নয় মাস পর প্রেমিকের হারিয়ে যাওয়া ফোন কলের রেকর্ড থেকে বেরিয়ে আসে শিক্ষক নাসির উদ্দিনের চাঞ্চল্যকর হত্যার রহস্য। পরকীয়ার কারণেই স্বামীকে হত্যা করেছে স্ত্রী ফাতেমা আক্তার মিতু।
এ ঘটনাটি ঘটেছে বরগুনা সদর উপজেলার ঢলুয়া গ্রামে। নিহত নাসির উদ্দিন বরগুনা সদর উপজেলার ঢলুয়া ইউনিয়নের মো. গয়েজ উদ্দিনের ছেলে। তিনি গোলবুনিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ছিলেন। এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার রাতে মিতু ও তার প্রেমিক রাজুকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
পুলিশ জানায়, গত বছর ঈদের আগের দিন ২৩ মে রাতে স্বামীকে খাবারের সঙ্গে রাত ৮টায় ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে অজ্ঞান করে স্ত্রী ফাতেমা আক্তার মিতু। রাত ১১টার পর রাজুকে ফোন করে তার বাসায় আসতে বলে মিতু। রাত ১১টা ৪০ মিনিটে বাসায় এসে হাত-পা বেঁধে পায়ের উপরে উঠে বসে রাজু।
স্ত্রী মিতু স্বামীর বুকের উপর উঠে কম্বল দিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যার চেষ্টা করলে প্রাণভিক্ষা চান শিক্ষক নাসির। টানা দুই ঘণ্টা ধস্তাধস্তির একপর্যায়ে নিস্তেজ হয়ে যায় নাসিরের দেহ। সফল হয় কিলিং মিশন। মিতু সবাইকে জানায় তার স্বামী অতিরিক্ত কাঁঠাল খেলে রাতে ঘুমের মধ্যে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা যান।
পরদিন সকালে তড়িঘড়ি করে নাসিরকে দাফন করা হয়। এর আগেও বেশ কয়েকবার ওই স্কুলশিক্ষককে হত্যার চেষ্টা করে তার স্ত্রী ফাতেমা আক্তার মিতু।
ঈদুল ফিতরের আগের দিন নাসিরের মৃত্যু হওয়ায় স্বজনরা এ মৃত্যু নিয়ে তেমন চিন্তিত ছিলেন না। স্বাভাবিক মৃত্যু হিসেবে সবাই মেনে নেয়।
এ ঘটনার নয় মাস পর মিতুর পরকীয়া প্রেমিক রাজুর হারিয়ে যাওয়া মোবাইল ফোনে নাসিরকে পরিকল্পিতভাবে হত্যার কথোপকথনের রেকর্ডিং পান নাসিরের স্বজনরা।
পরে থানায় অভিযোগ করলে নাসিরের স্ত্রী ফাতেমা আক্তার মিতু (২৪) এবং মিতুর পরকীয়া প্রেমিক রাজু মিয়াকে (২০) বৃহস্পতিবার রাতে গ্রেফতার করে পুলিশ।
গ্রেফতারকৃত মিতু বরগুনা পৌরসভার থানাপাড়া এলাকার মো. মাহতাব হোসেনের মেয়ে এবং রাজু মিয়া ঢলুয়া ইউনিয়নের গোলবুনিয়া এলাকার বারেক মিয়ার ছেলে।
এ বিষয়ে বরগুনার পুলিশ সুপার মুহম্মদ জাহাঙ্গীর মল্লিক সাংবাদিকদের বলেন, গত বছর ২৩ মে ঈদুল ফিতরের আগের রাতে নাসিরের মৃত্যুর খবর পান তার স্বজনরা। পরবর্তীতে নাসিরের স্বাভাবিক মৃত্যু জেনে তাকে স্বাভাবিক নিয়মেই দাফন করা হয়। ঘটনার নয় মাস ১৯ দিন পর তার স্বজনরা জানতে পারেন- নাসিরের স্ত্রী ফাতেমা আক্তার মিতু ও তার পরকীয়া প্রেমিক রাজু নাসিরকে পরিকল্পিতভাবে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে কম্বল চেপে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছে।
বরগুনা থানার ওসি কেএম তারিকুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, নাসির হত্যার মূল পরিকল্পনা ছিল স্ত্রী মিতুর। আমরা মিতু ও রাজুকে গ্রেফতার করেছি। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক স্বরজিৎ সরকার তদন্ত করবেন।
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ মোঃ মুরসিদ আহমেদ সিকদার, মোবাইল : 01728 311111
ঢাকা অফিসঃ হোল্ডিং-১৩, লাইন-৬, রোড- ১২, ব্লক-বি, মিরপুর-১১, ঢাকা-১২১৬
ফরিদপুর অফিসঃ মুজিব সড়ক, ফরিদপুর, ই-মেইলঃ [email protected]
Copyright © August, 2020-2025 @ Daily Somoyer Protyasha