ফরিদপুরের সালথায় গত সোমবার রাতে তাণ্ডবের ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনি পদক্ষেপ নিতে চান বলে জানিয়েছেন ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার মো. খলিলুর রহমান।
শুক্রবার দুপুরে সালথা উপজেলা পরিষদের বিভিন্ন সরকারি কার্যালয়ে ধ্বংসযজ্ঞ পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘কোনো বক্তব্য নয়, সরাসরি অ্যাকশনে যেতে চাই।’
সালথার ওই ঘটনায় এ পর্যন্ত ৫০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর মধ্যে ২৬ জনকে রিমান্ডে এনে জ্ঞিাসাবাদ করছে পুলিশ।
বিভাগীয় কমিশনার মো. খলিলুর রহমান শুক্রবার দুপুর দেড়টার দিকে সালথায় এসে পৌঁছান। জুমার পর তিনি ধংসযজ্ঞ পরিদর্শনে যান। প্রথমে উপজেরা পরিষদের নিচ তলায় অবস্থিত কৃষি কর্মকর্তার কার্যালয় দেখেন। এরপর একে একে ত্রাণের গোডাউন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বাসভবন সংলগ্ন গ্যারেজ, ভূমি অফিস, মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবন এবং সবশেষে থানা পরিদর্শন করেন।
পরিদর্শনকালে ঘটনা সম্পর্কে সাংবাদিকরা তার বক্তব্য জানতে চাইলে তিনি সরাসরি অ্যাাকশনে যাওয়ার কথা বলেন।
এসময় উপস্থিত ছিলেন ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক অতুল সরকার, পুলিশ সুপার মো. আলিমুজ্জামান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ ও তদন্ত) জামাল পাশা, সালথা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. ওয়াদুদ মাতুব্বর, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. দেলোয়ার হোসেন মিয়া, সাধারণ সম্পাদক ফারুকুজ্জামান ফকির মিয়া প্রমুখ।
গত সোমবার (৫ এপ্রিল) সন্ধ্যায় উপজেলার সোনাপুর ইউনিয়নের ফুকরা বাজারে লকডাউনের কার্যকারিতা পরিদর্শনে যান উপজেলা সহকারী কমিশনার। এ সময় তার গাড়ি থেকে নেমে কয়েক ব্যক্তি বাজারে উপস্থিত কয়েকজনকে লাঠিপেটা করেন। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে স্থানীয়রা গুজব ছড়িয়ে সন্ধ্যা ৭টা থেকে রাত ১১ পর্যন্ত কয়েক হাজার মানুষ উপজেলা চত্বরে দেশীয় অস্ত্র ঢাল-কাতরা ও লাঠিসোটা নিয়ে প্রবেশ করে বিভিন্ন সরকারি দপ্তর ও থানায় এই তা-ব চালায়। দুটি সরকারি গাড়ি পুড়িয়ে দেয়া হয়।
এ ঘটনায় এ পর্যন্ত মোট পাঁচটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। পাঁচটি মামলায় ২৬১ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাতসহ মোট আসামি চার হাজার।
পুলিশ সুপার মো. আলিমুজ্জামান সাংবাদিকদের বলেন, পাঁচটি মামলার অজ্ঞাতনামা আসামি আলাদা আলাদা করে যোগ করলে তার সংখ্যা ১৭ হাজারের কাছাকাছি হবে। কিন্তু প্রকৃত পক্ষে অজ্ঞাতনামা আসামির সংখ্যা চার হাজারের বেশি হবে না। কেননা অজ্ঞাত নামা একই ব্যক্তিরা ওই সকল মামলাগুলির আসামি।
ফরিদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. জামাল পাশা বলেন, সালথার ঘটনায় এ পর্যন্ত ৫১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর মধ্যে একজন ঢাকা চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। তিনি হলেন মিরান মোল্লা (৩৫)। তিনি উপজেলার ভাওয়াল ইউনিয়নের দরজাপুরুরা গ্রামের আব্দুর রব মোল্লার ছেলে। গত সোমবার ওই তা-বের সময় গুলিবিদ্ধ হয়েছিলেন। বুধবার দুপুরে ঢাকার মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।
জামাল পাশা আরও বলেন, এছাড়া আরও দুইজন গুলিবিদ্ধ হয়ে গ্রেপ্তার হয়েছেন। এ দুইজন হলেন, সোনাপুর ইউনিয়নের রাঙারদিয়া গ্রামের আবুল খায়ের (২৫) ও ভাওয়াল ইউনিয়নের গোপালীয়া গ্রামের মো. আমীর (৩০)। এদের মধ্যে আবুল খায়ের পুলিশি পাহারায় ফরিদপুরের বঙ্গবন্ধু মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ট্রমা সেন্টারে এবং মো. আমীর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তাদের আদালতে সোপর্দ করা হয়নি।
এ পর্যন্ত আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে ৪৮ জনকে। এর মধ্যে ১১ জনের দুইদিন করে এবং ১৫ জনের পাঁচ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর হয়েছে। তাদের রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। বাকি ২২ জনের ১০ দিন করে রিমান্ডের আবেদন জানিয়ে শুক্রবার জেলার মূখ্য বিচারিক হাকিমের আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ মোঃ মুরসিদ আহমেদ সিকদার, মোবাইল : 01728 311111
ঢাকা অফিসঃ হোল্ডিং-১৩, লাইন-৬, রোড- ১২, ব্লক-বি, মিরপুর-১১, ঢাকা-১২১৬
ফরিদপুর অফিসঃ মুজিব সড়ক, ফরিদপুর, ই-মেইলঃ [email protected]
Copyright © August, 2020-2025 @ Daily Somoyer Protyasha