আর মাত্র একদিন পরেই কোটালীপাড়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এ নির্বাচনকে ঘিরে উপজেলা ব্যাপি থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। এক প্রার্থী অন্য প্রার্থীর বিরুদ্ধে করছে অভিযোগ পাল্টা অভিযোগ। প্রার্থীদের সমর্থকদের মধ্যে বাড়ছে উত্তেজনা।
এ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন সাবেক উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান হাওলাদার (চিংড়ি মাছ) প্রতীক, বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান বিমল কৃষ্ণ বিশ্বাস(দোয়াত কলম) প্রতীক ও জাহাঙ্গীর হোসেন খান(ঘোড়া) প্রতীক। তিনজন প্রার্থীই আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত।
এরই মধ্যে চেয়ারম্যান প্রার্থী বিমল বিশ্বাসের জয় জয় কার ধনী উঠেছে ভোটারদের মুখে মুখে। উপজেলার বিভিন্ন বাজার, চায়ের দোকান সহ জনজমায়েত জায়গায় চলছে চুলচেরা বিশ্লেষণ। উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন ও পাড়া মহল্লা সরজমিন পরিদর্শন করে দেখা যায় এমনি দৃশ্য। সাধারণ ভোটারদের আলোচনা-সমালোচনা বিশ্লেষণ, গোপনীয় অনুসন্ধান ও উপজেলার নবীন, প্রবীণ রাজনৈতিক নেতাদের সাথে আলাপ করে জানা গেছে, বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান বিমল কৃষ্ণ বিশ্বাস অন্য দুজন প্রার্থীর তুলনায় বিপুল ভোটের ব্যবধানে এগিয়ে থাকবেন।
এবিষয়ে ওই রাজনৈতিক নেতারা যুক্তি দেখিয়েছেন দুইটি কমিউনিটির হিন্দু এবং মুসলিম সম্প্রদায়ের। তাদের মতে হিন্দু কমিউনিটির মধ্যে একক প্রার্থী হওয়ায় অধিকাংশ ভোট বিমল কৃষ্ণ বিশ্বাস টানতে সক্ষম হবেন। এছাড়াও বিমল বিশ্বাস বিগত পাঁচ বছর উপজেলা চেয়ারম্যান থাকাকালীন সময়ে কোন নোংরা রাজনীতির সঙ্গে জড়াননি। একারনে মুসলিম কমিউনিটির কাছেও যথেষ্ট জনপ্রিয়তা রয়েছে তার। এ বিবেচনায় মুসলিম সম্প্রদায়ের শান্তিপ্রিয় মানুষের একটি বড় অংশ বিমল বিশ্বাসকে ভোট দিতে পারেন। অপরদিকে মুসলিম কমিউনিটির মধ্যে দুজন প্রার্থী হওয়ায় ভোট সমান ভাবে ভাগাভাগি হওয়ার সম্ভাবনা দেখছেন তারা। এই উপজেলায় মোট ভোটার সংখ্যা ২ লক্ষ ৫ হাজার ১৪৬ জন। মূলত এই ভোট গুলো দুইটি শিবিরে বিভক্ত হলেও হিন্দু কমিউনিটিতে প্রায় ১০ হাজার ভোট বেশি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক উপজেলা আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত কয়েকজন জানান, কয়েকদিন আগে মুজিবুর রহমান হাওলাদার ও তার স্ত্রী তাছলিমা আক্তার নামে আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দূর্নীতি দমন কমিশন মামলা করেছে। এই খবরটি ইতিমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ায় তার জনপ্রিয়তায় ব্যাপক ধ্বস নেমেছে। অপরদিকে নুতন প্রার্থী জাহাঙ্গীর খান মুসলিম সম্প্রদায়ের যথেষ্ট ভোট পেলেও হিন্দু সম্প্রদায়ের ভোট টানতে সক্ষম নাও হতে পারেন।
নির্বাচনী হলফনামা পর্যালোচনা ও অন্যান্য মাধ্যমে অনুসন্ধান করে জানা গেছে তিনজন প্রার্থীর মধ্যে বিমল কৃষ্ণ বিশ্বাস শিক্ষাগত যোগ্যতা ও আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে একধাপ এগিয়ে রয়েছেন। তিনি বর্তমান সরকারের প্রধানমন্ত্রী ও কোটালীপাড়া-টুঙ্গিপাড়া আসনের এমপি শেখ হাসিনার বিশ্বস্ত ভ্যান-গার্ড হিসেবে পরিচিত।
এবিষয়ে কোটালীপাড়া উপজেলা আওয়ামী-লীগের সভাপতি ভাবেন্দ্রনাথ বিশ্বাস বলেন, তিনজন প্রার্থীই আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত, আমি দলীয় সভাপতি হওয়ায় ব্যক্তিগতভাবে কাউকে সমর্থন করতে পারছি না। ত্রিমুখী লড়াই হওয়ার সম্ভাবনা দেখছি, তবে সাম্প্রদায়িকতা ও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।
উল্লেখ্য, বিমল কৃষ্ণ বিশ্বাস ২০১৯ সালের ২৫ মার্চ তারিখে ৫ম উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে মুজিবুর রহমান হাওলাদারকে ২৩ হাজার ৭০ ভোটে পরাজিত করে কোটালীপাড়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলেন।
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ মোঃ মুরসিদ আহমেদ সিকদার, মোবাইল : 01728 311111
ঢাকা অফিসঃ হোল্ডিং-১৩, লাইন-৬, রোড- ১২, ব্লক-বি, মিরপুর-১১, ঢাকা-১২১৬
ফরিদপুর অফিসঃ মুজিব সড়ক, ফরিদপুর, ই-মেইলঃ [email protected]
Copyright © August, 2020-2025 @ Daily Somoyer Protyasha