মুক্তিযোদ্ধারা নিঃসন্দেহে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান। তাদের ত্যাগ ও অবদানে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে। কিন্তু স্বাধীনতার ৫০ বছর অতিবাহিত হলেও আজও বাংলাদেশে বিভিন্ন সময় পাওয়া যায় ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা। জাতি হিসেবে সেটা আমাদের জন্য অত্যন্ত লজ্জার ও কলঙ্কের।
এমনই এক বিতর্কিত মুক্তিযোদ্ধার সন্ধান মিলেছে, বেলাবো উপজেলার ধুকুন্দী (উত্তর পাড়া) গ্রামে। বিতর্কিত ওই মুক্তিযোদ্ধার নাম শেখ মো: আতাউর রহমান, তিনি ধুকুন্দি গ্রামের মৃত শেখ মো: আসমত আলীর ছেলে।
১৯৭৯ সালে শিবপুর উপজেলাধীন জয়নগর আলহাজ্ব আফসার উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয় থেকে তৃতীয় বিভাগে এসএসসি পরীক্ষায় পাশ করেন তিনি। তার পরীক্ষার কেন্দ্র:শিবপুর, রোল নং-৪৬৬২৮, রেজি নং-১৭৩১২/৭৬, বিভাগ: বিজ্ঞান, তার জন্ম তারিখ ০৩ /০১/ ১৯৬৩। অর্থাৎ ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় তার বয়স ছিল আট বছর। কিন্তু এই তথ্য গোপন করে ভোটার আইডি কার্ডে বয়স বৃদ্ধি করেন, তিনিই মুক্তিযোদ্ধা হয়ে গেছেন। ২০০৯ সাল থেকে(বেসামরিক গেজেট 3482) তিনি নিয়মিত ভাতা পাচ্ছেন। মুক্তিযোদ্ধার পরিচয় দিয়ে এক ছেলেকে সরকারি চাকুরি দিয়েছেন তিনি।
সরেজমিন তার বাড়িতে গিয়ে কথা বললে তিনি স্বীকার করে বলেন, বয়স কমিয়ে তিনি পরীক্ষা দিয়েছিলেন। যিনি বয়স কমিয়ে পরীক্ষা দিতে পারেন, তিনি বয়স বাড়িয়ে মুক্তিযোদ্ধা কেন হতে পারবেন না! এলাকাবাসী বিষয়টি জানতে পেরে তার বিরুদ্ধে লিফলেট বিতরণ করেছেন। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন কিন্তু কিছুতেই কিছু হচ্ছে না। কারণ তার ছেলে অলি মাহমুদ ওরফে ভাস্কর অলি বর্তমানে নরসিংদী জেলা আওয়ামী লীগের সক্রিয় সদস্য ও জেলা যুবলীগের গ্রন্থ ও প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক। যদিও তার বাবা বর্তমান আমলাব ইউনিয়ন বিএনপি'র সদস্য।
তার বাড়ির সামনে দিয়ে ধুকুন্দি থেকে আমলাব বাজারের রাস্তার সরকারের উন্নয়নমূলক কাজে বাধা দিলে, চাঁদা দাবি করায় তার ছোট ছেলে ভাস্কর অলির বিরুদ্ধে সম্প্রীতি হয়েছে চাঁদাবাজির মামলা। বেলাব থানা সিআর মামলা নং ৩২৬/২০২৩, এর ২ নাম্বার আসামি ভাস্কর অলি। নরসিংদী বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলার কার্যক্রম চলমান।
নরসিংদী জেলা গোয়েন্দা সংস্থা ডিবি, মামলাটি তদন্ত করছেন। রাজনীতির মাঠে এই ধরনের সুবিধাবাদী ও চাটুকারদের দৌরাত্বে বিতর্কিত হচ্ছে সরকার। এসব বিষয়ে সঠিক তদন্ত করে যথাযথ পদক্ষেপ নিবেন উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষ এমনটাই প্রত্যাশা, ধুকুন্দি গ্রামের সাধারণ মানুষের।