বরগুনার আমতলী উপজেলার আড়পাঙ্গাশিয়া ইউনিয়নের প্রায় দেড়শো বছরের পুরনো ১০ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য তারিকাটার খালটি স্থানীয় প্রভাবশালীরা ভূমি অফিসের কর্মকর্তাদের সহযোগিতায় খাল সরল জমি দেখিয়ে স্থায়ী বন্দোবস্ত নিয়েছেন ।
বন্দোবস্ত প্রাপ্ত জমির মালিকরা খালটি বিভিন্ন স্থানে বাঁধ দিয়ে পানি নিষ্কাশন বন্ধ করে মাছ চাষ করছেন
এতে আমতলী উপজেলার আড়পাঙ্গাশিয়া ইউনিয়নের তারিকাটাওপার্শ্ববর্তী কলাপাড়া উপজেলার চাকামইয়া ইউনিয়নের ইউনিয়নের দারোগাতবক গ্রামের প্রায় ৩শ' একর কৃষিজমিও বনজ সম্পদ ধ্বংস হওয়ার পথে। খালের দুই পারের ১০/১১টি গ্রামের মানুষ সীমাহীন দুর্ভোগে পড়েছে।
জানাগেছে, উপজেলার আড়পাঙ্গাশিয়া ইউনিয়নের তারিকাটা,দক্ষিণ তারিকাটা, পশ্চিম তারিকাটা, মধ্য তারিকাটা, রক্ষাতলা, চাকামইয়ার
ইউনিয়নের,আমতলা,পশ্চিম চাকামইয়া, উত্তর চাকামইয়া,দারোগাতবক, গ্রামের ওপর দিয়ে প্রবাহিত ১০ কিলোমিটর দৈর্ঘ্য তারিকাটার খাল। এ খালের তারিকাটা মৌজার হাল ৬২৪৮,৬২৪৯,৬২৫০ দাগে তারিকাটা খাল, এবং হাল ৬৬৪৬ নং দাগে আড়পাঙ্গাশিয়া খাল নামে পরিচিত।
উক্ত খালে ভুমি অফিসের কর্মকর্তাদের যোগ সাজসে ২০০৯-২০১০ সালে আমতলী সাবরেজিষ্ট্রি অফিস ইং ০৫/০২/২০১৫ তারিখেমো মোজাম্মেল পিতা ছত্তার হাওলাদার ও রাহিমা বেগমের নামে ৯৯ বছরের জন্য ৮০৯ বন্দোবস্ত কেস কবুলিয়াত রেজিষ্ট্রি হয়।
২০১৬ সালে ভূমি অফিস জমি বন্দোবস্তকারীদের জমি বুঝিয়ে দেয়। এর পর থেকে বন্দোবস্তকারীরা খালগুলোতে বাঁধ দিয়ে মাছ চাষ করছেন । খালের বিভিন্ন অংশে বাঁধ দেওয়ায় পানি নিষ্কাশন হচ্ছে না। এতে ১১ গ্রামের প্রায় ৩ শ' একর জমিতে চাষাবাদে ব্যাপক সমস্যা হচ্ছে। খালের তীরে ও মধ্যের গোলগাছসহ বিভিন্ন বনজ সম্পদ ধ্বংস করে দিয়েছে।
তারিকাটা গ্রামের মো. আব্দুর রহমান,এনামুল,হাশেম, মিজান, সাইদুল,রাব্বানী ও জাবের মুরুব্বী বলেন, প্রতিবছর আমাদের এলাকার কৃষকরা জমিতে বোরো ধানের চাষ করতাম । কিন্তু খালে বাঁধের কারণে পানি না পাওয়ায় কৃষকরা চাষাবাদ করতে পারছেনা ।
ক্ষতিগ্রস্থ কৃষক আবু সালেহ জানান, ভুমি অফিস ১০ /১৫ ফুট গভীর খালকে সরল জমি দেখিয়ে বন্দোবস্ত দেখিয়ে কৃষকদের সর্বনাশ করেছে। কৃষক মো. রহমান মিয়া বলেন, খাল থেকে পানি ব্যবহার করতে না দেওয়ায় কৃষকদের ভিষন সমস্যা হচ্ছে তারা এ খালের বাঁধ কেটে পানি নিষ্কাশন ও খননের দাবি জানান।
আড়পাঙ্গাশিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মোসাঃ সোহেলী পারভীন মালা বলেন, গভীর খালের বন্দোবস্তগুলো বাতিল করে সকলের জন্য খালটি উন্মুক্ত করে দেয়ার জন্য প্রশাসনের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
এ ব্যাপারে আমতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মাদ আশরাফুল আলম বলেন, সরেজমিন পরিদর্শন করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।