আজকের তারিখ : মে ২১, ২০২৫, ৭:০৩ পি.এম || প্রকাশকাল : অগাস্ট ১৮, ২০২৩, ২:৪৫ পি.এম
মাগুরা জেলা মৎস্য ভবন অফিসে রেনুপোনা উৎপাদন বন্ধ

ভ্যান চালক নজির হোসেন বলেন, জেলা মৎস্য অফিসের চত্বরে সর্বমোট ৫ টি পুকুর আছে। ২ টি পুকুরে রুই, কাতলা, মৃগেল, সিলভারের রেনুপোনা ও ৩ টিতে রয়েছে বড় মাছ। অফিসের লোকবল কম থাকায় আমার স্ত্রী অফিসে চাকরি করে সেই সুবাদে আমি এখানে দেখাশোনা করি।
মাগুরা জেলার সীমানা জুড়ে জনসংখ্যা রয়েছে প্রায় ৯ লক্ষ ১৮হাজার ৪১৯ জন। এ জেলার উল্লেখযোগ্য নদীগুলো হচ্ছে গড়াই নদী, নবগঙ্গা নদী, ফটকি নদী, হানু নদী, মধুমতি নদী, মুচিখালি নদী, কুমার নদী, চিত্রা নদী, ভৈরব নদী, সিরাজপুর হাওর নদী, বেগবতী নদী প্রভৃতি।
হ্যাচারি ফার্ম ম্যানেজার অহিদুজ্জামান বলেন, মাগুরা জেলায় মোট মাছের চাহিদা রয়েছে ১৮ হাজার ৮৮৬ মেট্রিক টন। এর বিপরীতে বর্তমান উৎপাদন ১৭ হাজার ৩২৮ মেট্রিক টন। আগে উৎপাদন ছিল ১৬ হাজার ৪৭ মেট্রিক টন। সে হিসাবে এ জেলায় বর্তমানে মাছের চাহিদার তুলনায় ঘাটতি রয়েছে ১ হাজার ৫৪৭ মেট্রিক টন।
মাগুরা মৎস্য অফিসের কাগজ কলমে বেড়েছে উৎপাদন। মৎস্য অভয়াশ্রম স্থাপন, উন্মুক্ত ও সরকারি জলাশয়ে পোনা অবমুক্তি, খাঁচায় মাছ চাষ, দেশি-বিদেশি মাছের প্রদর্শনী, বেসরকারি বিভিন্ন উদ্যোগ, ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনাসহ বিভিন্নভাবে মৎস্য আইন বাস্তবায়নের ফলে মাছের এই উৎপাদন বাড়ানো সম্ভব হয়েছে বলে দাবী করেন কর্মকর্তারা।
তবে এলাকাবাসী বলছেন মাছ চাষিদের অভিমত ভিন্ন। তারা জানান কর্মকর্তাদের মাঠ পর্যায়ে পাওয়া যায় না। মাগুরায় মাছের রেনু উৎপাদন হচ্ছে না। আর যা হচ্ছে অফিসের কাগজ কলমে সরেজমিনে কেউ উৎপাদন দেখাতে পারবেন না।
মৎস্য অফিস সংলগ্ন স্থানীয় বাসিন্দা রিপন হোসেন বলেন, মাগুরা ফিশারী অফিসের এক কর্মকর্তা অবসর গেলে রেনুপোনা উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়। এরপর থেকে যশোর চাঁচড়া বাজার এলাকা থেকে রেনুপোনা ক্রয় করে এনে মাগুরা ফিশারীর হ্যাচারিতে রেখে বিক্রি করা হয়। রেনুপোনা বিক্রির লভ্যাংশ কয়েক ভাগে বিভক্ত হয়। মাগুরা ফিশারী অফিসের ৫ টি হ্যাচারির রেনুপোনার জন্য খাদ্য ক্রয় বাবদ ভুয়া বিল-ভাউচারের মাধ্যমে সরকারি টাকা উত্তোলন করা হয়। লক্ষ লক্ষ টাকা এভাবে হাতিয়ে নিচ্ছেন জেলা মৎস্য কর্মকর্তা ও হ্যাচারী ম্যানেজার। সরকারীভাবে অডিট বা আয়-ব্যায়ের ফাইল নীরিক্ষা করলেই এই অনিয়ম দুর্নীতির প্রমাণ মিলবে।
ভুক্তভোগী মৎস্য চাষী রাসেলের অভিযোগ পুকুরের ঢাল দেবার কথা বলে নিয়ম-নীতি না মেনে মৎস্য অফিসের পূর্ব পাশের একাধিক মেহগনি গাছের ঢাল কেটে বিক্রি করা হয়েছে। রেনুপোনা উৎপাদন বন্ধ করে কুষ্টিয়া বটতলা থেকে ৮ শত টাকা কেজি দরে পোনামাছ ক্রয় করে ২২ শত টাকা কেজি দরে বিক্রি করে। শ্রীপুর উপজেলা মৎস্য অফিস দীর্ঘদিন ধরে জনবল সংকটে রয়েছে। কর্মকর্তা ও কর্মচারী সব মিলে ৫ জন থাকার কথা থাকলেও আছেন শুধুমাত্র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা। ফলে ব্যাহত হচ্ছে অফিসের সকল কার্যক্রম।
স্থানীয় বাসিন্দা ফয়সাল সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করে বলেন, ৫ টি পুকুর মিলে রয়েছে ২/১ টি জাতের বড় মাছ। তাও আবার এই মাছগুলো বিভিন্ন দপ্তরে হাদিয়া হিসেবে পাঠানো হয়। সাম্প্রতিক সময়ে এখানে কোন রেনুপোনা উৎপাদন হচ্ছে না। আর যা উৎপাদন হচ্ছে তা অফিসের কাগজ-কলমে। বাইরের জেলা থেকে পোনা মাছ ক্রয় করে এনে বিক্রি করা হয়। যা কিনা রাষ্ট্রের সাথে প্রতারণার শামিল। জেলা মৎস্য অফিসের অনিয়ম-দুর্নীতি তদন্তের দাবি জানান তিনি।
এ বিষয়ে কথা বললে হ্যাচারি ফার্ম ম্যানেজার অহিদুজ্জামান বলেন, সরকার প্রতি অর্থ বছরে হ্যাচারী খরচ বাবদ মাত্র ৩ লক্ষ ১৭ হাজার টাকা প্রদান করে। এর বিপরীতে আমরা ৫ লাখ ১৭ হাজার টাকা ট্রেজারি চালানের মাধ্যমে সরকারি কোষাগারে জমা প্রদান করে থাকি। ফলে প্রতি বছর সরকার এই হ্যাচারী থেকে ২ লক্ষ টাকা লাভ করছে বাংলাদেশ সরকার। কয়েক দিন আগে পোনা ক্রয় করে এনেছি আনুমানিক ৫০ হাজার টাকার পোনা মারা গেছে, এ ভর্তুকি কে দিবেন, আমার পকেট থেকে আমি নিজে দিয়েছি।
মাগুরা জেলা মৎস্য অফিসার আনোয়ার কবির বলেন, নজিরের স্ত্রী আমার অফিসে আজ ১০ বছর চাকরি করেন, সে সুবাদে নজির এখানেই থাকেন।
এ সকল বিষয় মুঠোফোনে ১৬ আগষ্ট বিকালে খুলনা বিভাগ মৎস্য অফিসের বিভাগীয় উপ-পরিচালক মোঃ জাহাঙ্গীর আলম কে মাগুরা রেনু পোনা উৎপাদন বন্ধ এবং বহিরাগত দিয়ে অফিস পরিচালনার বিষয় জানানো হলে তিনি বলেন বিষয়টি আমি দেখব। আমি এখন সচিব স্যারের সঙ্গে আছি পরে কথা বলব।
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ এ. এস.এম
মুরসিদ (লিটু সিকদার)। মোবাইল: 01728 311111
ঢাকা অফিসঃ হোল্ডিং-১৩, লাইন-৬, রোড- ১২, ব্লক-বি, মিরপুর-১১, ঢাকা-১২১৬।
ফরিদপুর অফিসঃ মুজিব সড়ক, ফরিদপুর। মোবাইলঃ ০১৭১১ ৯৩৯৪৪৫
Copyright © August 2020-2025 @ Daily Somoyer Protyasha