আজকের তারিখ : এপ্রিল ২২, ২০২৫, ১:১০ এ.এম || প্রকাশকাল : অক্টোবর ১, ২০২৩, ১:১১ পি.এম
সংস্কারের অভাবে সৌন্দর্য হারাছে মুঘল সম্রাট শাহ সুজার নির্মিত মসজিদ

প্রয়োজনীয় সংস্কারের অভাবে সৌন্দর্য ও অবকাঠামো হারাতে বসেছে মুঘল আমলে নির্মিত ঝালকাঠি জেলার নলছিটি উপজেলার সম্রাট শাহ সুজার মল্লিকপুর জামে মসজিদ। নলছিটি বরিশাল আঞ্চলিক মহাসড়ক সংলগ্ন পৌর শহরের (৫-নং) ওয়ার্ড কেন্দ্রীয় গোরস্থানের পাশে প্রাচীন এই জামে মসজিদ অবস্থিত ।
এক গম্বুজ বিশিষ্ট এই মসজিদটি সপ্তদশ শতকের মাঝামাঝি সময়কালে নির্মাণ করা হয়ছে বলে ধারণা করা হয়। শাহজাহান বিশ্বাসসহ স্থানীয় অধিকাংশ প্রবীণদর মতে, মুঘল সম্রাট শাহ সুজা দক্ষিন বঙ্গের নৌপথে ডাকাতি ঠেকাতে সুগন্ধা নদীর তীরবর্তী বর্তমান মগড় ইউনিয়ন সংলগ্ন এলাকায় একটি দূর্গ গড়ে তোলেন।স্থানীয় মুসল্লীরা তার আগমনের খবর পেয়ে তার কাছ একটি মসজিদ নির্মাণের আবেদন করেন। পরে তাদের আবেদন মঞ্জুর করে এই মসজিদটি তিনি নির্মাণ করে দেন।
অসাধারণ এই নির্মাণশৈলীর এক গম্বুজ বিশিষ্ট এই মসজিদটি মুঘল আমলের এক বিস্ময়কর সষ্টি। প্রাচীন এই মসজিদটি নিঃসন্দেহে নলছিটি উপজলার অন্যতম ঐতিহাসিক নিদর্শন হিসেবে পরিচিত। ৩০ ফুট লম্বা এবং ১৭ ফুট চওড়া এই মসজিদটি ১৬৪৮ সালে মুঘল শাসনামলের স্থাপত্যশলীর এক চমৎকার নিদর্শন বহন করছে। ইতিহাস ঐহিত্য প্রেমীরা প্রায়ই দেশের দূর দূরান্ত থেকে মসজিদটি দেখতে ভীর করেন। তবে সঠিক নজরদারী, সংস্কার ও সংরক্ষণের উদ্যোগ না থাকায় স্থাপত্য কলা বিনষ্ট হওয়ার পথে। এর ফলে হারিয়ে যেতে বসেছে মসজিদটির ইতিহাস ঐতিহ্য।
জানা যায়, শাহ সুজা ১৬১৬ সালের ২৩ জুন ভারতের আজমিরে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি মুঘল সম্রাট শাহজাহান এবং তাঁর রানী মমতাজ মহলের দ্বিতীয় পুত্র ও চতুর্থ সন্তান ছিলেন। শাহজাহানর সৎ মা সম্রাজ্ঞী নুর জাহান প্রিন্স শাহ সুজাকে তাঁর জন্মের পর দত্তক দেন। তাঁর উচ্চ পদমর্যাদা, রাজনৈতিক প্রভাব এবং জাহাঙ্গীরের তার প্রতি স্নেহের কারণে তাকে এই নতুন দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। সুজা তাঁর পিতামহ সম্রাট জাহাঙ্গীরের বিশেষ প্রিয় হওয়ায় সম্রাজ্ঞীর জন্যও এটি একটি সম্মানের বিষয় ছিল। শাহ সুজা ১৬৩৯ থক ১৬৬০ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত রাজত্ব করেন। ১৬৪৮ সালে সুগন্ধা নদীর তীরে নলছিটির মল্লিকপুর এলাকায় তাঁর নামে নির্মিত হয় এই শাহ সুজা মসজিদ।
মসজিদের মুসুল্লি প্রভাষক মেসবাহ উদ্দিন খান রতন বলন, প্রাচীন নিদর্শন এই মসজিদটি যেকোনো মূল্যে রক্ষা করা উচিত। কয়েকশত বছর আগের মুঘল নির্মাণশৈলী এখনো মুগ্ধ করার মতো। তবে সংস্কার না করলে হয়তো আর বেশি দিন স্থাপনাটি টিকে থাকতে পারবে না। জুম্মার নামাজসহ প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ এখানে স্থানীরা আদায় করেন।
মসজিদ কমিটির সভাপতি মো: হাবিবুর রহমান মল্লিক বলেন, মুঘল সম্রাট শাহ সুজার আমলে নির্মিত এই মসজিদটি নলছিটি উপজলার অতীত, ঐতিহ্য ও গৌরব বহন করে। বাংলাদশ প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের উদ্যোগে এই মসজিদকে প্রাচীন পুরাকীর্তি হিসেবে ঘোষণা করা একান্ত প্রয়াজন।
নলছিটি পৌর মেয়র বীর মুক্তিযাদ্ধা আব্দুল ওয়াহেদ খান বলেন, মসজিদটি মুঘল আমলে নির্মিত। আমাদের মুরব্বিরা এই মসজিদে নামাজ পড়তেন, তখন অত্র এলাকায় মসজিদের সংখ্যা ছিল অনেক কম। শাহ সুজার আমল নির্মিত মসজিদটি সংরক্ষণর অভাব হারিয়ে যেতে বসেছে, এটি রক্ষা করা প্রয়োজন।
উপজলা নিবার্হী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. নজরুল ইসলাম বলেন, নির্ধারিত ফরম পূরণ কর আবেদন করলে সংস্কারের জন্য সুপারিশ করা যাবে। তবে প্রাচীন নিদর্শন গুলো বাংলাদেশ প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর রক্ষণাবেক্ষণ করে থাকে।
সম্পাদক ও প্রকাশক: এ. এস.এম
মুরসিদ, মোবাইল: 01728 311111
ঢাকা অফিসঃ হোল্ডিং-১৩, লাইন-৬, রোড- ১২, ব্লক-বি, মিরপুর-১১, ঢাকা-১২১৬।
Copyright © August 2020-2025 @ Daily Somoyer Protyasha