২০১৩ সালের ৫ মে মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতের সমাবেশের অর্থ যোগান দিয়েছিলো বিএনপি-জামায়াত। আদালতে দেওয়া ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে এমন কথা বলেছেন হেফাজত ইসলামের ঢাকা মহানগর কমিটির তৎকালীন প্রচার সম্পাদক মুফতি ফখরুল ইসলাম। গত সোমবার মুখ্য মহানগর হাকিম দেবদাস চন্দ্র অধিকারীর আদালতে তিনি এই স্বীকারোক্তি দেন।
স্বীকারোক্তিতে তিনি আরো জানান, জামায়াতের নেতা-কর্মীরা সরাসরি হেফাজতের কর্মসূচীতে ঢুকে জ্বালাও পোড়াও করে সরকারের পতন ঘটাতে চেয়েছিল। শাপলা চত্বরের সমাবেশের ঠিক এক সপ্তাহ আগে খালেদা জিয়ার সঙ্গে বৈঠক করেন জুনায়েদ বাবুনগরী। বিএনপির পক্ষ থেকে ওই আন্দোলনে জন্য অর্থ সহায়তা দেওয়া হয়।
আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে মুফতি ফখরুল বলেছেন, ২০১৩ সালের ৫ মে’র সেই সহিংসতায় তৎকালীন বিএনপি ও জামায়াতের একাধিক শীর্ষ নেতা অর্থ সহায়তা দিয়েছিলেন। সহিংসতায় অংশ নিয়েছিলেন বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মীরাও। গত ১৪ এপ্রিল লালবাগ এলাকা থেকে মুফতি ফখরুলকে গ্রেফতারের পর পাঁচ দিনের রিমান্ডে নেয় ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। রিমান্ড শেষে সোমবার তিনি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। এরপর আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন।
[caption id="attachment_5747" align="alignnone" width="750"] ৫ মে.২০১৩ ইং তারিখে হেফাজতের সমাবেশে আসার সময় খাবার দিচ্ছে বিএনপি নেতারা।[/caption]
সেখানে মাওলানা মাঈনুদ্দীন রুহী তাকে বলেছেন, আন্দোলন ও সহিংসতার বিষয়ে দু’জন বিএনপি নেতা এবং একজন জামায়াত নেতা তাদের অর্থ সহযোগিতা করছে। এছাড়া ওই বছরের ২৮ এপ্রিল বাবুনগরীর সঙ্গে খালেদা জিয়ার গোপন বৈঠক হয়েছে। বৈঠকে হেফাজতের প্রোগ্রাম শাপলা চত্বরে স্থায়ী হলে বিএনপি ও জামায়াতও যোগ দেবে বলে আলোচনা হয়েছে। ওই দিন দুপুর থেকেই বিএনপি-জামায়াতের কর্মীরা রাস্তায় বাধা সৃষ্টি ও আগুন দেওয়া শুরু করে।’
গোয়েন্দা পুলিশের একজন কর্মকর্তা জানান, ২০১৩ সাল থেকেই জুনায়েদ বাবুনগরী বিএনপি-জামায়াত ঘেঁষা হিসেবে পরিচিত ছিলেন। আহমদ শফীর জন্য আগে তেমন সুবিধা করতে পারেননি। তার মৃত্যুর পর বাবুনগরীর আমীর নির্বাচিত হলে হেফাজত পুরোপুরি ‘অ্যান্টি গভর্নমেন্ট অ্যাক্টিভিটিজ’ শুরু করেছে। এরই ফলশ্রুতিতে গত বছরের শেষের দিকে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য স্থাপন নিয়ে বিরোধিতা শুরু করে চলতি বছরে মোদী বিরোধী আন্দোলনের নামে সহিংসতা শুরু করে।
গোয়েন্দাদের জিজ্ঞাসাবাদে মামুনুল হক বলেছেন, ২০১৩ সালে বিএনপির পেছনে থেকে ইসলামী রাষ্ট্র কায়েমের স্বপ্ন দেখতেন তারা। হেফাজত নেতারা মনে করতেন, হেফাজতই সামনে থেকে নেতৃত্ব দেবে আর বিএনপিসহ অন্যান্য রাজনৈতিক দলে তাদের পেছনে থাকবে। এমনকি রিমান্ডে নেওয়ার পরও মামুনুল হক মনে করতেন, তার দলের নেতাকর্মীরা ডিবি অফিসে হামলা চালিয়ে তাকে ছাড়িয়ে নিয়ে যাবে।
তবে দলের আমীর বাবুনগরীর বক্তব্য তাকে দেখানোর পর তিনি হতাশ হয়েছেন। এমনকি দলের মহাসচিব মাওলানা নুরুল ইসলাম স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বাসায় যাওয়াতেও হতাশ মামুনুল। প্রথম দিকে হম্বিতম্বি করলেও এখন অনেকটাই থেমে গেছেন। গত ২৬ মার্চ আন্দোলনের মাধ্যমে সরকার পতনের চেষ্টার কথাও তিনি জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছেন।
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ মোঃ মুরসিদ আহমেদ সিকদার, মোবাইল : 01728 311111
ঢাকা অফিসঃ হোল্ডিং-১৩, লাইন-৬, রোড- ১২, ব্লক-বি, মিরপুর-১১, ঢাকা-১২১৬
ফরিদপুর অফিসঃ মুজিব সড়ক, ফরিদপুর, ই-মেইলঃ [email protected]
Copyright © August, 2020-2025 @ Daily Somoyer Protyasha