আজকের তারিখ : নভেম্বর ২২, ২০২৪, ১২:২৭ পি.এম || প্রকাশকাল : অক্টোবর ২৪, ২০২৩, ৬:১১ পি.এম
আর কখনো দেখা হবেনা ‘খাদক’ ‘ভোজন রসিক’ হিসেবে পরিচিত বাবুলের
বাজি ধরে ৪ঘন্টা ১৮ মিনিটে খেয়েছেন ১৮ কেজি খাসির মাংস, ১০০টি মুরগির ডিম, ২০ থেকে ২৫ কেজি ওজনের কাঁঠাল । এক দৌড়ে ১৫ থেকে ২০ কিলোমিটার রাস্তা চরাচলসহ বিদ্যুতের গতিতে ১১ মন ওজনের কাঁঠের গুল কাঁধে নিয়ে বহন করতেন। একটানা ৪ ঘন্টা সাঁতার দিয়েছেন। ১২৫ কেজি ওজনের বিশাল দেহ নিয়ে অনায়াসে গাছে উঠে ডাব পেড়ে খেতেন। ২০১৮ সালের পর থেকে এলাকায় পরিচিতি ছিল খাদক বাবুল হিসাবে। ‘খাদক’ ‘ভোজন রসিক’ হিসেবে পরিচিতি পাওয়া বাবুল আকতারকে এক নজর দেখতে আসতেন দুরের লোকজনও। আর কখনো দেখা হবেনা তারা সাথে।
সোমবার (২৩-১০-২০২৩) রাত সাড়ে ১১টায় নিজ বাড়িতে পঞ্চাশ বছর বয়সে মারা যান ‘খাদক’ ‘ভোজন রসিক’ হিসেবে পরিচিতি পাওয়া বাবুল আকতার । ইন্নালিল্লাহী----রাজিউন।
মঙ্গলবার (২৪ অক্টোবর) সকাল ১০টায় গঙ্গারামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে জানাজার শেষে স্থানীয় কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।
পারিবারিক সুত্রে জানা গেছে, দীর্ঘদিন থেকে বাত- ব্যথায় ভুগছিলেন। একমাস আগে শারীরিক পরীক্ষায় কিডনি ও হৃদরোগ সমস্যা ধরা পড়ে তার। দুটি কিডনি তার নষ্ট হয়ে যাওয়ায় মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়েছিলেন।
মৃত্যুকালে স্ত্রী, এক ছেলে, এক মেয়ে,নাতি-নাতনিসহ অসংখ্য গুণিগ্রাহী রেখে গেছেন। বাবুল আকতার উপজেলার মনিগ্রাম ইউনিয়নের গঙ্গারামপুর গ্রামের মৃত খেলাফত উল্লাহ সরকারের ছেলে।
খাদক বাবুল আকতারের স্ত্রী লাইলা বেগম বলেন, তার স্বামীর জন্ম ১৯৭৩ সালে। বিয়ের পর শাশুড়ি বলতেন জন্মের পর পৌণে এক কেজি করে গরুর দুধ পান করতেন। বেড়ে ওঠার পাশা-পাশি আরো বেশি খাবার লাগতো। প্রাপ্ত বয়সে প্রতিদিনের সকালের নাস্তায় পাঁচ কেজি গরুর মাংস খেতেন। মুরগির ডিম হলে লাগতো ২৫ থেকে ৩০টি । এটা ছিলো তার স্বাভাবিক খাবার। আর কেউ বাজি ধরলে কখনো কখনো ১০ থেকে ১৫ কেজি মাংস, ৫০ থেকে ১০০টি ডিম, ১০০কলা খেয়ে ফেলতেন। তবে বয়স বৃদ্ধির সাথে শারিরিক সমস্যার কারনে চিকিৎসকের কথা মতো খাওয়া কমিয়ে দিয়েছিলেন।
মেয়ে যুথি খাতুন বলেন, অস্বাভিক খাদ্য ভক্ষণ করায় তার নাম পড়ে যায় ‘খাদক বাবুল আকতার’। শারিরিক সুস্থ্যতার কথা ভেবেই খাদ্য তালিকা কমিয়ে দিয়েছিলেন। ভবিষ্যৎ ভেবে পরিবারের লোকজনও সেইভাবে আর খেতে দিতো না।
২০০৫ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে জীবনের প্রথম তার বন্ধুদের সাথে রাজধানীর ঢাকায় গিয়েছিলেন। ওই দিন রাজধানীর ধানমন্ডি এলাকায় ‘ভূত রেস্তোরা’ নামে এক হোটেলের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন। বন্ধুদের সাথে বাজি ধরে রেস্তোরার লোকের সামনে ১৮ কেজি খাসির মাংস এক টেবিলে বসে খেয়েছিলেন। তার অবাক করা খাওয়া দেখে ‘খাদক’ ‘ভোজন রসিক’ হিসেবে পরিচিতি পান। এসব তথ্য জানান, বাবুরের ছেলে নবাব আলী ।
মনিগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম বলেন, বাবুল আকতার অনেক জমি ছিল। সংসারের কাজ ছাড়া অন্য কাজ করতো না। প্রায় জমি বিক্রি করে খেয়ে শেষ করেছে। মিশুক প্রকৃতির লোক ছিলেন বাবুল আকতার। তিনি বলেন তার খাবারের গল্প শুধু শুনেননি, দেখেছেনও।
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ মোঃ মুরসিদ আহমেদ সিকদার, মোবাইল : 01728 311111
ঢাকা অফিসঃ হোল্ডিং-১৩, লাইন-৬, রোড- ১২, ব্লক-বি, মিরপুর-১১, ঢাকা-১২১৬
ফরিদপুর অফিসঃ মুজিব সড়ক, ফরিদপুর, ই-মেইলঃ [email protected]
Copyright © August, 2020-2025 @ Daily Somoyer Protyasha