দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কুষ্টিয়ার-১ দৌলতপুর সংসদীয় আসনের ট্রাক প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী বিজয়ী হয়েছেন। রোববার (৭ জানুয়ারি) ভোটের ফলাফল ঘোষণার পর কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলায় নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে।
এ সময়ে সংসদীয় আসনে বেশ কয়েকটি জায়গায় পরাজিত প্রার্থীর সমর্থকদের বাড়িঘর ভাঙচুর, হামলা, মারপিট, অগ্নিসংযোগ ও হুমকিধামকির ঘটনা ঘটেছে। হামলায় প্রায় ১০ জন আহত হয়েছে । নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতার ঘটনায় দৌলতপুর থানায় একটি মামলা হয়েছে। দৌলতপুর উপজেলায় অভিযান চালিয়ে ৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। পরিস্থিতি শান্ত রাখতে গুরুত্বপূর্ণস্থানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার পিয়ারপুর ইউনিয়নের জগন্নাথপুর গ্রামের মৃত জসিম উদ্দিনের ছেলে আব্দুর রশিদ (৫০), একই গ্রামের মৃত আমদ মন্ডলের ছেলে ছাবেদ আলী মন্ডল (৪৫), শহিদুল বিশ্বাসের ছেলে রিংকু বিশ্বাস (২৫)।
কুষ্টিয়া-১ (দৌলতপুর) আসনে নির্বাচন-পরবর্তী সহিংসতায় প্রায় ১০ জন আহত হয়েছেন। এ সময় বেশ কয়েকটি বাড়িতে আগুন, নির্বাচনী অফিস ও দোকানপাট ভাঙচুর করা হয়েছে। পরাজিত ঈগল প্রতীকের প্রার্থী নাজমুল হুদা পটলের সমর্থক জগন্নাথপুর গ্রামের আবু হানিফের বাড়িতে হামলা, লুটপাট ও আগুন দেওয়া হয়। অভিযোগ উঠেছে বিজয়ী ট্রাক প্রতীকের প্রার্থী রেজাউল হক চৌধুরীর সমর্থকরা তার বাড়ি ঘরে আগুন দেয়। সোমবার সকাল ১০টার দিকে দৌলতপুর উপজেলার পিয়ারপুর ইউনিয়নের জগন্নাথপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় দৌলতপুর থানায় একটি মামলা হয়েছে।
এদিকে সোমবার সকালে রেজাউলের সমর্থক একই এলাকার সালামত ফকির, একা ফকির, মুন্না ফকিরসহ বেশ কয়েকজন আবু হানিফের বাড়িতে হামলা চালায়। তারা বেশ কয়েকটি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটান। খবর পেয়ে কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক এহেতেসাম রেজা ও পুলিশ সুপার আব্দুর রাকিবসহ প্রশাসনের লোকজন ঘটনাস্থলে যান। এ ব্যাপারে আবু হানিফের ভাই আব্দুর রহিম বাদী হয়ে দৌলতপুর থানায় একটি মামলা করেছে।
অপরদিকে সোমবার সকালে দৌলতপুর উপজেলার পিয়ারপুর ইউনিয়নের জগন্নাথপুর মধ্যপাড়ায় পরাজিত নৌকার প্রার্থী সরোয়ার জাহান বাদশার সমর্থক আব্দুল রহিম ফকিরের বসতবাড়িতে অতর্কিত হামলা চালায় ও আগুন দেয় নবনির্বাচিত সংসদ সদস্যের কর্মী-সমর্থকরা। এতে অন্তত ৩জন রক্তাক্ত জখম হন। গুরুতর আহতাবস্থায় তাদেরকে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তুফান ফকিরের অবস্থা অবনতি হলে তাকে ঢাকায় রেফার্ড করা হয়েছে।
একই সময় উপজেলার রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের বিশ্ববাত বাজার এলাকায় নৌকা প্রার্থীর নির্বাচনী অফিস ভাঙচুর করা হয়। একই সময় উপজেলার সোনাইকুন্ডি এলাকায় নৌকার কর্মী শ্রমিকলীগ নেতা মাহি বিশ্বাসের সোনাইকুন্ডি বসতবাড়িতে ইট পাটকেল ছোঁড়া ও নিরাপত্তা প্রাচীর ভাঙচুরের অভিযোগ রয়েছে ট্রাক মার্কার কর্মীদের বিরুদ্ধে।
এদিকে একই উপজেলার ফিলিপনগর ইউনিয়নের শাদীপুরে বাজার এলাকাতেও অন্তত ১০টি দোকানঘরে ভাঙচুর করে নবনির্বাচিত সংসদ সদস্য রেজাউল হক চৌধুরীর কর্মী-সমর্থকরা। এর প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছে ব্যবসায়ীরা। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করেন।
কুষ্টিয়া-১ আসনের নব নির্বাচিত সংসদ সদস্য জানান, এটি একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা। তিনি সবাইকে শান্ত থাকার অনুরোধ জানিয়েছেন। আওয়ামী লীগ বনাম জোটের শরিক দলের সাংঘর্ষিক অবস্থা এলাকায় থাকা উচিত না। আওয়ামী লীগ নেতৃত্ব এখানে বেশিরভাগ তারা নৌকার বিরুদ্ধে ভোট করেছে। আশা করি এটা সবাই তদন্ত করে দেখবেন। এর প্রতিকার এবং বিহিত করবেন। যে আক্রমণ হুমকিধামকি অত্যাচার শুরু হয়েছে। এটা অবশ্যই বন্ধ করতে হবে।
কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার এ এইচ এম আবদুর রকিব দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা কে বলেন, নির্বাচনী পরবর্তী ভিত্তিক এলাকায় সহিংসতার ঘটনায় জড়িত ৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। যে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে এই অভিযান অব্যহত থাকবে। সবাইকে সহিংসতা এড়িয়ে চলার জন্য আহ্বান জানান তিনি।
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ মোঃ মুরসিদ আহমেদ সিকদার, মোবাইল : 01728 311111
ঢাকা অফিসঃ হোল্ডিং-১৩, লাইন-৬, রোড- ১২, ব্লক-বি, মিরপুর-১১, ঢাকা-১২১৬
ফরিদপুর অফিসঃ মুজিব সড়ক, ফরিদপুর, ই-মেইলঃ [email protected]
Copyright © August, 2020-2025 @ Daily Somoyer Protyasha