলিশ, নিহতের স্বজন এবং প্রতিবেশীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, চার মাস আগে একই গ্রামের পল্লি চিকিৎসক লিয়াকত আলীর মেয়ের সঙ্গে মামুনের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই নানা কারণে স্ত্রীর সঙ্গে তার বনিবনা হচ্ছিল না। এমনকি মাটির ঘরে থাকা নিয়েও স্ত্রীর সঙ্গে ঝগড়া হতো। বাধ্য হয়ে পুরোনো বাড়ির জমিতে পাকা ঘর নির্মাণকাজে হাত দিয়েছিলেন মামুন। কলহের জেরে বিয়ের পর থেকে স্ত্রী তার বাবার বাড়িতেই থাকতেন।

 

প্রতিদিনের মতো আজ শনিবার সকালেও ঘুম থেকে উঠে হাত-মুখ ধুয়ে ঘরে যায় মামুন। সকাল সাড়ে ৮টা বেজে গেলেও ঘর থেকে বের না হলে তার মা ডাকতে গিয়ে ভেতর থেকে দরজা বন্ধ পান। এ সময় দরজায় ধাক্কা দিয়ে ঘরের ভেতর ঢুকে আড়ার সঙ্গে গলায় গামছা দিয়ে ছেলের ফাঁস নেওয়া ঝুলন্ত লাশ দেখতে পান তিনি।

 

তার চিৎকারে স্বজনেরা ছুটে এসে গামছা কেটে লাশ নামিয়ে পুলিশে খবর দেন। এ ছাড়া মামুনের বাম হাতের রগ কাটা ও ঘরের মেঝের এক পাশে রক্ত দেখতে পান তারা। খবর পেয়ে বেলা ১১টার দিকে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। এরপর বেলা ২টার দিকে পুলিশ লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করার পর লাশ জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।

 

নিহতের চাচাতো ভাই বোরহান উদ্দিন বলেন, লাশ নামানোর সময় মামুনের বাম হাতের রগ কাটা দেখতে পেয়েছি। এছাড়া গলায় জড়ানো গামছা বা হাতের নিচের মেঝেতে কোনো রক্ত দেখতে পাইনি। রক্তের দাগ ছিল ঘরের এক পাশে। ফাঁস নেওয়া ঘরের আড়া ও মেঝের উচ্চতা এবং গামছায় রক্তের কোনো দাগ না দেখে এই মৃত্যু নিয়ে রহস্য দেখা দিয়েছে। বিয়ের পর থেকেই স্ত্রীর সঙ্গে ভাইয়ের পারিবারিক কলহ ছিল। মৃত্যুর খবর জানার পর স্ত্রী একবার দেখতে এসেছিলেন কিন্তু গ্রামবাসী উত্তপ্ত হয়ে গেলে চলে যান।

 

মিরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তফা হাবিবুল্লাহ বলেন, ‘লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। নিহত ব্যক্তির বাম হাতের কবজিতে জখম ছিল। এ ছাড়া ঘর থেকে একটা কাগজ কাটারও উদ্ধার করেছে পুলিশ। স্ত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে।

 

 

ওসি মোস্তফা হাবিবুল্লাহ আরও বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে পারিবারিক অশান্তির কারণে তিনি আত্মহত্যা করে থাকতে পারেন। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন আসলে বাকি তথ্য বলা যাবে।

Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

জনপ্রিয় সংবাদ
error: Content is protected !!

কুষ্টিয়ায় হাতের রগ কাটা যুবকের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার

আপডেট টাইম : ০৩:১৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৬ মে ২০২৪

কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলায় শয়নকক্ষ থেকে মামুন আলী (২৫) নামের এক যুবকের হাতের রগ কাটা ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। আজ শনিবার (২৫ মে) দুপুরে কুর্শা ইউনিয়নের মজন্দপাড়া গ্রাম থেকে তার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।

 

নিহত মামুন ওই গ্রামের লিয়াকত আলীর ছেলে। তিনি বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক কুষ্টিয়ার বিভাগীয় কার্যালয়ে মাস্টাররোল চাকরি করতেন। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে একটি ‘পেপার কাটার’ উদ্ধার করেছে।

 

প্রতিবেশী ও স্বজনরা জানিয়েছেন, পারিবারিক কলহের জেরে আত্মহননের পথ বেছে নিতে পারেন ধারণা করা হচ্ছে। তবে হাতের কব্জি কাটা দেখে মৃত্যু নিয়ে রহস্য দেখা দিয়েছে।

 

পুলিশ, নিহতের স্বজন এবং প্রতিবেশীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, চার মাস আগে একই গ্রামের পল্লি চিকিৎসক লিয়াকত আলীর মেয়ের সঙ্গে মামুনের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই নানা কারণে স্ত্রীর সঙ্গে তার বনিবনা হচ্ছিল না। এমনকি মাটির ঘরে থাকা নিয়েও স্ত্রীর সঙ্গে ঝগড়া হতো। বাধ্য হয়ে পুরোনো বাড়ির জমিতে পাকা ঘর নির্মাণকাজে হাত দিয়েছিলেন মামুন। কলহের জেরে বিয়ের পর থেকে স্ত্রী তার বাবার বাড়িতেই থাকতেন।

 

প্রতিদিনের মতো আজ শনিবার সকালেও ঘুম থেকে উঠে হাত-মুখ ধুয়ে ঘরে যায় মামুন। সকাল সাড়ে ৮টা বেজে গেলেও ঘর থেকে বের না হলে তার মা ডাকতে গিয়ে ভেতর থেকে দরজা বন্ধ পান। এ সময় দরজায় ধাক্কা দিয়ে ঘরের ভেতর ঢুকে আড়ার সঙ্গে গলায় গামছা দিয়ে ছেলের ফাঁস নেওয়া ঝুলন্ত লাশ দেখতে পান তিনি।

 

তার চিৎকারে স্বজনেরা ছুটে এসে গামছা কেটে লাশ নামিয়ে পুলিশে খবর দেন। এ ছাড়া মামুনের বাম হাতের রগ কাটা ও ঘরের মেঝের এক পাশে রক্ত দেখতে পান তারা। খবর পেয়ে বেলা ১১টার দিকে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। এরপর বেলা ২টার দিকে পুলিশ লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করার পর লাশ জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।

 

নিহতের চাচাতো ভাই বোরহান উদ্দিন বলেন, লাশ নামানোর সময় মামুনের বাম হাতের রগ কাটা দেখতে পেয়েছি। এছাড়া গলায় জড়ানো গামছা বা হাতের নিচের মেঝেতে কোনো রক্ত দেখতে পাইনি। রক্তের দাগ ছিল ঘরের এক পাশে। ফাঁস নেওয়া ঘরের আড়া ও মেঝের উচ্চতা এবং গামছায় রক্তের কোনো দাগ না দেখে এই মৃত্যু নিয়ে রহস্য দেখা দিয়েছে। বিয়ের পর থেকেই স্ত্রীর সঙ্গে ভাইয়ের পারিবারিক কলহ ছিল। মৃত্যুর খবর জানার পর স্ত্রী একবার দেখতে এসেছিলেন কিন্তু গ্রামবাসী উত্তপ্ত হয়ে গেলে চলে যান।

 

মিরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তফা হাবিবুল্লাহ বলেন, ‘লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। নিহত ব্যক্তির বাম হাতের কবজিতে জখম ছিল। এ ছাড়া ঘর থেকে একটা কাগজ কাটারও উদ্ধার করেছে পুলিশ। স্ত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে।

 

 

ওসি মোস্তফা হাবিবুল্লাহ আরও বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে পারিবারিক অশান্তির কারণে তিনি আত্মহত্যা করে থাকতে পারেন। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন আসলে বাকি তথ্য বলা যাবে।