আজকের তারিখ : নভেম্বর ২৩, ২০২৪, ৪:১৬ এ.এম || প্রকাশকাল : জানুয়ারী ১৩, ২০২৪, ২:০৫ এ.এম
হালখাতা করেও ধার দেওয়া সম্পুর্ন টাকা ফেরত পাইনি আওয়াল মাষ্টার
কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারীতে বন্ধু-বান্ধবদের বিভিন্ন সময়ে ধার দেওয়া সাড়ে তিন লাখ টাকার মধ্যে দেড় লাখ টাকা তুলতে সক্ষম হয়েছেন স্কুল শিক্ষক আব্দুল আওয়াল। শুক্রবার (১২ জানুয়ারি) ধারের টাকা ফিরে পেতে এ হালখাতার আয়োজন করেন তিনি। পরোপকারী আব্দুল আউয়াল বিভিন্ন সময় নিজের বন্ধু-বান্ধব ও পরিচিতজনকে এই টাকা ধার দেন। তবে দীর্ঘ সময়ে কেউ তার ধারের টাকা ফেরত দেয়নি। অবশেষে নিজের পাওনা টাকা ফিরে পেতে এমন অভিনব হালখাতার আয়োজন করেন আব্দুল আওয়াল সরকার উপজেলার আন্ধারীরঝাড় এম.এ.এম উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক। এর আগে তার এ হালখাতার আয়োজন নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেক আলোচনা হয়। হালখাতায় আসা প্রত্যেককে বিরিয়ানির পেকেট দেন তিনি।
হালখাতার মাধ্যমে পরোপকারী আব্দুল আউয়াল সরকারের কাছে ধারের টাকা ফেরত দিতে পেরে খুশি বন্ধু-বান্ধব ও পরিচিতজনেরা। তারা বলেন, বর্তমান সময়ে ধার নিয়ে কেউ আর টাকা ফেরত দিতে চান না। তার এই ধারের হালখাতার মাধ্যমে বিপদে-আপদে ধার নেওয়ার প্রচলনটি টিকে থাকবে বলে মনে করছেন তারা।
হালখাতায় আসা যোবাইদুল ইসলাম নামের একজন বলেন, আমি গত ৬ মাস আগে আমার মেয়ের ভর্তির জন্য তার কাছ থেকে সাড়ে ৬ হাজার টাকা ধার নেই। পরে সমস্যার কারণে টাকা ফেরত দিতে পারিনি। এরপর নির্বাচনের আগে আমার বাসায় হালখাতার চিঠি দেন তিনি। আজ এসে টাকা পরিশোধ করলাম। ঋণ পরিশোধ করতে পেরে ভালোই লাগছে।
এ বিষয়ে শিক্ষক আব্দুল আউয়াল সরকার বলেন, দীর্ঘ দিনের ধার দেওয়া টাকা আমার বন্ধু-বান্ধবের কাছে লজ্জায় চাইতে পারিনি। তাই এক বন্ধুর দোকানে হালখাতা খেতে গিয়ে এই চিন্তা মাথায় আসে। একজনের বিপদ-আপদে অন্যজন পাশে দাঁড়াবে এটাই স্বাভাবিক আর এই চিন্তাধারা থেকেই আমি সবাইকে টাকা ধার দিতাম। আমার কাছে টাকা থাকার পর কেউ চাইলে আমি না করতে পারি নি।
তিনি আরও বলেন, মানুষকে টাকা ধার দেওয়ার কারণে মা আমাকে অনেক গালাগালি করতেন। আমিও অনেক বার প্রতিজ্ঞা করেছি আর কাউকে টাকা ধার দেব না। কিন্তু প্রতিজ্ঞা রাখতে পারি না।
সেই শিক্ষক এভাবে টাকা ধার দিতে দিতে একসময় সাড়ে তিন লাখ টাকা বন্ধু-বান্ধব ও আত্মীয় স্বজনদের কাছে পড়ে যায়। হালখাতা করে ধারের অর্ধেক টাকা তুলতে পেরেছি। আশা করছি, বাকি টাকাটাও ফিরে পাব। অনেকে ঢাকায় আছে তাই তারা হালখাতায় আসতে পারেনি। তারা আমাকে ফোন করে টাকা দেওয়ার কথা বলেছে।
উল্লেখ্য, গত ৩ বছর ধরে ৩৯ জনকে প্রায় সাড়ে ৩ লাখ টাকা ধার দেন শিক্ষক আব্দুল আউয়াল সরকার। দুই সপ্তাহ আগে ধারের টাকা আদায়ে হালখাতার জন্য চিঠি দেন তাদেরকে। এর মধ্যে প্রায় ২০ জন হালখাতার মাধ্যমে দেড় লাখ টাকা পরিশোধ করেন। শিক্ষক আব্দুল আউয়াল সরকার উপজেলার জয়মনির হাট ইউনিয়নের আইকুমারীভাতি গ্রামের মৃত আব্দুস ছামাদের পুত্র।
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ মোঃ মুরসিদ আহমেদ সিকদার, মোবাইল : 01728 311111
ঢাকা অফিসঃ হোল্ডিং-১৩, লাইন-৬, রোড- ১২, ব্লক-বি, মিরপুর-১১, ঢাকা-১২১৬
ফরিদপুর অফিসঃ মুজিব সড়ক, ফরিদপুর, ই-মেইলঃ [email protected]
Copyright © August, 2020-2025 @ Daily Somoyer Protyasha