আজকের তারিখ : নভেম্বর ২২, ২০২৪, ১২:৪১ এ.এম || প্রকাশকাল : মার্চ ২৬, ২০২৪, ১:২৯ এ.এম
টাকা দিলেই নরসিংদীতে কিশোরদের কাছে বিক্রি হচ্ছে সরকারী মদ
টাকার অভাবে যারা বিদেশী মদ ক্রয় করতে পারেন না, তারা দেশীয় মদ দিয়ে নিজেদের চাহিদা মিটিয়ে থাকেন। সেই চাহিদা পূরণ করতেই নরসিংদীতে সরকারিভাবে চালু করা হয়েছিল একটি বাংলা মদের পাট্টা। অল্প দামে মদের লাইসেন্সধারী ব্যক্তিদের কাছে এই মদ বিক্রি করার কথা থাকলেও টাকা দিলে যে কেউ কিনতে পারছে এই মদ। এই বাংলা মদে আসক্ত হচ্ছে নরসিংদীর কিশোর ও তরুণসমাজ।মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের তদারকি না থাকায় এবং নারায়ণগঞ্জের মালিকানায় বর্তমানে পাট্টা চলায় ধ্বংসের পথে নিয়ে যাচ্ছে নরসিংদীর কিশোর ও ছাত্র সমাজকে। আর এই সুযোগে কোটি কোটি টাকার মুনাফা কামাচ্ছে কতিপয় স্বার্থন্বেষী মহল।
এ ধরনের বেপরোয়া মদ বিক্রি করার কারণে পূর্বেও একবার নরসিংদীতে ঘটেছিল এক মর্মান্তিক দুর্ঘটনা। বাংলা মদ খেয়ে প্রাণহানি ঘটেছিল প্রায় শতাধিক মানুষের। আবারো ফিরে আসতে পারে বাংলা মদের সেই পুরানো ট্রাজেডি এমনটাই মনে করছেন অনেকেই। কেননা নারায়ণগঞ্জে মালিক থাকায় নরসিংদীর মানুষের প্রতি তার কোন দায়বদ্ধতা নেই। মান নিয়ন্ত্রণের কোন পদ্ধতি না থাকায় মদে যে বিষক্রিয়া মিশানো হচ্ছে কী না সেটা ধরতে পারছে না কেউ।
গোপন সূত্রে জানা যায়, অধিক মুনাফার জন্য মদে মেশানো হচ্ছে পানি। আর মদের ঝাঁঝ ঠিক রাখার জন্য তাতে মেশানো হচ্ছে রেকটিফাইড স্পিরিট। এটি এমন এক মারাত্মক বিষ যা শুধু পান করলে ম্যাথানল বিষক্রিয়া ও শকের (আঘাত) হৃদক্রিয়া বন্ধ হয়ে মানুষের মৃত্যু হয়। কেউ যদি বেঁচেও যায় তাহলেও সে চিরতরে অন্ধ হয়ে যেতে পারে।
কিন্তু পানির সাথে এটি মিশ্রিত করার কারণে তার ভয়াবহতা সেভাবে কেউ টের পাচ্ছে না। সাধারণত বিষাক্ত এই মেথিলেটেড স্পিরিট ট্যানারি শিল্পে, কাঠের আসবাব রং করার কাজে ব্যবহার হয়। দুই চামচের একটু বেশি এই স্পিরিট খেলেই চোখ জ্বালাপোড়া করে এবংমানুষ অন্ধ হয়ে যায়। আর বেশি খেলে কোমায় গিয়ে নিশ্চিত মৃত্যু হয়। সহজলভ্য এবং দাম কম হওয়ায় এই স্পিরিট দিয়ে অবৈধভাবে এখন বিষাক্ত মদ তৈরি হচ্ছে। অবৈধ সেই মদ খেয়ে অনেকেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ছে।
সাধারণত বাংলা মদ তৈরি করতে যে উপকরণ গুলি ব্যবহার করা হয়, সেগুলি হল: (১) পঁচা ভাত (২) পানি (৩) গুড় (৪) ইষ্ট (৫) মহুয়া। এই উপকরণ গুলি মিশ্রিত করে সাত দিনে এক জায়গায় রেখে পঁচিয়ে বিশেষভাবে তৈরি করা হয় বাংলা মদ। কিন্তু কতটুকু নিয়ম মেনে নরসিংদীর পাট্টার মদ তৈরি হচ্ছে সেই প্রশ্নের উত্তর জানা নেই কারো। পাট্টা নিয়ে একাধিক অনলাইন ও জাতীয় দৈনিকে সংবাদ প্রকাশ করা হলেও টনক নড়েনি নরসিংদীর মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের।
এ বিষয়ে মোবাইলে কথা হয় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের পরিদর্শক মোহাম্মদ আবুল কাশেম এর সাথে। তিনি জানান, সরকার এখান থেকে প্রতিবছর 40/50 লক্ষ টাকা রাজস্ব পায়, পাট্টা তো বন্ধ করা যাবে না। আশেপাশে যেন কেউ মদ না খায়, সে ব্যাপারে আমি নিষেধ করে দিয়েছি।
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ মোঃ মুরসিদ আহমেদ সিকদার, মোবাইল : 01728 311111
ঢাকা অফিসঃ হোল্ডিং-১৩, লাইন-৬, রোড- ১২, ব্লক-বি, মিরপুর-১১, ঢাকা-১২১৬
ফরিদপুর অফিসঃ মুজিব সড়ক, ফরিদপুর, ই-মেইলঃ [email protected]
Copyright © August, 2020-2025 @ Daily Somoyer Protyasha