কুষ্টিয়া শহরের প্রাণকেন্দ্র মজমপুর এলাকায় এক আইনজীবীর ভাড়া বাসা থেকে এক তরুণীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
২২আগষ্ট মঙ্গলবার সন্ধ্যায় জিলা স্কুলের সামনের মফিজ উদ্দীন লেনের একটি পাঁচতলা বাড়ির তৃতীয় তলার একটি কক্ষ থেকে কুষ্টিয়া মডেল থানার পুলিশ লাশটি উদ্ধার করে। ঘটনার পর থেকে ওই আইনজীবী পলাতক রয়েছেন।
মারা যাওয়া তরুণীর নাম জান্নাতুল ফেরদৌস ওরফে তুলি (২১)। তিনি শহরের মোল্লাতেঘরিয়া এলাকায় ওহিদুল মোল্লার মেয়ে। তিনি কুষ্টিয়া নার্সিং ইনস্টিটিউটের প্রথম বর্ষের ছাত্রী ছিলেন।
পুলিশ বলছেন, জান্নাতুল ফেরদৌস আত্মহত্যা করতে পারেন। সুরতহাল শেষে ময়নাতদন্ত করা হবে। লাশ কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। তবে তরুণীর পরিবারের দাবি, জান্নাতুলকে হত্যা করে লাশ ঝুলিয়ে রাখা হয়েছিল।
শরিফা খাতুন, জান্নাতুলের মা পিতা ওহিদুল মোল্লা বলেন,সকাল আটটার দিকে ১০০ টাকা নিয়ে বাড়ি থেকে বের হয় জান্নাতুল। আজ (২২ আগস্ট) তার জন্মদিন। জন্মদিনে বান্ধবীদের সঙ্গে ঘুরতে যাওয়ার কথা বলে বের হয়। সন্ধ্যায় বড় মেয়ের জামাইকে ওই উকিল (মাহমুদুল হাসান) ফোন করে জানান, আমার মেয়ে আত্মহত্যা করছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার সন্ধ্যার দিকে কুষ্টিয়া মডেল থানার পুলিশ জাতীয় জরুরি সেবা নম্বরের (৯৯৯) ফোনকল পেয়ে মফিজ উদ্দীন লেনের গোলাম নবীর বাড়িতে যান। সেখানে তিনতলার একটি ফ্ল্যাটের ভাড়াটে আইনজীবী মাহমুদুল হাসান ওরফে সুমনের ফ্ল্যাটের একটি কক্ষের দরজা ভেঙে পুলিশ ঝুলন্ত অবস্থায় জান্নাতুলের নিথর দেহ উদ্ধার করে। পরে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
জরুরি বিভাগের সামনে আহাজারি করছিলেন জান্নাতুলের মা শরিফা খাতুন ও বড় বোন জান্নাতুন তাসনিম।
শরিফা খাতুন বলেন, আমার মেয়ে আত্মহত্যা করার মেয়ে নয়। সে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ে। তাকে মেরে ফেলা হয়েছে। আমি এর বিচার চাই। তিনি আরও বলেন, সকাল আটটার দিকে ১০০ টাকা নিয়ে বাড়ি থেকে বের হয় জান্নাতুল। আজ (২২ আগস্ট) তার জন্মদিন। জন্মদিনে বান্ধবীদের সঙ্গে ঘুরতে যাওয়ার কথা বলে বের হয়। সন্ধ্যায় বড় মেয়ের জামাইকে ওই উকিল (মাহমুদুল হাসান) ফোন করে জানান, আমার মেয়ে আত্মহত্যা করছে।
ভবনের মালিক গোলাম নবী বলেন, চলতি মাসের ১০ তারিখ ওই আইনজীবী বাসা ভাড়া নেন। গত শুক্রবার তিনি বিয়ে করেছেন। স্ত্রী নিয়ে বাসায় থাকেন। ঘটনার সময় বাসায় ওই আইনজীবী ও তাঁর স্ত্রী ছিলেন। সন্ধ্যার দিকে জানতে পারেন, ফ্ল্যাটে এই ঘটনা ঘটেছে। এর বেশি কিছু জানেন না।
গোলাম নবীর স্ত্রী মিতা খাতুন বলেন, বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে তিনি অপরিচিত এক মেয়েকে ছাদে হাঁটতে দেখেন। অপরিচিত দেখে কোন ফ্ল্যাটে এসেছেন, জানতে চান। তিনি আইনজীবীর কথা জানান। এরপর কী হয়েছে, জানেন না। পরে সন্ধ্যার পর পুলিশ এসে লাশ নিয়ে যায়।
ঘটনার পর থেকে আইনজীবী মাহমুদুল হাসান পলাতক। তাঁর স্ত্রীকেও পাওয়া যায়নি। মাহমুদুল হাসানের দুটি মোবাইল নম্বরে ফোন দেওয়া হলে সেগুলো বন্ধ পাওয়া যায়।
কুষ্টিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সৈয়দ আশিকুর রহমান বলেন, মাহমুদুল হাসান কুষ্টিয়া জজ কোর্টের আইনজীবী। তাঁর ভাড়া বাসার একটি কক্ষের দরজা ভেঙে ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়। তবে সেখানে আইনজীবীকে পাওয়া যায়নি। এটা আত্মহত্যা নাকি অন্য কিছু, সেটা তদন্ত করা হচ্ছে।
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ মোঃ মুরসিদ আহমেদ (লিটু সিকদার), মোবাইল : 01728 311111
ঢাকা অফিসঃ হোল্ডিং-১৩, লাইন-৬, রোড- ১২, ব্লক-বি, মিরপুর-১১, ঢাকা-১২১৬
ফরিদপুর অফিসঃ মুজিব সড়ক, ফরিদপুর, ই-মেইলঃ [email protected]
Copyright © August, 2020-2025 @ Daily Somoyer Protyasha