এদিকে অক্টোবরজুড়েই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এবং উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তাদের নির্বাচনি প্রশিক্ষণ চলছে। মাসব্যাপী ৪১টি ব্যাচের মাধ্যমে ৪৯২ জন ইউএনও এবং ৫২২ জন উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তাকে প্রশিক্ষণ দেবে ইসি। এ প্রশিক্ষণে নির্বাচনি আইন কানুনের পাশাপাশি অনলাইন মনোনয়নপত্র দাখিল ও নির্বাচনী অ্যাপের বিষয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে ৭ অক্টোবর নির্বাচন কমিশনের আঞ্চলিক ও জেলা কর্মকর্তাদের সঙ্গে ঢাকায় বৈঠক করে ইসি। ডিসি-এসপিদের প্রথম ধাপের প্রশিক্ষণ হয়েছে ১৪-১৫ অক্টোবর। এ ছাড়া চলছে ভোট গ্রহণ কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণের জন্য ৩ হাজার ২০০ প্রশিক্ষক তৈরির কাজও।
ইসি সূত্র জানিয়েছে, সংসদ নির্বাচনে ভোট কেন্দ্র হচ্ছে ৪২১০৪টি। কক্ষ হচ্ছে ২৬১৯১২টি। প্রিসাইডিং অফিসারের সংখ্যা হবে ৪২১০৪ জন। সহকারী প্রিসাইডিং অফিসার হবে ২৬১৯১২ জন। পোলিং অফিসার প্রয়োজন হবে ৫২৩৮২৪ জন। মোট কর্মকর্তার ১০ ভাগ বেশি নিয়োগ করা হবে। সব মিলে ৯ লাখ ১০ হাজার ৬২৪ জন নিয়োগ পাবেন। এ ছাড়া এই সংখ্যা বেড়ে প্রায় ১০ লাখ হতে পারে বলে জানিয়েছে ইসি। নির্বাচনি কেনাকাটাও প্রায় শেষ পর্যায়ে। আগামী ৭ নভেম্বরের মধ্যে নির্বাচন কমিশনের হাতে সব মালামাল চলে আসবে। এ ছাড়া সংসদ নির্বাচনের ভোট কেন্দ্র এবং ভোটার তালিকা দিয়েই উপজেলা নির্বাচন করবে ইসি; এ জন্য অনেক কাজেই এগিয়ে থাকবে। প্রস্তুত রয়েছে ভোট কেন্দ্রে এবং ভোটার তালিকাও। ইসি জানিয়েছে, নভেম্বরের শুরু বা মাঝামাঝিতে সংসদ নির্বাচনের তফসিল দিয়ে ডিসেম্বরের শেষ বা জানুয়ারির শুরুতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
একজন নির্বাচন কমিশনার বলেন, আশা করছি নভেম্বরের শুরুর দিকে তফসিল ঘোষণা হবে। তার আগে দিনক্ষণ নিয়ে কমিশন বৈঠকে সিদ্ধান্ত হবে। তবে ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে বা জানুয়ারির শুরুতে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন হবে বলে আশাপ্রকাশ করেন এই নির্বাচন কমিশনার। তিনি বলেন, আমরা ঐকান্তিক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি একটা অবাধ, গ্রহণযোগ্য, অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন উৎসবমুখর পরিবেশে অনুষ্ঠানের জন্য। আশা করছি সব রাজনৈতিক দল নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে। অন্যদিকে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রথমবারের মতো নাগরিকদের চাহিদা মোতাবেক নানা তথ্য মোবাইলে খুদেবার্তায় জানাবে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এ জন্য ১০ লাখ খুদেবার্তা সংরক্ষণ করছে সংস্থাটি।
ইসি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে নির্বাচনি অ্যাপ তৈরি করা হচ্ছে। এতে ভোটার নম্বর, ভোটকেন্দ্রের নাম, এলাকার নাম থাকবে। একজন ভোটার সহজেই তার ভোটার নম্বর ও কেন্দ্রের নামসহ অবস্থান জানতে পারবে। এ ছাড়া কোন নির্বাচনে প্রার্থী কে, কাদের মনোনয়নপত্র বৈধ কিংবা অবৈধ হলো, কারা মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করলেন, কোন প্রার্থীর প্রতীক কী ইত্যাদি জানা যাবে।
অন্যদিকে নির্বাচনী ফলাফলও পাওয়া যাবে অ্যাপটিতে। এতে ভোট চলাকালীন একটি নির্দিষ্ট সময় পরপর থাকবে ভোটার উপস্থিতির তথ্য। রিটার্নিং কর্মকর্তা ফলাফল ঘোষণার পরপর পাওয়া যাবে ফলাফলের হালনাগাদ তথ্য। এসব তথ্যই দেওয়া হবে মোবাইলে খুদেবার্তার মাধ্যমে। ইতোমধ্যে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিতে জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন (এনআইডি) অনুবিভাগকে নির্দেশনা দিয়েছে ইসি। এনআইডি অনুবিভাগের স্মার্টকার্ড প্রকল্পের অধীন খুদেবার্তা সার্ভিস রয়েছে, যেখান থেকে ইসির কলসেন্টার পরিচালিতও হয়। এক্ষেত্রে সেখান থেকে ১০ লাখ খুদেবার্তা সংরক্ষণ করতে বলেছে ইসি।
নির্দেশনায় বলা হয়েছে, অনলাইনে মনোনয়নপত্র জমা ও নির্বাচনী অ্যাপে যথাক্রমে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার ইচ্ছুক প্রার্থী ও ভোটার/ব্যবহারকারীদের নানাবিধ নোটিফিকেশন স্ট্যাটাস আপডেট বার্তা পাঠানোর জন্য এসএমএস সার্ভিস প্রয়োজন। এই অবস্থায় নির্বাচন সংক্রান্ত কাজে ১০ (দশ) লাখ খুদেবার্তা এক বছরের জন্য আইডিইএ প্রকল্প (ফেজ-২) থেকে আইসিটি অনুবিভাগকে দেওয়ার জন্য নির্দেশনা দিয়েছে ইসি। এ বিষয়ে ইসির অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ বলেন, ভোটার, প্রার্থীদের জন্য নির্বাচনী অ্যাপ তৈরি করা হচ্ছে। এটি ব্যবহার করে কেউ তথ্য চাইলে তা মোবাইলে এসএমএসের মাধ্যমে দেওয়া হবে।