এর আগে মঙ্গলবার রাত ৯টার দিকে শতাধিক সশস্ত্র ব্যক্তি রুমা উপজেলা সদরে সোনালী ব্যাংকের শাখা, পাশের একটি মসজিদ এবং উপজেলা পরিষদ কার্যালয় ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) বাসভবনের নিরাপত্তায় থাকা আনসার সদস্যদের ওপর একযোগে হামলা চালায়। এ সময় ব্যাংকের কর্মকর্তা, নিরাপত্তারক্ষীসহ অন্তত ২০ জনকে মারধর করা হয়। অপহরণ করা হয় এ শাখাটির ব্যবস্থাপক নেজাম উদ্দিনকে। ব্যাংকে হামলার আগ মুহূর্তে অস্ত্রধারীরা ইউএনওর বাসভবনের নিরাপত্তায় থাকা আনসার সদস্যদের ওপর হামলা চালিয়ে তাদের অস্ত্র ও গুলি লুট করে। এ ছাড়া ব্যাংকের নিরাপত্তায় থাকা পুলিশ সদস্যদের কাছ থেকে লুট করা হয় আরও ১০টি অস্ত্র। সোনালী ব্যাংকে ঢোকার আগে হামলাকারীরা বৈদ্যুতিক সাবস্টেশন বন্ধ করে দেওয়ায় পুরো এলাকা বিদ্যুৎবিহীন হয়ে পড়ে। এ ছাড়া অস্ত্রধারীরা বান্দরবান-রুমা সড়কের উপজেলা পরিষদ কার্যালয়ের সামনের অংশে দুই পাশে ব্যারিকেড দেয়।
রুমা ও থানচির হামলার ঘটনায় পাহাড়ের নতুন সশস্ত্র গোষ্ঠী কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ) জড়িত বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। এই সশস্ত্র সংগঠনটি পাহাড়ে বম পার্টি নামেও পরিচিত। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানও জানিয়েছেন, হামলার ঘটনায় কেএনএফ সদস্যরা জড়িত।
রুমায় সোনালী ব্যাংকে ঢোকার আগে কেএনএফ সদস্যরা বৈদ্যুতিক সাবস্টেশন বন্ধ করে। পরে তারা সোনালী ব্যাংকের দিকে অগ্রসর হয়। সেখানে পুলিশ মোতায়েন ছিল। পুলিশ সদস্যের বেশিরভাগ এবং সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপক স্থানীয় মসজিদে তারাবির নামাজে ছিলেন।
কেএনএফ সেই সময় ঢুকে পুলিশের গার্ড কমান্ডার উপসহকারী পরিদর্শক (এএসআই) মামুনুর রহমান ও কনস্টেবল তৌহিদুল ইসলামকে আহত করে দুটি লাইট মেশিন গান (এসএমজি) ও আটটি চীনা রাইফেল লুট করে এবং উপজেলা কমপ্লেক্সে থাকা আনসার সদস্যদের শটগানগুলো নিয়ে নেয়। ব্যাংক লুটের আগে অস্ত্রধারীরা বান্দরবান-রুমা সড়কের উপজেলা পরিষদ কার্যালয়ের সামনের অংশে দুই পাশে ব্যারিকেড দেয়। এলাকাটি নির্জন এবং ঘটনার সময় বিদ্যুৎ ছিল না।
রুমা বাজারে প্রবেশের প্রায় এক কিলোমিটার আগেই সোনালী ব্যাংকের কার্যালয়টি। তার বিপরীতেই রয়েছে উপজেলা পরিষদ কমপ্লেক্স। ব্যাংক থেকে থানার দূরত্ব প্রায় দুই কিলোমিটার। আর রুমা বাজারে সেনাবাহিনী ও বিজিবির ক্যাম্পও রয়েছে।
সশস্ত্র ব্যক্তিরা উপজেলা পরিষদ ও সোনালী ব্যাংক এলাকায় অবস্থান নেওয়ার সময় রাস্তা ব্লক করে রাখে যেন কেউ সেখানে আসতে না পারে। তারা প্রায় এক ঘণ্টা সেখানে অবস্থান করে। এ সময় রুমায় কোনো বিদ্যুৎ ছিল না। সশস্ত্র ব্যক্তিরা চলে যাওয়ার ১৫ মিনিট পর বিদ্যুৎ আসে।
সোনালী ব্যাংকে ঢোকার আগে হামলাকারীরা পাশের মসজিদ থেকে ব্যাংকের শাখাটির ব্যবস্থাপককে ধরে নিয়ে আসে। এরপর ব্যাংকে ঢুকে ভল্ট ভাঙার চেষ্টা করলেও ব্যর্থ হয়।
প্রত্যক্ষদর্শী রুমা উপজেলা মসজিদের ইমাম নুরুল ইসলাম বলেন, ‘অস্ত্রধারী ২০ থেকে ২৫ জন মসজিদে ঢুকে পড়ে। তখন আমরা সবাই এশার নামাজে ছিলাম। ফরজ নামাজ শেষ করে দেখলাম সবার মোবাইল ফোন নিয়ে নিচ্ছে তারা। কেএনএফ সদস্যরা ব্যাংকের ব্যবস্থাপককে খুঁজতে থাকে। একপর্যায়ে তাকে ধরে নিয়ে যায়।’
গতকাল দুপুরে গিয়ে দেখা যায়, বান্দরবান-রুমা সড়কের রুমা উপজেলা পরিষদের ২০০ গজ দূরে সোনালী ব্যাংক রুমা শাখা। তার পাশে উপজেলা মসজিদ। আশপাশে সব উঁচু উঁচু পাহাড়।
মঙ্গলবার রাতে ডাকাতির পর ব্যাংক ও উপজেলা পরিষদের সামনে পুলিশের বাড়তি নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে। রয়েছেন র্যাবের সদস্যরাও। ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যান বান্দরবানের জেলা প্রশাসক শাহ মুজাহিদ উদ্দিন, জেলা পুলিশ সুপার শাহিন সৈকতসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
বান্দরবান রুমা সড়কের উপজেলা পরিষদ কার্যালয়ে ঢোকার মুখে রয়েছে একটি দোতলা ভবন। এটির নিচতলায় থাকেন সরকারি কর্মকর্তারা। দোতলার এক পাশে সোনালী ব্যাংক রুমা শাখা। আরেক পাশে থাকেন ব্যাংকের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা ১০ পুলিশ সদস্য।
প্রত্যক্ষদর্শী পুলিশ কনস্টেবল রূপন শীল বলেন, ‘আমি আর কনস্টেবল তৌহিদ ব্যাংকের সামনে পাহারায় ছিলাম। হঠাৎ দেখি ইউনিফর্ম পরা অস্ত্রধারী কয়েকজন। তারা আমাদের ব্যারাকে ঢুকিয়ে ফেলে। সঙ্গে সঙ্গে আমাদের হাতে থাকা অস্ত্র ও মোবাইল ফোন নিয়ে নেয়। সব পুলিশ সদস্যকে মাথা নিচু করে বসিয়ে রাখা হয়। এভাবে প্রায় এক ঘণ্টা ব্যারাকে আটকে রাখা হয়।’
সোনালী ব্যাংকের শাখায় গতকাল দুপুরে গিয়ে দেখা যায়, ব্যাংকের টেবিলের কাচ ভাঙা। ভল্টের কক্ষটি এলোমেলো। সিআইডির (পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ) ক্রাইম সিন ইউনিটের সদস্যরা আলামত সংগ্রহ করছেন।
ভবনটির নিচতলায় থাকা রুমা উপজেলার সরকারি একটি সংস্থার একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, অস্ত্রধারীরা ইউনিফর্ম (নিজেদের একই রকমের পোশাক) পরা ছিল। পোশাকে কেএনএফ লেখা ছিল।
সোনালী ব্যাংক থেকে ২০০ গজ উত্তরে রুমা উপজেলা পরিষদ ভবন ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) বাসভবন। সেখানে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকেন আটজন আনসার সদস্য।
আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর চট্টগ্রামের উপমহাপরিচালক মোহাম্মদ সাইফুল্লাহ রাসেল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে বলেন, তাদের দায়িত্বরত আটজন আনসার সদস্যের মধ্যে চারজন আহত হয়েছেন। তাদের ৪টি শটগান ও ৩৫টি গুলি লুট করে অস্ত্রধারীরা। আনসার সদস্যরা ব্যাংকের নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিলেন না। ব্যাংকে হামলা চালালে আনসার সদস্যরা প্রতিরোধ করতে পারেন, সেজন্য অস্ত্রধারীরা আগেই আনসার সদস্যদের ওপর হামলা চালিয়ে তাদের অস্ত্র ও গুলি লুট করে।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সূত্রে জানা গেছে, ডাকাতিতে শতাধিক কেএনএফ সদস্য অংশ নেয়। তাদের বেশিরভাগের পরনে ইউনিফর্ম ছিল।
রুমায় সোনালী ব্যাংকের শাখা থেকে টাকা লুট হয়নি : রুমায় ব্যাংকে হামলার পর মঙ্গলবার রাতে প্রাথমিকভাবে সেখান থেকে বিপুল অঙ্কের টাকা লুট হয়েছিল বলে ধারণা করা হয়েছিল। তবে গতকাল বিকেলে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) কর্মকর্তারা সব পরিদর্শন করে বলেন কোনো টাকা লুট হয়নি।
সিআইডি চট্টগ্রাম অঞ্চলের বিশেষ পুলিশ সুপার শাহনেওয়াজ খালেদ বলেন, সিআইডির চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার ইউনিটের দুটি দল রুমায় গিয়ে বিভিন্ন আলামত সংগ্রহ করেছে। পরে ব্যাংকের ভল্ট খুলে সব টাকা গুনে দেখা হয়। দেখা যায় যে মঙ্গলবার রাখা ১ কোটি ৫৯ লাখ ৪৬ হাজার টাকার পুরোটাই সেখানে রয়েছে। দুটি চাবি একসঙ্গে দিয়ে ভল্ট খুলতে হয়। কোনো কারণে অস্ত্রধারী ব্যক্তিরা হয়তো ভল্ট খুলতে পারেনি।
লুট হয়েছে ১৪টি অস্ত্র, ৪২৪টি গুলি : ব্যাংক লুটের সময় পুলিশ ও আনসারের অস্ত্র নিয়ে যাওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে বান্দরবানের পুলিশ সুপার সৈকত শাহীন বলেন, ‘এই হামলার সময় পুলিশের যে গার্ডরা রয়েছে তাদের ১০টা অস্ত্র ছিল। আটটা চায়নিজ রাইফেল, দুটি এসএমজি। তাদের ৩৮০ রাউন্ড গুলি লুট হয়েছে। এ ছাড়া আনসারের ৪টি শটগান ও ৩৪ রাউন্ড গুলিও লুট করে নিয়ে গেছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘কে বা কারা করেছে এটা তদন্ত চলছে। তদন্ত সাপেক্ষে এটা বলতে পারব, কে বা কারা এ ঘটনায় জড়িত। অলরেডি তদন্ত শুরু হয়েছে।’
রুমার হামলার ঘটনায় গতকাল ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যান পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল-মামুন। আইজিপি যখন রুমা পরিদর্শনে ছিলেন তখন ভরদুপুরে থানচিতে কৃষি ও সোনালী ব্যাংকে হামলা চালায় একদল সশস্ত্র ব্যক্তি।
কৃষি ব্যাংকের থানচি উপজেলার শাখার ব্যবস্থাপক হ্লা সুই থোয়াই বলেন, ‘তারা এসে চোখের পলকে আমাদের ব্যাংকে ঢুকে সবাইকে জিম্মি করে ফেলল। তারপর সবাইকে একটি কক্ষে নিয়ে বাইরে থেকে আটকে দিল।’
টাকা লুটের বিষয়ে জানতে চাইলে কৃষি ব্যাংকের ব্যবস্থাপক বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে আড়াই লাখ টাকা খোয়া গেছে এটা জানতে পেরেছি।’ একই সময় পাশের সোনালী ব্যাংকেও হামলা হয়।
থানচি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ মামুন বলেন, ‘দুপুরে থানচি বাজারে এসে সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা সোনালী ব্যাংক ও কৃষি ব্যাংকে প্রবেশ করে টাকা লুট করে নিয়ে গেছে। সোনালী ব্যাংক থেকে ১৪-১৫ লাখ টাকা নিয়ে গেছে বলে শুনেছি। তবে কৃষি ব্যাংক থেকে কত টাকা নিয়েছে জানা যায়নি। সেখান থেকে কাউকে অপহরণ করার সংবাদও পাওয়া যায়নি।’
স্থানীয় এক ব্যক্তির করা ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়েছে। ওই ভিডিওতে গোলাগুলির শব্দ শোনা যাচ্ছিল। এ সময় থানচি বাজারের লোকজন ভয় ও আতঙ্কে দৌড়াদৌড়ি শুরু করেন। দোকানপাট বন্ধ করতে দেখা গেছে। অনেক নারী-পুরুষকে একটি ঘরে আশ্রয় নিতে দেখা গেছে। আবার অনেকে উঁকিঝুঁকি দিয়ে পরিস্থিতি বোঝার চেষ্টা করছিলেন। এ ঘটনার পর বাজার প্রায় ফাঁকা হয়ে যায়। রাস্তার পাশে ফুটপাতে কিছু দোকান খোলা অবস্থায় দেখা গেছে। অর্থাৎ গোলাগুলির সময় তারা দোকান খোলা রেখেই জান বাঁচাতে পালিয়ে যান।
থানচির সোনালী ব্যাংকের সামনে প্রচুর সাধারণ মানুষ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের দেখা গেছে। তারা কীভাবে সশস্ত্র ব্যক্তিরা এসে হামলা করেছে, এ নিয়ে কথা বলছিলেন।
স্থানীয়রা বলছিলেন, ব্যাংকে যারা ডাকাতির জন্য প্রবেশ করেছিল, তার বাইরেও তাদের আরও লোকজন সশস্ত্র অবস্থায় ছিল। তারা বাজারের বিভিন্ন পয়েন্টে অস্ত্র নিয়ে অবস্থান নেয়।
থানচি বাজারের এক ব্যবসায়ী বলেন, ‘আজকে থানচিতে সাপ্তাহিক বাজার। উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকে লোকজন মালামাল নিতে এখানে এসেছিল। দুপুর সোয়া ১২টা থেকে সাড়ে ১২টার মধ্যে তিনটি জিপে কয়েকশ লোক আসে। আমরা তিনটি গাড়িতে করে লোকজন আসতে দেখেছি। তার মধ্যে দুটি গাড়ি থেকে নেমে তারা দুই ব্যাংকে যায়। একটি গাড়ি ব্যাংকের সামনে দাঁড়িয়ে ছিল।’
গতকাল সাপ্তাহিক বাজার থাকায় দুই ব্যাংকেই অনেক গ্রাহক ছিলেন জানিয়ে তিনি বলেন, ‘সোনালী ব্যাংকে প্রবেশ করে দলটির সদস্যরা ম্যানেজারকে খুঁজতে থাকে। না পেয়ে ক্যাশ বাক্সে থাকা টাকা নিয়ে যেতে দেখা গেছে।’
সশস্ত্র দলটির সঙ্গে কয়েকজন নারীও ছিল জানিয়ে ওই ব্যবসায়ী বলেন, ‘দলটির লোকজন খাকি পোশাক পরে ছিল। আমাদের ধারণা, তারা কুকি-চিন পার্টির সদস্য।’
ব্যাংক লুট শেষে সশস্ত্র দলটি থানচি বাজারে প্রকাশ্যে ব্রাশ ফায়ার করে আতঙ্ক তৈরি করে এবং তিনটি জিপে চড়ে চাঁদাপাড়া এলাকার সড়কের দিকে চলে যায় বলে জানান ওই ব্যবসায়ী।
তিনি বলেন, সিনেমায় যেভাবে প্রকাশ্যে অস্ত্র নিয়ে ব্যাংক লুটের দৃশ্য দেখা যায় এ দৃশ্যটাও এমন মনে হয়েছে তার কাছে।
স্থানীয় আরেকজন বলেন, ‘চাঁদাপাড়া এলাকায় নদীর পাড়ে কয়েক দিন ধরে নাটকের শুটিং চলছিল। আমরা প্রথমে মনে করেছি সেই নাটকের কোনো শুটিং চলছে। তাই অনেকে প্রথমে বিষয়টা এড়িয়ে গেছে। পরে বাজারে প্রকাশ্যে ব্রাশফায়ার যখন করল, তখন আমরা বুঝতে পেরেছি এটা ডাকাতি।’
রুমা সোনালী ব্যাংকে হামলা ও ডাকাতির ঘটনার পর মঙ্গলবার সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যান পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল-মামুন। তিনি ব্যাংকের পাশাপাশি পাশের মসজিদও পরিদর্শন করেন। এ সময় তিনি ব্যাংক কর্মকর্তা ও স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলেন।
পরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে থানচির ব্যাংক ডাকাতি নিয়েও কথা বলেন আইজিপি। তিনি বলেন, ‘আমরা একটু আগেই বিষয়টি শুনেছি। আমরা সতর্ক ছিলাম বলেই তারা এসে পালিয়ে গেছে। আমরা এ বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করছি।’
প্রতিটি ঘটনার বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়ে পুলিশ-প্রধান বলেন, ‘যারা দুষ্কৃতকারী তাদের আইনের আওতায় আনা হবে এবং যথাযথ শাস্তির ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
হামলায় জড়িত কুকি-চিন বলেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী : বান্দরবানের রুমা এবং থানচিতে ব্যাংকে হামলার ঘটনায় পার্বত্য অঞ্চলের নতুন সশস্ত্র গোষ্ঠী কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) সদস্যরা জড়িত বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান। তিনি বলেন, ‘ব্যাংক লুটের ঘটনায় কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ) নামে জঙ্গিগোষ্ঠী জড়িত বলে জানা গেছে। তবে এ বিষয়ে এখনো বিস্তারিত তথ্য জানা যায়নি। এ নিয়ে সরকার সবকিছুই করবে।’ গতকাল সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
তিনি আরও বলেন, ‘কুকি-চিন একটি জঙ্গি গোষ্ঠী। কুকি-চিনের তৎপরতা ইদানীং বেড়েছে। বিজিবি-পুলিশ অপারেশন চালাচ্ছে। গোলাগুলি চলছে বলে জানা গেছে। পুলিশের আইজিপির নেতৃত্বে একটি টিম সেখানে রয়েছে। ব্যাংক লুট করে চলে যাওয়ার পর পুলিশ ও বিজিবি সেখানে অপারেশন (অভিযান) চালাচ্ছে। সেনাবাহিনী সদস্যরাও সেখানে যোগ দেবেন।’
কেএনএফ ২০২২ সালের মাঝামাঝি থেকে তৎপরতা শুরু করে। পাহাড়ে তাদের আস্তানায় সমতলের নতুন জঙ্গি সংগঠন জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্কীয়ার সদস্যরা সশস্ত্র প্রশিক্ষণ নিয়েছিল বলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এর আগে গণমাধ্যমকে জানিয়েছিল।
সেই আস্তানায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী গত বছর অভিযান চালিয়ে জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্কীয়া ও কেএনএফের বেশ কয়েকজন সদস্যকে গ্রেপ্তার করে।
কেএনএফ সদস্যদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনার জন্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ক্যশৈহ্লা মারমার নেতৃত্বে ‘শান্তি প্রতিষ্ঠা’ কমিটি গঠন করা হয় গত বছরের মে মাসে। ওই কমিটির সঙ্গে ৫ মার্চ দ্বিতীয় দফা বৈঠক হয় বেথেলপাড়ায়।