আজকের তারিখ : এপ্রিল ৮, ২০২৫, ৬:৩৩ পি.এম || প্রকাশকাল : মে ৪, ২০২৪, ৯:৪৯ পি.এম
প্রবাসী প্রেমিকার ২ লাখ টাকার চুক্তিতে মেসকাত খুন

ভাড়াটে খুনি দিয়ে হত্যার পর পাবনার ভাঙ্গুড়া উপজেলার মেসকাতকে (৪১) যশোরের মণিরামপুরের জোকার মাঠের ধান ক্ষেতে ফেলে রাখা হয়। প্রবাসে অবস্থানরত পরকীয়া প্রেমিকার চক্রান্তে দুই লাখ টাকার চুক্তিতে তাকে খুন করা হয়। হত্যায় জড়িত দুইজনকে গত শুক্রবার রাতে আটক করা হয়েছে। তাদের মধ্যে একজন ১৬৪ ধারায় আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন। নিহত মেসকাত ভাঙ্গুড়ার শ্রীপুর গ্রামের নিজাম প্রামাণিকের ছেলে। তদন্তে খুনের রহস্য উদ্ঘাটনের পর এক সংবাদ সম্মেলনে যশোর ডিবি পুলিশ এ তথ্য জানিয়েছে।
আটক দুইজন হলো, সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ঝাউডাঙ্গা গ্রামের রাজুর স্ত্রী রিক্তা খাতুন (৩০) ও আশাশুনি উপজেলার নৈকাটি গ্রামের নিজাম সরদার (৬০)। আটক দুজনের পাশাপাশি নিহত মেসকাতের দুটি মোবাইল ফোন, একটি সোনার চেইন ও এক জোড়া সোনার কানের দুল উদ্ধার হয়েছে। জব্দ করা হয়েছে হত্যায় ব্যবহৃত একটি প্রাইভেটকার।
আটক রিক্তা খাতুন শনিবার আদালতে হত্যাকাণ্ডের বর্ণনা দিয়েছেন। তার জবানবন্দি ১৬৪ ধারায় রেকর্ড করেছেন জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সালমান আহমেদ শুভ।
যশোর ডিবি পুলিশের ওসি রুপন কুমার সরকার জানান, পাবনার মেসকাত ও সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার নৈকাটি গ্রামের নিজাম সরদারের মেয়ে সৌদি আরব প্রবাসী নাজমা যশোর সদর উপজেলার পদ্মবিলায় ইলা নামে একটি অটো রাইস মিলে শ্রমিকের কাজ করতেন। নাজমা স্বামী পরিত্যক্তা। এক জায়গায় কাজের সুবাদে তাদের মধ্যে পরিচয় ও পরকীয়া সম্পর্ক গড়ে ওঠে। পরবর্তীতে নাজমা সৌদি আরবে চলে যান। নিজ এলাকা পাবনায় চলে যান মেসকাত । কিন্তু তাদের মধ্যে মোবাইলে ফোনসহ বিভিন্ন মাধ্যমে যোগাযোগ হতো।
তিনি জানান, তাদের এই সম্পর্কের বিষয় জেনে যান মেসকাতের স্ত্রী জুলেখা। এ নিয়ে মেসকাতের সাথে ঝগড়াও হতো। একদিন মেসকাতের কাছ থেকে ফোন নাম্বার নিয়ে তিনি (জুলেখা) নাজমাকে কল করে গালিগালাজ করেন। এতে ক্ষোভ সৃষ্টি হয় নাজমার। তিনি প্রতিশোধ নিতে মেসকাতকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। নাজমা এ কাজে তার পূর্ব পরিচিত (সাবেক জা) রিক্তা খাতুনের সহযোগিতা নেন। খুনের জন্য বিদেশে বসে রিক্তার সাথে দুই লাখ টাকা চুক্তি করেন। রিক্তা তার মামতো ভাই যশোর শহরের শংকরপুরের শাহীনের সাথে খুনের চুক্তি করেন। শাহীন পেশায় প্রাইভেটকার চালক। খুন করতে পারলে দুই লাখ টাকা দুজনে ভাগাভাগি করে নেবে বলে চুক্তি করে তারা। অগ্রিম হিসেবে নাজমা সৌদি আরব থেকে ১৫ হাজার টাকা পাঠায়।
তিনি আরো জানান, চুক্তি অনুযায়ী খুনের পরিকল্পনা হয়। নাজমা মোবাইলে ফোন করে মেসকাতকে বলেন ঝাউডাঙ্গা বাজারে তার সোনার গহনা রয়েছে। ওই গহনা সাতক্ষীরায় তার বাড়িতে পৌছে দিতে হবে। এরপর শাহীন একটি প্রাইভেটকারে করে মেসকাতকে ঝাউডাঙ্গায় নিয়ে যায়। তাকে গাড়িতে ওঠানোর পর কৌশলে ঘুমের ওষুধ সেবন করায় শাহীন। ঘুমিয়ে গেলে তাকে সাতক্ষীরায় না নিয়ে মণিরামপুরে নেয়া হয়। ঘটনার দিন ২ মে রাতে মেসকাতকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করে মরদেহ মণিরামপুরের জোকা গ্রামের ধান ক্ষেতে ফেলে পালিয়ে যায়।
এদিকে শাহীনকে এখনো আটক করতে পারেনি পুলিশ। নিহত মেসকাতের ভাই এরশাদ আলী মণিরামপুর থানায় হত্যা মামলা করেছেন।
ডিবি পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনাটির আরো তদন্ত করা হচ্ছে। পেছনে আর কারা আছে তা বের করার চেষ্টা চলছে।
সম্পাদক ও প্রকাশক: এ. এস.এম
মুরসিদ (লিটু সিকদার) মোবাইল: 01728 311111
Copyright © August 2020-2025 @ Daily Somoyer Protyasha