কুষ্টিয়ার দৌলতপুরের ফিলিপনগর ,মরিচা, রামকৃষ্ণপুর ইউপি তীরবর্তী পদ্মা নদীতে জেগে ওঠা চর সবুজে ভরে উঠেছে। প্রমত্ত পানির শ্রোতে আর ভাঙ্গনের গর্জন নেই এখানে। হাজার হাজার বিঘা জমিতে শোভা পাচ্ছে সবুজের সমারোহ।
ফুলে-ফলে ভরা ফসলের মাঠ কৃষকের মুখে হাসি আর মনে আনন্দ ছড়াচ্ছে। এক সময়ে সর্বনাশা পদ্মা নদীর ভাঙ্গনে নি:স্ব কৃষক পরিবারগুলো সুখের স্বপ্ন দেখছে। এখানে উৎপাদিত ফসল এখন স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে রপ্তানি করা হচ্ছে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, প্রায় দেড় যুগ আগে দৌলতপুর উপজেলার পদ্মা তীরবর্তী ফিলিপনগর, রামকৃষ্ণপুর,মরিচা‘র প্রায় ৫০ টি গ্রাম সর্বনাশা পদ্মা নদীতে বিলীন হয়ে যায়। এতে হাজারো পরিবার নি:স্ব হয়ে যায়। দুই যুগ পরে পদ্মার বুকে চর জেগে ওঠা শুরু হয়। এসব চরে বাদামের আবাদ দিয়ে শুরু হয় নতুন করে বেঁচে থাকার স্বপ্ন। আজ অন্যান্য ফসলে স্বপ্ন সত্যিকারেই সুখের আলো দেখাচ্ছে।
চরে নতুনভাবে শুরু হয়েছে বসতি। বিদ্যুতের আলোয় আলোকিত হয়েছে বাসিন্দারা। দেখে বোঝার উপায় নেই এখান দিয়ে পদ্মা নদী প্রবাহিত ছিল।সত্যিকারের অপরূপ সাজে সেজেছে পদ্মার চর।
দৌলতপুর কৃষি কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, দৌলতপুর উপজেলার ফিলিপনগর, মরিচা, রামকৃষ্ণপুর এবং চিলমারি ইউনিয়নের চরে প্রায় ১২ হাজার হেক্টর জমি এবারে আবাদের আওতায় এসেছে। পদ্মার চরগুলোতে মুলা, কুমড়া, গাজর, কপি, পুঁই শাক, লাল শাক, ধেড়স, করোলা, বেগুন, কলাসহ নানা সবজি। চাষ করা হচ্ছে আখ, বাদাম, ধান, গম, সরিষা, মটর, মশুর, পাটসহ নানা ফসল। এছাড়াও গড়ে উঠেছে আম, পেয়ারা, কলা, বরই, লিচু ফলের বাগান।
আজ (২৮ মার্চ) বৃহস্পতিবার সরেজমিনে দৌলতপুরের চরে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার ফিলিপনগর, মরিচা, বাজুমারা, শিয়ালমারী, দামুষের মাঠ, খয়রামারি, ঝাড়ের মাঠ, চর বাহিরমাদীর সকল চরেই আবাদ হচ্ছে।
কৃষক মমিন হোসেন বলেন, চরের মাটিতে বাদাম খুব ভালো হয়। আমি গত চার বছর ধরে শুস্ক মৌসুমে বাদামের চাষ করি। বেশ ভালো ফলন হয়। এছাড়া এই চরে ভুট্টা ও মোটরের চাষও হচ্ছে।
সেন্টু সরকার নামের আরেক কৃষক বলেন, বর্ষায় যেখানে পানি থাকে শুষ্ক মৌসুমে সেখানে পানি শুকিয়ে আসলে আমরা বিভিন্ন ফসলের চাষ করি। গত বছর আমি দশ বিঘার মতো জমিতে মটর, মশুর, খেসারি চাষ করেছিলাম, এ বছর ১৫ বিঘা জমিতে বিভিন্ন ফসল রয়েছে। তবে চরের মাঠে নির্দিষ্ট সড়ক না থাকায় মালামাল পরিবহনে ভোগান্তি পোহাতে হয়।
অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য ময়েন উদ্দিন নামের ভুট্টা চাষি বলেন, আমি এই চরের প্রায় ৪ বিঘা জমিতে ভুট্টা চাষ করেছি। গাছ বেশ ভালো হয়েছে। আশা করছি ভালো ফলন পাবো।
দৌলতপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নুরুল ইসলাম জানান, চর এলাকায় চিনাবাদাম, গম, মশুর, ছোলা, ভুট্টা, মটর খেসারিসহ বিভিন্ন ফসল চাষ করা হয়েছে। এবার এই চরাঞ্চল থেকে প্রায় সাড়ে ৩শ কোটি টাকার রবিশস্য উৎপাদন করা সম্ভব হবে।
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ মোঃ মুরসিদ আহমেদ সিকদার, মোবাইল : 01728 311111
ঢাকা অফিসঃ হোল্ডিং-১৩, লাইন-৬, রোড- ১২, ব্লক-বি, মিরপুর-১১, ঢাকা-১২১৬
ফরিদপুর অফিসঃ মুজিব সড়ক, ফরিদপুর, ই-মেইলঃ [email protected]
Copyright © August, 2020-2025 @ Daily Somoyer Protyasha